কায়রোয় বিক্ষোভ অব্যাহত, আরো ৩০ জন আহত
২২ নভেম্বর ২০১১মঙ্গলবার সকালেও শত শত বিক্ষোভকারী তাহরির চত্বরের দিকে আসতে শুরু করে৷ সেখানে হাজার হাজার মানুষ রাত কাটিয়েছে তাঁবু গেড়ে, কিংবা ঘাসের ওপরে গায়ে কম্বল জড়িয়ে৷ পুলিশ শত চেষ্টা করেও তাদের সরাতে পারেনি৷ সোমবার প্রধানমন্ত্রী এসাম শরাফের মন্ত্রীসভা পদত্যাগ দাখিল করলেও, শাসক সামরিক পরিষদ এখনো পর্যন্ত সে পদত্যাগ গ্রহণ করেনি৷ ওদিকে ‘‘মিশরের ত্রাণ'' নামধারী বিক্ষোভে সামিল জনতা চায়, খোদ জেনারেলরা পদত্যাগ করুন৷
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আর তাহরির চত্বরের মধ্যে মোহামেদ মাহমুদ স্ট্রিটে নিরাপত্তা বাহিনী আর বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়েছে৷ এদিকে পাথর ছোঁড়া, ওদিকে কাঁদানে গ্যাস৷ ৩০ জন আহত৷ কিন্তু এ'সব হল পথের দাবি৷ জেনারেলরা রাজনীতিকদের সঙ্গে কথাবার্তা বলতে চেয়েছিলেন: রাজনীতিকরা বলছেন, সংসদীয় নির্বাচন ঠিক সময়েই হওয়া চাই৷
রাজপথের সংঘর্ষে শনিবার যাবৎ অন্তত ৩৬ জন প্রাণ হারিয়েছে৷ ওদিকে নির্বাচনও একদিনের নয়, খেপে খেপে, ধাপে ধাপে৷ নির্বাচন প্রক্রিয়া শেষ হতে হতে আগামী বছরের মার্চ মাস হয়ে যাবে৷ তা নিয়ে যে সকলের মাথাব্যথা আছে, এমন নয়৷ নির্বাচন নিয়ে, পূর্ণ গণতন্ত্রে উত্তরণের সময় এবং নির্ঘণ্ট নিয়ে সকলের তাড়া কিংবা তাড়না তো এক নয়৷ সেই সঙ্গে রয়েছে নির্বাচন থেকে কোন দল কি গোষ্ঠী কতোটা সাফল্য, প্রভাব এবং সুযোগ-সুবিধা আশা করছে৷ মুসলিম ভ্রাতৃত্ব এবং চারটি অপর দল জেনারেলদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনায় বসতে রাজি৷ মুসলিম ভ্রাতৃত্ব নির্বাচনে বেশ ভালো ফল করবে বলেই প্রত্যাশা করছে৷ তাদের সাধারণ সম্পাদক সাদ আল-কাতাৎনি বলেছেন, নির্বাচন ঠিক সময়ে হতে হবে এবং ২০১২ সালের মাঝামাঝি কিংবা তার আগে বেসামরিক শাসন প্রতিষ্ঠিত হতে হবে৷
উদারপন্থি ওয়াফ্দ্ দল, ইসলামপন্থি সালাফি নুর দল, সকলেই তাই বলছে৷ কিন্তু সামরিক প্রশাসকদের পরিকল্পনা অনুযায়ী, নতুন সংসদ একটি ১০০ সদস্য বিশিষ্ট কনস্টিটিউয়েন্ট অ্যাসেম্বলি নির্বাচন করবে৷ সেই সাংবিধানিক সম্মেলন ছ'মাসের মধ্যে একটি নতুন সংবিধানের খসড়া পেশ করবে৷ তারপর একটি গণভোটে সেই খসড়া অনুমেদিত হলে, তবেই প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হবে৷ যার মানে এই যে, জেনারেলরা ২০১২'র শেষ কিংবা ২০১৩'র সূচনা পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকবেন৷ সুতরাং তরুণ বিপ্লবীরা বলছে, সামরিক পরিষদের সঙ্গে কোনো রুদ্ধদ্বার আলোচনা নয়৷ আসল সংলাপ চলেছে তাহরির চত্বরে৷ যেখানে এ'যাত্রার শুরু৷
প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ