নকলের দায়ে মৃত্যুদণ্ড!
১৯ জানুয়ারি ২০১৩টাকা জাল করার অপরাধ প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড রাখার প্রস্তাবিত বিধান থেকে সরছে বাংলাদেশ৷ বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা এ. এফ. এম. আসাদুজ্জামান জানিয়েছেন একথা৷ এর আগে গত বৃহস্পতিবার জার্মানির কেন্দ্রীয় ব্যাংক বুন্ডেসব্যাংক জানায়, জাল টাকা প্রতিরোধে বাংলাদেশ ব্যাংককে সহায়তা সংক্রান্ত একটি পরিকল্পিত প্রকল্প স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা৷ বাংলাদেশ সরকার টাকা জাল করার দায়ে অভিযুক্তদের মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত প্রদানের প্রস্তাব করায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বুন্ডেসব্যাংক৷
অবশ্য ব্যাংকটির এই ঘোষণার একদিন পর শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ড প্রদানের প্রস্তাব থেকে সরে আসার কথা জানান আসাদুজ্জামান৷ ফরাসি বার্তাসংস্থা এএফপিকে তিনি বলেন, ‘আমরা প্রস্তাবিত আইন থেকে মৃত্যুদণ্ডের ধারাটি বাদ দিতে যাচ্ছি৷'
এখানে বলা প্রয়োজন, বাংলাদেশে ব্যাপক হারে টাকা জাল হয়৷ এর সঙ্গে সম্পৃক্তদের ধরতে ব়্যাব এবং গোয়েন্দা বাহিনীকে কাজে লাগাচ্ছে সরকার৷ এসংক্রান্ত প্রস্তাবিত আইন, যার বিরোধিতা করেছে বুন্ডেসব্যাংক, তাতে কমপক্ষে দশ হাজার নকল নোট ছড়ানোর দায়ে ধরা পড়লে সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ডের প্রস্তাব করা হয়েছিল৷ আর সর্বনিম্ন শাস্তি হচ্ছে ছয় মাসের কারাদণ্ড৷
জার্মানির কেন্দ্রীয় ব্যাংক সাধারণত বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংককে পরামর্শ এবং প্রশিক্ষণ প্রদান করে থাকে৷ জাল টাকা প্রতিরোধে বাংলাদেশ ব্যাংককে সহায়তা করার একটি পরিকল্পনা হাতে নিয়েছিল তাঁরা৷ আগামী ফেব্রুয়ারি মাস নাগাদ সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কথা ছিল৷ কিন্তু এরই মাঝে গণমাধ্যমে খবর আসে, জাল টাকা তৈরির শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত শাস্তি প্রদানের প্রস্তাব করছে বাংলাদেশ৷ কিন্তু জার্মানি মৃত্যুদণ্ডকে সমর্থন করে না৷ তাই বাংলাদেশ ব্যাংককে সহায়তার সিদ্ধান্ত স্থগিত করে বুন্ডেসব্যাংক৷
তবে বাংলাদেশ মৃত্যুদণ্ডের বিধান বাতিল করলে নিজেদের সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের আভাষ দিয়ে রেখেছে বুন্ডেসব্যাংক৷ বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা শুক্রবার কার্যত সেই ঘোষণাই দিয়েছেন৷ এরপর বুন্ডেসব্যাংকের সিদ্ধান্ত কি? এই প্রশ্নের জবাবে ব্যাংকটির এক মুখপাত্রী জানিয়েছেন, ‘এই তথ্য সঠিক কিনা' সেটা যাচাই করছেন তারা৷ এই যাচাইবাছাই শেষ হওয়ার পর ব্যাংকটির নির্বাহী বোর্ড বাংলাদেশ ব্যাংককে সহায়তার পরিকল্পনা পুনরায় বিবেচনা করবেন৷
এআই / এসি (রয়টার্স, ডিপিএ)