1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভারতের অবস্থানে ধোঁয়াশা

অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুনদিল্লি১১ মার্চ ২০১৩

শ্রীলঙ্কা সরকারের বিরুদ্ধে তামিল জাতি গোষ্ঠীর ওপর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ সংক্রান্ত জাতিসংঘের প্রস্তাবে ভারতের অবস্থান কী হবে, তা নিয়ে এখনো ধোঁয়াশা রয়ে গেছে৷

https://p.dw.com/p/17ujs
FILE - Sri Lankans wave their national flag during a victory rally to celebrate the defeat of the Tamil Tiger rebels, in Colombo, Sri Lanka, Friday, May 22, 2009. (AP Photo)
ছবি: AP

ভারত প্রস্তাবের পক্ষে, না বিপক্ষে ভোট দেবে তা স্পষ্ট নয়৷ জেনেভায় জাতিসংঘের প্যানেল শ্রীলঙ্কার মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করবে আগামী সপ্তাহ নাগাদ৷

বিচ্ছিন্নতাবাদী ভারতীয় বংশোদ্ভূত তামিল জাতি গোষ্ঠী ও শ্রীলঙ্কার সেনাবাহিনীর মধ্যে গৃহযুদ্ধের সময় এবং তারপরেও সংখ্যালঘু তামিল সম্প্রদায়ের ওপর দমন পীড়ন চালিয়ে আসছে বলে শ্রীলঙ্কা সরকারের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে, তা পর্যালোচনার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনে একটি প্রস্তাব আনতে চলেছে আগামী সপ্তাহ নাগাদ৷

P. Sunjada, 6, a Tamil war refugee boy, look through the window at a temporary shelter in a refugee camp in Jaffna, 300 kilometers (188 miles) north of Colombo, Sri Lanka, Sunday, Jan 23, 2005. As pledges of billions of dollars of aid flow in for the tsunami victims, the U.N. High Commissioner for Refugees believes people displaced by the civil war in Sri Lanka, also should receive part of that aid, and that attempts to resolve their problems could be "re-energized" by the new-found international enthusiasm. (ddp images/AP Photo/Rafiq Maqbool)
শ্রীলঙ্কা সরকারের বিরুদ্ধে তামিল জাতি গোষ্ঠীর ওপর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ সংক্রান্ত জাতিসংঘের প্রস্তাবে ভারতের অবস্থান কী হবে, তা নিয়ে এখনো ধোঁয়াশা রয়ে গেছে (ফাইল ফটো)ছবি: AP

প্রস্তাবের মূল অভিযোগ, লাগাতার মানবাধিকার লঙ্ঘন,সংবাদ মাধ্যমগুলোর কণ্ঠরোধ, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা খর্ব করা এবং প্রদেশগুলির হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর না করা ইত্যাদি৷ খসড়া প্রস্তাবে সুপারিশ করা হয়, নবি পিল্লাই রিপোর্ট অনুসারে, শ্রীলঙ্কা সরকারকে তথ্যানুসন্ধানের জন্য একটি নিরপেক্ষ ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে হবে যাতে ২০০৯ সালে গৃহযুদ্ধের অবসান পর্যন্ত এক আন্তর্জাতিক তদন্ত দল মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা খতিয়ে দেখার সুযোগ সুবিধা পান৷

ঐ প্রস্তাবে ভারতের ভূমিকা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়ে গেছে৷ সন্দেহ নেই, ভারত ও শ্রীলঙ্কার সম্পর্ক ঐতিহাসিক এবং ভূ-রাজনৈতিক দিক থেকে এক সংবেদনশীল জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে৷ প্রতিবেশী দেশ হিসেবে শ্রীলঙ্কাকে যেমন দূরে সরিয়ে রাখা যায়না, তেমনি ভারতের তামিল রাজনৈতিক দলগুলির দাবি অগ্রাহ্য করা সম্ভব নয়৷ বিশেষ করে দক্ষিণ ভারতের বড় তামিল দল ডিএমকে বর্তমান সরকারের শরিক দল৷ ভারতের অবস্থান এখন তাই শাঁখের করাতের মত৷

তবে প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং গত সপ্তাহে সংসদে এবিষয়ে সরকারের অবস্থান কী হতে পারে সে সম্পর্কে একটা ধারণা দেন৷ তাতে উনি বলেন, শ্রীলঙ্কার তামিল সম্প্রদায় যাতে সম-অধিকার এবং সম-মর্যাদার সঙ্গে নাগরিক জীবন যাপন করতে পারে তারজন্য দরকার রাজনৈতিক বোঝাপড়া৷ জাতীয় স্তরে বোঝাপড়া না হলে শান্তি আসবে না৷ সেই উদ্যোগ নিতে হবে শ্রীলঙ্কা সরকারকে৷

উল্লেখ্য, ৮০-এর দশকে তামিল টাইগার নামে পরিচিত এলটিটিই জঙ্গি সংগঠন পৃথক তামিল রাষ্ট্র গঠনে সশস্ত্র গেরিলা যুদ্ধ শুরু করলে গৃহযুদ্ধের সূত্রপাত হয়৷ শ্রীলঙ্কার উত্তর ও পূর্বাঞ্চলে ২৬ বছর ধরে চলে এই গৃহযুদ্ধ৷ এতে মারা যায় নারী ও শিশুসহ প্রায় এক লাখ তিরিশ হাজার মানুষ৷ অভিযোগ ওঠে শ্রীলঙ্কা সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে নৃশংস মানবাধিকার লঙ্ঘনের৷ যেমন, নারী ধর্ষণ, নির্যাতন, ঘরবাড়ি জ্বালানো, ঠান্ডা মাথায় হত্যা, বিনা বিচারে আটক ইত্যাদি৷

মাঝে চারবার শান্তি সমঝোতার চেষ্টা করা হয়৷ ভারত-শ্রীলঙ্কা শান্তি চুক্তি হয় ১৯৮৭ সালে রাজীব গান্ধী-জয়বর্ধনের আমলে৷ ভারত শান্তি সেনা পাঠায়, কিন্তু ব্যর্থ হয়৷ অস্ত্রবিরতি সই হয় ২০০২ সালে আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতায়৷ কিন্তু তা স্থায়ী হয়নি৷ ৯০ সালে তামিল টাইগারের সমর্থকের হাতে নিহত হন রাজীব গান্ধী৷

এরপর সর্বাত্মক পাল্টা আক্রমণ চালায় শ্রীলঙ্কা সেনা৷ চূড়ান্ত আক্রমণের সময় যুদ্ধাঞ্চলে আটকা পড়ে হাজার হাজার সাধারণ মানুষ৷ অবশেষে আত্মসমর্পণে বাধ্য হয় এলটিটিই৷ মারা যায় তামিল টাইগারের সর্বাধিনায়ক প্রভাকরণ ও তাঁর পরিবার৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য