জার্মান আর্টিস্ট ক্লাউস ‘রিভার্স গ্রাফিতি’ আঁকেন
১৪ জানুয়ারি ২০২২ফ্রান্সের পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত ১১০ মিটার উঁচু ও ৪৩০ মিটার দীর্ঘ লাক ডে ভুগলা বাঁধে রিভার্স গ্রাফিতি আঁকেন ক্লাউস৷ এটি তার সবচেয়ে বড় কাজ৷
গ্রাফিতি আঁকার কৌশল সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘‘আমরা হাই-প্রেশার ক্লিনার দিয়ে কাজ করি৷ চার ব্যক্তি দড়ির সঙ্গে নিজেদের ঝুলিয়ে নীচে নেমে পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করে, দেয়াল পরিষ্কার করে৷ অবশ্যই পুরোটা নয়, কিছুটা অংশ৷ কারণ বাকি অংশে ময়লা থাকলেই তবে শিল্পকর্মটা তৈরি করা সম্ভব৷’’
ক্লাউসসহ পাঁচজনের একটি দল প্রতিদিন তিন থেকে পাঁচ ঘণ্টা প্রফেশনাল হাই-প্রেশার ক্লিনার দিয়ে কাজ করেন৷ কোনো কেমিক্যাল ছাড়াই প্রায় ২৫০ বার প্রেশার দিয়ে ময়লা পরিষ্কার করেন তারা৷ প্রতিদিন তাদের প্রায় ১২ হাজার লিটার পানি লেগেছে৷
দেয়ালে ডিজাইন ফুটিয়ে তুলতে একটি কৌশল প্রয়োগ করেন ৫৫ বছর বয়সি ক্লাউস৷ তিনি বলেন, ‘‘প্রথমে আমরা প্রস্তাবিত শিল্পকর্মের নকশায় সীমানা রেখা বরাবর কিছু পয়েন্ট বসিয়েছি৷ এরপর সার্ভেয়ারদের দিয়ে দূরত্ব মাপিয়েছি৷ তারপর মাপ অনুযায়ী বাঁধের প্রাচীরে পয়েন্ট বসানো হয়েছে৷ দূর থেকে বোঝার সুবিধার জন্য সেগুলোতে লেজার দেয়া হয়েছে৷ এরপর হাই-প্রেশার ক্লিনার দিয়ে পয়েন্টগুলো যুক্ত করা হয়েছে৷ এভাবে দেয়ালে শিল্পকর্মের সীমানা রেখা ফুটে উঠেছে৷’’
জার্মানির এক ক্লিনিং টেকনোলজি কোম্পানির সঙ্গে মিলে কাজ করেছেন ক্লাউস৷ ২০০৭ সালে তারা জার্মানির ওলেফ বাঁধে প্রথম এমন শিল্পকর্ম তৈরি করেছিলেন৷ একবছর পর জাপানে ফুলের এমন শিল্পকর্ম করা হয়৷ এরপর ২০১২ সালে দক্ষিণ কোরিয়ায় তৈরি করেন বাঘের শিল্পকর্ম৷
মাঝেমধ্যে কাঠের কার্ডবোর্ড দিয়ে কাজ করেন ক্লাউস৷ যেমন ২০১৮ সালে ফ্রান্সের দক্ষিণের বন্দরনগরী স্যাতের দেয়ালে ১৩টি পোর্ট্রেট এঁকেছিলেন তিনি৷ তবে এসব কাজ চিরদিন থাকে না৷ তিন থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে বিবর্ণ হয়ে যায়৷
ক্লাউস বলেন, ‘‘আমি আসলে ক্ষণস্থায়ী হয় এমন শিল্পকর্ম করতে চাইনি৷ এটা আমার কাজের একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল৷ তবে এমন কাজের সঙ্গে আমি যত বেশি সম্পর্কিত হচ্ছিলাম, তত এর মান সম্পর্কে সন্তুষ্ট হচ্ছিলাম৷ কারণ এটা জীবনের কথা মনে করিয়ে দেয়৷’’
কাই হর্স্টমায়ার/জেডএইচ