1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মিথেনের মাত্রাও কমাতে পারে অ্যালজি

৯ নভেম্বর ২০২১

সমুদ্রের তলদেশে কার্বন ধারণের গতি আরো বাড়াতে পারলে বায়ুমণ্ডলে কার্বনের মাত্রা অনেকটাই কমানো সম্ভব৷ তবে অ্যালজি চাষ ও সদ্ব্যবহার আরো ত্বরান্বিত করতে বিনিয়োগ ও প্রণোদনার প্রয়োজন৷

https://p.dw.com/p/42kXD
Albanien Forscher kämpfen gegen Verschwinden der adriatischen Meereswälder
ছবি: GENT SHKULLAKU/AFP

সিমব্রোসিয়া নামের স্টার্টআপ কোম্পানি গবাদি পশুর জন্য অ্যালজি-ভিত্তিক খাদ্য সরবরাহ করে সংবাদ মাধ্যমে বাহবা কুড়াচ্ছে৷ কিন্তু চাহিদা মেটাতে যথেষ্ট পরিমাণ অ্যালজির জোগান নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে৷ কারণ সবার আগে অ্যালজি চাষ করতে হবে৷ কিছু ক্ষেত্রে অ্যালজির কোনো অভাব নেই৷ যেমন প্রকৃতির কোলেই যথেষ্ট পরিমাণ ‘সার্গাসাম' জাতের অ্যালজি পাওয়া যায়৷

সারগাসো সাগর ‘সার্গাসাম' অ্যালজির আস্তানা৷ এই এলাকা বিশ্বের সব মহাসাগরের শুষে নেওয়া কার্বন-ডাই-অক্সাইডের প্রায় সাত শতাংশের ভাগীদার৷ প্রত্যেক বছর ক্যারিবীয় অঞ্চল ও মেক্সিকো উপসাগর উপকূলে বিশাল পরিমাণ অ্যালজি ভেসে আসে৷ ২০১৮ সালে তার পরিমাণ ছিল দুই কোটি টনেরও বেশি৷

স্বাভাবিক অবস্থায় ক্ষয়ের মাধ্যমে অ্যালজি আবার উধাও হয়ে যায়৷ কিন্তু বর্তমানে সেই অ্যালজি উপকূল ভরিয়ে দিচ্ছে৷ শুধু প্রবল দুর্গন্ধ নয়, পানি দূষণ থেকে শুরু করে প্রাণীমৃত্যু ও প্রবাল ধ্বংসের জন্যও অ্যালজি দায়ী৷ সি-কম্বিনেটর সংস্থার ভাইস প্রেসিডেন্ট খর্খে ভেগা মাতোস মনে করেন, এত ‘সার্গাসাম' অ্যালজি ধ্বংসের বার্তা বয়ে আনছে৷

সি-কম্বিনেটর কোম্পানি সার্গাসাম থেকে পরিবেশবান্ধব পণ্য উৎপাদনে হাত পাকিয়েছে এই সংস্থা৷ বিশেষ করে সার উৎপাদনের ক্ষেত্রে বিপুল সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে৷ রোমান সাম্রাজ্যেও সার হিসেবে অ্যালজি ব্যবহার করা হয়েছে৷ বর্তমানে বড় আকারে প্রয়োগের জন্য অ্যালজির নির্যাস বার করা হচ্ছে৷ খর্খে বলেন, ‘‘আমরা সেটা নানা কম্পাউন্ডে রূপান্তরিত করতে পারি৷ স্প্রের মাধ্যমে পাতার উপর এর প্রলেপ লাগানো যায়৷ তরল অথবা দানার আকারে এই সার মাটিতে মেশানো যায়৷''

মিথেন কমায় অ্যালজি

সারের মধ্যে পুষ্টি জমি সমৃদ্ধ করে এবং গাছের মধ্যে রোগের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে৷ ফলে গাছে আরও বেশি ফল হয়, গাছপালা সতেজ থাকে৷ চাপ ও রোগের ধাক্কা আরো ভালোভাবে সামলাতে পারে৷ তবে অ্যালজি ব্যবহারের সবচেয়ে সহজ পথ হলো কার্বন-ডাই-অক্সাইড স্টোরেজ হিসেবে এর ব্যবহার৷

মৃত্যুর পর অ্যালজি স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় সমুদ্রের নীচের মাটিতে তলিয়ে গেলে ধারণকৃত কার্বন-ডাই-অক্সাইড সেখানে জমা হয়৷ সেই প্রক্রিয়ার গতি আরো বাড়ানো সম্ভব৷ সামুদ্রিক ইকোলজিস্ট হিসেবে মার ফার্নান্ডেস-মেন্ডেস বলেন, ‘‘অ্যালজির মধ্যে ধারণ করা কার্বনের পরিমাণ বাড়াতে চাইলে আমাদের সচেতনভাবে সার্গাসামের মতো অ্যালজি বের করে নিয়ে সংকোচন করে আবার ডুবিয়ে দিতে হবে৷''

এর অর্থ, অ্যালজির ওজন বাড়িয়ে অথবা পাম্পের মাধ্যমে সমুদ্রের তলদেশে পাঠাতে হবে৷ সাম্প্রতিক এক গবেষণা অনুযায়ী মহাসাগরের মাত্র দুই শতাংশ এলাকায় অ্যালজি চাষ ও সমুদ্রের তলদেশে অ্যালজি ডোবাতে পারলে কৃষিক্ষেত্রে বিশ্বব্যাপী নির্গমনের ক্ষতি পূরণ করা সম্ভব হবে৷

কিন্তু প্রশ্ন হলো, এতকাল কেন এমনটা করা হয়নি? আসলে ম্যাক্রো অ্যালজি হিসেবে সি উইড বা সামুদ্রিক শৈবাল সবচেয়ে বেশি চাষ করা হয়৷ তবে সেটির বৃদ্ধি তরান্বিত করতে কোথাও না কোথাও ঝোলাতে হয়৷

কয়েকটি সি উইড ফার্ম অ্যালজি ডুবিয়ে নজর আকর্ষণ করেছে৷ তবে বড় আকারে সেই কাজ করতে হলে আরো বড় অবকাঠামোর প্রয়োজন৷ সার্গাসাম এ ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারে৷ ফার্নান্ডেস-মেন্ডেস মনে করেন, ‘‘কোনো ম্যাক্রো অ্যালজি ফাইটোপ্ল্যাংকটনের মতো সমুদ্রের যে কোনো অংশে বেড়ে উঠতে পারলে এবং আরো অনেক বেশি দক্ষতার সঙ্গে কার্বন ধারণ করতে পারলেই কেল্লা ফতে৷ সার্গাসামই সেটা পারে৷''

মেক্সিকোর মতো বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলে সার্গাসাম সংগ্রহের প্রযুক্তির প্রয়োগ ইতোমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে৷ ব্রিটেনের এক স্টার্টআপ কোম্পানি থেকে শুরু করে মেক্সিকোর সরকারের প্রতিনিধিরা সেই প্রক্রিয়া আরো কার্যকর করে তোলার চেষ্টা করছেন৷ ফার্নান্ডেস-মেন্ডেস বলেন,‘‘জীববিজ্ঞানী হিসেবে শুধু আমার মতো মানুষেরই এমন বিষয় নিয়ে মাথা ঘামানোর প্রয়োজন নেই৷ গোটা সমাজেরই এগিয়ে আসা উচিত৷''

এখনো পর্যন্ত আর্থিক বিনিয়োগের অভাব রয়েছে৷ কিন্তু অ্যালজি চাষ করে জলবায়ু সংকটের সমাধানে অবদান রাখতে পারলে কার্বন-ডাই-অক্সাইড স্টোরেজ আকর্ষণীয় করার লক্ষ্যে আরো প্রণোদনার প্রয়োজন হবে৷

শুধু মুখরোচক খাদ্য হিসেবে নয়, অ্যালজির আরো বড় প্রয়োগের সময় এসে গেছে৷

আমান্ডা কুলসন-ড্রাসনার/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য