1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

চার দেয়ালের মধ্যে গম চাষের বিপুল সম্ভাবনা

৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

জলবায়ু পরিবর্তন, চরম আবহাওয়া, পানির অভাবের মতো কারণে খাদ্যশস্য উৎপাদনের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে৷ চার দেয়ালের মধ্যে গম চাষ করে এই সমস্যার আংশিক সমাধানের চেষ্টা করছেন জার্মান গবেষকেরা৷

https://p.dw.com/p/4c6JF
চার দেয়ালের ভেতরে রোপন করা গমের চারার পরিস্থিতি দেখছেন এক গবেষক
সিঙ্গাপুর, মিশর ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো দেশ এমন প্রকল্পে আগ্রহ দেখাচ্ছে৷ছবি: DW

ছোট ও নাজুক এক গাছ কি খাদ্যাভাব দূর করতে পারবে? ক্লাইমেট চেম্বারের মধ্যে গমের গাছ এখনো মাত্র সাত সেন্টিমিটার দীর্ঘ৷ কিন্তু মাত্র দশ সপ্তাহের মধ্যে এই বিশেষ জাতের গম ফসল তোলার জন্য প্রস্তুত হয়ে যাবে৷ বছরে ছয় বার পর্যন্ত এভাবে ফসল পাওয়া যাবে৷ প্রকল্পের ম্যানেজার হিসেবে সেবাস্টিয়ান আইশেলবাখার বলেন, ‘‘গাছ ভালোভাবেই বেড়ে উঠছে৷ যেমনটা দেখছেন, ফুলও এসে গেছে৷ সবুজ জৈব পদার্থ মরে গিয়ে শস্য থেকে যায়৷ দানাগুলি বেশ ভরা থাকে৷ আমরা বৃদ্ধি তরান্বিত করতে আরো বেশি সময়ের জন্য দিনের আলোর ব্যবস্থা করতে পারি৷ বেশি ঠাণ্ডা বা বেশি গরম জায়গার জন্য বিশেষ সময় স্থির করার প্রয়োজন হয় না৷ যেমন আমরা ২৩ ডিগ্রি তাপমাত্রায় ১৮, ২০ বা ২২ ঘণ্টার জন্য দিনের আলোর ব্যবস্থা করে এই উদ্ভিদ চাষ করতে পারি৷ অবশ্যই এমন চাষের মাধ্যমে বেশি ফসলও পাওয়া যায়৷’’

মিউনিখের প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিজিটাল কৃষি বিভাগের টিম আলো, তাপমাত্রা, পুষ্টির জোগান ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে পানি নিয়ন্ত্রণ ও পরীক্ষা করছে৷ তারাই এই প্রকল্পের অর্থায়ন করেছে৷ প্রধানত পানি ও পুষ্টির মিশ্রণ ব্যবহার করায় পানির পুনর্ব্যবহার সম্ভব হচ্ছে৷

এ ক্ষেত্রে পানির একটি স্তর বাষ্পীভূত হয় না৷ ফলে প্রচলিত কৃষিকাজের তুলনায় পানির চাহিদা ৯৫ শতাংশ পর্যন্ত কম হতে পারে৷ সাম্প্রতিক বছরগুলিতে কৃষি উৎপাদনের ক্ষেত্রে পানিই সবচেয়ে অনির্দিষ্ট বিষয় হয়ে উঠেছে৷ জার্মানিতে গম উৎপাদনের মাত্রা মোটামুটি স্থিতিশীল রয়েছে৷ কিন্তু বিশ্বজুড়ে গমের উৎপাদন কমে চলেছে৷ খরা ও বন্যা মারাত্মক পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে৷

ঘরের ভেতরে গমের চাষ

বাভেরিয়ার আনৎসিং শহর বরাবরের মতো সুন্দর দেখাচ্ছে৷ কিন্তু চাষি হিসেবে বেয়ার্নহার্ড হাইহামারকে চলতি বছরের গ্রীষ্মকালে বেশ কয়েকবার প্রবল বৃষ্টিপাত সামাল দিতে হয়েছে৷ তার ফসলের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ নষ্ট হয়ে গেছে৷ এখন তিনি সেগুলি পশুর খোরাক হিসেবে বিক্রি করতে পারেন৷ বেয়ার্নহার্ড বলেন, ‘‘অন্যগুলির মতো এই শস্যও একই জাতের৷ কিন্তু কোনোভাবে রুটি তৈরির কাজে লাগানো যাবে না৷ গম যখন মাড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত হলো, ঠিক তখনই প্রলয়ের মতো বৃষ্টি হতে লাগলো৷ ভিজে অবস্থায় মাড়াই না করার সিদ্ধান্ত নিলাম, কারণ তা না হলে শুকানোর খরচ বইতে হবে৷ এর বদলে শুকনা হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে চেয়েছিলাম৷ কিন্তু দশ থেকে বারো দিন ধরে বৃষ্টি চললো৷ পানির পরিমাণ কম ছিল না৷ তারপর ফসলের অংশবিশেষ নষ্ট হয়ে গেল এবং উচ্চ মানের গম আর অবশিষ্ট রইলো না বললে চলে৷ চলতি বছর চরম অবস্থা দেখেছি৷ চরম বৃষ্টি থেকে চরম শুষ্কতা, তারপর আবার বৃষ্টি৷ অবশ্যই বছরটা চরম মাত্রা দেখিয়েছে৷’’

শুধু খরা বা বন্যাকবলিত অঞ্চলেই চার দেয়ালের মাঝে গম উৎপাদন সার্থক হবে না৷ জার্মানির মতো দেশে পরিবেশের উপর কৃষি উৎপাদনের নেতিবাচক প্রভাব কমাতেও এই প্রক্রিয়া সহায়ক হতে পারে৷ প্রকল্পের ম্যানেজার সেবাস্টিয়ান আইশেলবাখার মনে করেন, ‘‘এর একাধিক সুবিধা রয়েছে৷ অত্যন্ত কম পানির প্রয়োজন হয়, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের উপর কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়ে না৷ আমাদের শস্যের সুরক্ষার প্রয়োজন হয় না, আমরা অত্যন্ত সুনির্দিষ্টভাবে পুষ্টি নিয়ন্ত্রণ করতে পারি৷ তবে হ্যাঁ, জ্বালানির ব্যবহার অত্যন্ত বেশি হয়৷ ভবন ও প্রযুক্তিগত সাজসরঞ্জামও বেশি, যা কার্বন নির্গমনের কারণ বটে৷ এমন অবস্থায় এই প্রকল্প বিশ্বের কাছে সমাধানসূত্র হিসেবে পেশ করার সময় আসে নি৷ কিন্তু খাদ্য উৎপাদন প্রক্রিয়ায় এটি যাকে বলে একটি ‘বিল্ডিং ব্লক'৷’’

সিঙ্গাপুর, মিশর ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো দেশ এই প্রকল্পে আগ্রহ দেখাচ্ছে৷ জায়গা থেকে শুরু করে পানির অভাবের মতো কারণে চার দেয়ালের মধ্যে গম উৎপাদন সম্ভাবনাময় বিকল্প হয়ে উঠতে পারে৷

আলেক্সা মায়ার/এসবি

কৃষিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান