শ্রীলঙ্কায় সরকার সমর্থক ও বিরোধীদের মধ্যে সংঘাত
১০ ফেব্রুয়ারি ২০১০বুধবার শ্রীলঙ্কার সুপ্রিম কোর্টের সামনে দেখা যায় এক ভয়ংকর ছবি৷ সরকার সমর্থক ও হাজার হাজার বিরোধী বিক্ষোভকারীদের একে অন্যের দিকে পাথর ছুঁড়তে দেখা যায়৷ দেখা যায় মারামারি করতেও৷ তাই তাদের ছত্রভঙ্গ করার জন্য কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করতে বাধ্য হয় পুলিশ৷ কিন্তু তারপরও, দুই পুলিশ কর্মকর্তা সহ কমপক্ষে আটজন আহত হয়৷ জানান কলম্বো হাসপাতাল কর্মরত পুষ্পা সয়জা৷
বলাই বাহুল্য, সরকার বিরোধীরা প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী শরৎ ফনসেকার গ্রেপ্তারের বিরুদ্ধে এই প্রতিবাদ বিক্ষোভে অংশ নিচ্ছিল৷ তাদের ধারণা, রাঝধানী কলম্বোর নৌ-সেনা দপ্তরে আটক ফনসেকার জীবনহানির আশঙ্কা রয়েছে৷ তাই স্বাভাবিকভাবেই, অবিলম্বে ফনসেকার মুক্তির দাবি জানিয়েছে বিরোধী বিক্ষোভকারীরা৷ তবে শুধু তারাই নয়, শ্রীলঙ্কার সাবেক মধ্যস্থতাকারী নরওয়ে সহ ফনসেকার মুক্তির জন্য আবেদন করেছে ফ্রান্স ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র৷
এ বিষয়ে বিরোধী পক্ষের আইনজীবী কারু জয়সুরিয়া জানান, সাবেক সেনপ্রধান জেনারেল শরৎ ফনসেকা'র মুক্তির বিষয়ে তারা দেশের সর্বস্তরের ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করছেন৷ শুধু তাই নয়, দেশে গণতন্ত্রের বিস্তার এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা কায়েম করার জন্যও চেষ্টা করছেন তারা, জানান জয়সুরিয়া৷
২৬শে জানুয়ারির প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মাহিন্দা রাজাপাকসের কাছে হেরে যান ফনসেকা৷ তারপর, প্রেসিডেন্ট রাজাপাকসের বিরুদ্ধে ভোট কারচুপির অভিযোগ আনেন তিনি৷ শুধু তাই নয়, নির্বাচনী ফলাফলের বিরুদ্ধে তিনি আদালতে যাবেন এবং পার্লামেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলেও ঘোষণা করেন ফনসেকা৷ আর সে কারণেই হয়তো, সোমবার রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় ফনসেকা'কে, মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা৷ প্রত্যক্ষদর্শীদের কথায়, একদল সেনা খুব অসম্মানজনকভাবে ফনসেকাকে ধরে নিয়ে যায়৷ এছাড়া, তাঁর স্বামীকে গ্রেপ্তার নয় বরং অপহরণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন ফনসেকার স্ত্রী এনোমা৷
এদিকে ফনসেকা গ্রেপ্তার হওয়ার পর, ইতিমধ্যেই সংসদ ভেঙে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপাকসে৷ আর তার সঙ্গে আগামী ৮ই এপ্রিল সংসদ নির্বাচন ও ২২শে এপ্রিল নতুন সংসদ গঠন করা হবে বলে ঘোষণা করেছেন তিনি৷ উল্লেখ্য, শ্রীলঙ্কার গৃহযুদ্ধের অবসানে রাজাপাকসের সঙ্গে একযোগে বিরাট ভূমিকা পালন করেছিলেন সাবেক সেনপ্রধান জেনারেল শরৎ ফনসেকা৷ শ্রীলঙ্কার বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় বলা হচ্ছে যে, তাঁর কোর্ট মার্শাল হতে পারে৷
প্রতিবেদক : দেবারতি গুহ
সম্পাদনা : আব্দুল্লাহ আল-ফারূক