জার্মানদের আশা কষ্ট হলেও জিতবে জার্মানিই!
২৯ জুন ২০২১কদিন থেকে শুরু হওয়া ইউরো কাপ নিয়ে প্রতিবেশি আর পরিচিত ফুটবল প্রেমীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখছি৷ রল্ফ ক্লেফিশ বয়সে প্রবীণ হলেও ফুটবল বিষয়ক আলোচনায় তার বয়স অনেকটাই কমে যায় বলে মনে হয়৷ রল্ফ বলেন, "ওয়েম্বলির মতো বিশাল স্টেডিয়ামে জার্মান সমর্থকেরা যেতে পারবেন না মানে জার্মান দল অনেকটাই পরিবারহীন৷ তবে ওয়ার্ল্ড মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন জার্মানির ফুটবল ফ্যানদের লন্ডনে না যাওয়ার অনুরোধ করে ভাল করেছে৷ ডেল্টা ভেরিয়েন্ট খুবই ছোঁয়াচে এবং খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে৷ আমার বিশ্বাস জার্মান দলের মনের জোর অনেক৷ তাছাড়া ইংল্যান্ডেও জার্মান দলের বহু সমর্থক রয়েছে৷ আমাদের দল খুব ভালভাবে না হলেও, জিতে যাবে!
বন্ধু আন্দ্রেয়াস লাউবাখের সব বিষয়ের মত ফুটবল খেলা নিয়েও প্রচুর আগ্রহ৷ আন্দ্রেয়াস আজকের খেলা নিয়ে তার মতামত জানাতে গিয়ে বললো, " আগে ১৮ হাজার ভক্তের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে ঢোকায় অনুমতি ছিল এখন ৪৫ হাজার ফ্যানকে খেলা দেখার অনুমতি দেওয়া হয়েছে , কাজেই খেলা জমবে! আমার মনে হচ্ছে, ট্রেনার ইর্য়োরগেন ল্যোভের নেতৃত্বে জার্মান দল প্রথম হাফ এ তেমন ভালো না খেলতে পারলেও দ্বিতীয় হাফে কিছুটা ভালো করবে৷ শেষ পর্যন্ত হয়ত পেনাল্টিতে জিতে যাবে, জার্মানি৷ আর সে কৃতিত্ব হবে দলের ক্যাপটেন ও গোলরক্ষক নয়ারের৷''
আমার বাড়ির একনিষ্ঠ ফুটবলভক্ত আবদুস সাত্তারও আন্দ্রেয়াসের সাথে কিছুটা একমত পোষণ করেন৷ তিনি নিয়মিত ইউরো কাপ দেখছেন৷ ফুটবল খেলা দেখায় আমার তেমন আগ্রহ নেই তবে জার্মান ফুটবল খেলোয়াড়দের নিয়ে একসময় আমি ভীষণ আগ্রহী ছিলাম৷
সে অনেক আগের কথা , দুইযুগ তো হবেই৷ জার্মান জাতীয় দলে বেশ দাপটের সাথে তখন খেলতেন কোলনের খেলোয়াড় পিয়ারে লিটবার্সকি, ক্লাউস আলফস, টোনি শুমাখারের মতো বড় বড় ফুটবল তারকা৷
এফ সি কোলনের ক্লাবে প্রাকটিস করতেন কোলনের জনপ্রিয় সব খেলোয়াড়৷ ক্লাবটি কোলনের সবুজ এলাকায়৷ গ্র্যুনগুর্টেল বা সবুজ এলাকাটি জার্মানির প্রথম চ্যান্সেলার কনরাড আডেনাওয়ার কোলনের মেয়র থাকাকালীন তৈরি করেছিলেন৷ কাজের শেষে সবুজ প্রকৃতিতে মানুষ যেন সারাদিনের ক্লান্তি দূর করতে পারে সেই ভাবনা থেকেই এই বিশাল সবুজ এলাকার জন্ম৷ দারুণ সুন্দর এই গ্রিন এলাকাতেই এফ সি কোলনের ক্লাব৷ জায়গাটা আমাদের বাড়ি কাছে হওয়ার সুবাদে গ্রীষ্মে মাঝে মাঝে সেখানে যাই৷ বেশ মনে পড়ে, প্রাকটিস শেষ হওয়ার ঠিক আগে খেলোয়াড়দের বের হওয়ার পথেই কিশোর ফুটবল ভক্তরা কাগজ কলম নিয়ে অটোগ্রাফের জন্য দাড়িয়ে থাকত৷ ফুটবল তারকাদের প্রায় গা ঘেঁষে দাড়াতে পেরে আমিও তখন বেশ রোমাঞ্চিত বোধ করতাম! সে যুগে তারকারাও কিন্তু ভক্তদের সঙ্গে মধুর ব্যবহার করতেন!
যাই হোক, যা বলছিলাম, হ্যাঁ , আমাদের জার্মান বন্ধু মনিকা, ওর ব্রিটিশ স্বামী জুলিয়েন দুজনে বাড়িতে বসেই ম্যাচ দেখছেন৷ অ্যামাজন থেকে কদিন আগেই জুলিয়েনের কাছে ইংলিশ টিমের টি-শার্ট এসেছে! মনিকা অবশ্য এ নিয়ে কিছু বলেননি৷ খেলার ফলাফলে শেষ পর্যন্ত ওরা কি করবে, কে জানে! দেখা যাক কার দল জেতে,মনিকার প্রিয় ল্যোভের দল না কি জুলিয়েনের দেশি ট্রেনার সাউথগেইটের দল!
জার্মান বনাম ইংল্যান্ডের ম্যাচ নিয়ে আমার পরিচিত সবাই বাড়িতেই খেলা দেখার কথা জানিয়েছে৷ এখনও তারা পাবিলিক ভিউয়িং -এ আগ্রহী নয়৷