মিশরে বিক্ষোভ অব্যাহত, নিহত দুই জন
২০ নভেম্বর ২০১১সর্বশেষ পরিস্থিতি
শনিবার রাতে বিক্ষোভকারী ও পুলিশের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে৷ আর এসব বিক্ষোভ ও সংঘর্ষের ঘটনাস্থল সেই তাহরির চত্বর৷ মুবারক বিরোধী আন্দোলনেরই যেন নতুন রূপ৷ রবিবারও সেখানে সমবেত হন হাজার হাজার বিক্ষোভকারী৷ পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে৷ ছোঁড়ে কাঁদানে গ্যাস এবং রাবার বুলেটও৷ পুলিশের ছোঁড়া বুলেটে আহত হয়েছেন স্বয়ং বার্তা সংস্থা এএফপি'র এক সাংবাদিক এবং পশ্চিমা অপর গণমাধ্যমের একজন ফটোগ্রাফার৷
এ পর্যন্ত সংঘর্ষে দুই জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে৷ রাজধানী কায়রোতে নিহত হয়েছেন ২৩ বছর বয়সি আহমেদ মাহমুদ৷ এছাড়া আলেক্সান্দ্রিয়া শহরে বুলেট বিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন ২৫ বছর বয়সি বাহাএদ্দিন মোহামেদ হুসেন৷ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, সংঘর্ষে আহত হয়েছে অন্তত সাড়ে সাতশ' জন৷ আহতদের মধ্যে ৪০ জন পুলিশ সদস্যও রয়েছে৷ এছাড়া তাহরির চত্বর থেকে ধীরে ধীরে আলেক্সান্দ্রিয়া, আসওয়ান এবং সুয়েজ শহরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে বলে বার্তা সংস্থাগুলো জানিয়েছে৷
বিক্ষোভের কারণ
মূলত হোসনি মুবারকের পতনের পর সামরিক বাহিনীর শীর্ষ পরিষদ - এসসিএএফ মিশরের ক্ষমতা গ্রহণ করে৷ এই পরিষদের প্রধান হিসেবে রয়েছেন ফিল্ড মার্শাল হুসেন তানতাভি৷ অথচ এই তানতাভি দীর্ঘদিন হোসনি মুবারকের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন৷ ফলে এখন মূলত তানতাভির বিরুদ্ধেই মিশরের মানুষের ক্ষোভ দেখা দিয়েছে৷ এছাড়া সামরিক পরিষদের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধেও ক্ষুব্ধ তারা৷ ফলে বিক্ষোভকারীদের এই সামরিক পরিষদের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতেই শোনা গেছে৷ এছাড়া ‘তানতাভি নিপাত যাক' বলেও স্লোগান দিচ্ছিল অনেকে৷
প্রশাসন এবং বহির্বিশ্বের প্রতিক্রিয়া
দেশের এমন সংকট জনক পরিস্থিতিতে মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠক ডেকেছেন প্রধানমন্ত্রী এসাম শারাফ৷ তবে দেশের এমন পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীকে বরখাস্ত করার দাবি তুলেছে বিরোধী গোষ্ঠীগুলো৷ অবশ্য ২৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের ব্যাপারে এখন পর্যন্ত অটল রয়েছে মিশরের সামরিক পরিষদ৷ এই পরিষদের সদস্য মোহসেন আল ফাঙ্গারি রবিবার আল হায়াত টেলিভিশনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন যে, নির্ধারিত পরিকল্পনা অনুসারে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে৷
এদিকে, মিশরের সহিংসতায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জার্মানি৷ রবিবার জার্মান পররাষ্ট্র মন্ত্রী গিডো ভেস্টারভেলে বলেন, ‘‘কায়রো এবং আলেক্সান্দ্রিয়ার সাম্প্রতিক উত্তেজনা আমাদের উদ্বিগ্ন করে তুলেছে৷ আমি সকল পক্ষকে সহিসংতা বর্জন করার আহ্বান জানাচ্ছি৷'' এছাড়া শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের মাধ্যমে সেখানে গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি৷
প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই
সম্পাদনা: রিয়াজুল ইসলাম