শ্রীলঙ্কায় বন্দি-কমান্ডো সংঘর্ষ
১০ নভেম্বর ২০১২নিহতদের বেশিরভাগই বন্দি বলে জানা গেছে৷ তবে অন্তত একজন কারারক্ষী নিহত হওয়ার খবর দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ৷ আহতদের মধ্যে ১৩ জন কমান্ডো, চারজন সেনাসদস্য ও একজন সাধারণ নাগরিক রয়েছে বলে জানিয়েছেন কলম্বোর ন্যাশনাল হাসপাতালের পরিচালক ডা: অনিল জাসিঙ্ঘে৷ সংঘর্ষে পুলিশের কমান্ডো প্রধান আর এম রানাওয়ানাও আহত হয়েছেন৷
অবৈধ মাদকদ্রব্য ও মোবাইল ফোনের খোঁজে কারারক্ষীদের কারাগারের ভেতরে অভিযান পরিচালনার সময় এই সংঘর্ষ শুরু হয়৷ অভিযানের সময় কারাগারের নিরাপত্তা বিধানে সেখানে উপস্থিত ছিলেন কমান্ডোরা৷ সংঘর্ষের সময় বন্দিরা অস্ত্রাগার থেকে অস্ত্র লুট করে তা দিয়ে কমান্ডোদের সঙ্গে দাঙ্গায় জড়িয়ে পড়ে৷ সংঘর্ষ কয়েক ঘণ্টা স্থায়ী হয়৷ বেশ কিছু বন্দি অস্ত্র হাতে নিয়ে কারাগারের ছাদে উঠে পুলিশ ও রক্ষীদের লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে৷
পরিস্থিতি সামাল দিতে সেনাবাহিনী ডাকা হয়েছিল৷ ঘটনা শান্ত হওয়ার পর সেনা সদস্যরা কারারক্ষীদের কাছে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়েছে বলে জানিয়েছেন সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার রুওয়ান ওয়ানিগাসুরিয়া৷
শ্রীলঙ্কার জেলমন্ত্রী চন্দ্রশিরি গাজাদিরা সংসদে বলেছেন, ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে৷ তিনি বলেন, বন্দিরা মোট ৮২টি অস্ত্রের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছিল৷ পরবর্তীতে সবগুলো উদ্ধার করা হয়েছে৷ সংঘর্ষের ঘটনায় কারাগারের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানান জেলমন্ত্রী৷
এদিকে, সংঘর্ষের সুযোগে অনেক বন্দি পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে৷ এর মধ্যে কয়েকজনকে আবারও আটক করা হয়েছে৷ এভাবে কোনো বন্দি পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে কিনা তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি৷
কলম্বোর এই কারাগারটির নাম ওয়েলিকাদা৷ এখানে প্রায় চার হাজার বন্দি রয়েছে৷ কারাগারটিতে রয়েছে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা৷ ১৯৮৩ সালে তামিল বিরোধী দাঙ্গা চলার সময় এই কারাগারের সিংহলিজ বন্দিরা হামলা চালিয়ে প্রায় ৫০ জন তামিল বন্দিকে হত্যা করেছিল৷
এরপর ২০১০ সালে একই কারাগারে অবৈধ মোবাইল ফোন উদ্ধারে অভিযানের সময় কারারক্ষীদের সঙ্গে বন্দিদের সংঘর্ষে ৫০ জনেরও বেশি পুলিশ ও কারারক্ষী আহত হয়েছিল৷
একই ঘটনা ঘটে এ বছরের জানুয়ারিতেও৷ তখন ২৫ জন বন্দি ও চারজন কারারক্ষী আহত হয়েছিল৷
জেডএইচ / এএইচ (এএফপি)