সারদা: মমতার সিআইডির বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ
৯ সেপ্টেম্বর ২০২২দেবযানী মুখোপাধ্যায়ের মা শর্বরী মুখোপাধ্যায় রাজ্যের তদন্তকারী সংস্থা সিআইডির বিরুদ্ধে গুরুতর এ অভিযোগ করলেন। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই-কে চিঠি লিখে তিনি বলেছেন, দেবযানীকে চাপ দিচ্ছে সিআইডি। তাকে বলা হয়েছে, বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী ও সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর নামে অভিযোগ করতে হবে। না হলে তারা দেবযানীর বিরুদ্ধে সিআইডি আরো নয়টি মামলা করবে। দেবযানী এখন জেলে বন্দি। তিনি তার মা-কে এই চাপ দেয়ার কথা জানিয়েছেন এবং তাই তার মা শর্বরী এই চিঠি লিখেছেন বলে দাবি করা হয়েছে।
কীভাবে চাপ দেয়া হচ্ছে, সেটাও চিঠিতে উল্লেখ করেছেন শর্বরী। তিনি লিখেছেন, দেবযানীকে বলা হয়েছে, তাকে বলতে হবে, শুভেন্দু ও সুজন দুজনেই ছয় কোটি টাকা করে সারদার কাছ থেকে নিয়েছেন। দেবযানীর সামনেই এই টাকার লেনদেন হয়েছে। এই কথা না বললে আরো নয়টি মামলায় দেবযানীকে ফাঁসানো হবে বলে সিআইডি জানিয়েছে বলে তার অভিযোগ।
শর্বরীর দাবি, ''সুজন ও শুভেন্দু কারও সঙ্গেই দেবযানীর কখনো দেখা হয়নি।''
বৃহস্পতিবার সংবাদমাধ্যমের কাছে শর্বরী বলেছেন, ''আমি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে হাতজোড় করে আবেদন জানাচ্ছি, দেবযানী যেন নতুন মামলায় ফেঁসে না যায়। মুখ্যমন্ত্রী দয়া করে বুঝুন আমি আর্থিক, পারিবারিক, শারীরিক দিক থেকে বিপর্যস্ত।''
সারদার তদন্ত
আদালতের নির্দেশে সিবিআই এখন সারদার তদন্ত করছে। কিছু অভিযোগের তদন্ত সিআইডি-ও করছে। কিন্তু দেবযানীর মায়ের অভিযোগ, গত ২৩ অগাস্ট জেলে তিনজন সিআইডি কর্মকর্তা গেছিলেন এবং দেবযানীকে চাপ দিয়েছেন।
২০০৪ সাল থেকে দেবযানী জেলে বন্দি। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন রাজ্য মিলিয়ে মোট ১২৮টা মামলা আছে।
সিআইডি-র দাবি
শর্বরীর অভিযোগ সিআইডি উড়িয়ে দিয়েছে। প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সিআইডি বলেছে, অভিযোগ ভিত্তিহীন ও মিথ্যা। ২৩ অগাস্ট তদন্তের স্বার্থে সিআইডি অফিসাররা দেবযানীর সঙ্গে দেখা করেন। তাদের সঙ্গে মহিলা রক্ষীও ছিল। দেবযানীর বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে। সিআইডির দাবি, আইন মেনে তদন্ত হচ্ছে।
তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেছেন, ''কেন শর্বরী ওই চিঠি লিখলেন তা তদন্ত করে দেখা উচিত। সিআইডি যেন এর তদন্ত করে দেখে।'' তার দাবি, ''সারদা মামলা থেকে শুভেন্দু কখনোই দায় এড়াতে পারবে না।''
কুণালের বিরুদ্ধেও সারদায় জড়িত থাকার অভিযোগ আছে। এ মামলায় রাজ্যের পুলিশ তাকে গ্রেপ্তারও করেছিল৷
শুভেন্দু ও সুজনের প্রতিক্রিয়া
শুভেন্দু অধিকারী টুইট করে বলেছেন, ''সিআইডি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দারোয়ানে পরিণত হয়েছে।''
সিপিএম নেতা ও দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী গণশক্তিকে বলেছেন, ''সারদাকাণ্ডে অভিযুক্ত দীর্ঘদিন জেলে থাকা দেবযানী আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন বলে শুনলাম। কী আর বলবো! কেন্দ্রীয় সরকার যেমন তাদের এজেন্সিকে ব্যবহার করে, তেমনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার সিআইডি-কে রাজনৈতিক স্বার্থে এবং তার দলের স্বার্থে ব্যবহার করছে। এটা নতুন ঘটনা তো নয়, গত ১১ বছরের শাসনকালে সকলেই তা জানেন।''
জিএইচ/এসিবি (পিটিআই, নিউজ১৮ বাংলা)