গুঁড়ো দুধ খেয়ে অসুস্থ শিশুর সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে
১৮ সেপ্টেম্বর ২০০৮চীন থেকে আমদানি করা দুটো কোম্পানির গুঁড়ো দুধ না কেনার জন্য জনগণকে সতর্ক করে দিয়েছে বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর৷
চীনের হাসপাতালগুলোতে বিষাক্ত গুঁড়ো দুধ খেয়ে অসুস্থ শিশুর সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে৷ এদের মধ্যে অধিকাংশ শিশুই ভুগছে কিডনি সমস্যায়৷ চীনের খোদ স্বাস্থ্য মন্ত্রীই স্বীকার করেছেন ৬ হাজার ২ শ ৪৪ শিশুর অসুস্থ হওয়ার কথা৷ এদের মধ্যে অন্তত ১৫৮ জনের কিডনি অকেজো৷
গুঁড়ো দুধ কেলেংকারির সঙ্গে জড়িত সন্দেহে এ পর্যন্ত ১৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে৷ হেবেই প্রদেশ থেকে জব্দ করা হয়েছে ২২২ কেজি মেলামাইন৷ চীনের অন্যতম বড় গুঁড়ো দুধ উত্পাদনকারী প্রতিষ্ঠান সানলু গ্রুপের চেয়ারপার্সন এবং মহা ব্যবস্থাপকসহ কমপক্ষে ১০ জন কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে৷
চীন সরকারের হিসেবে, দেশটির গুঁড়ো দুধ উত্পাদনকারী ২২টি প্রতিষ্ঠানের ৬৯টি আইটেমেই বিষাক্ত উপাদান মেলামাইন পাওয়া গেছে৷ দুধে প্রোটিনের পরিমাণ বেশি দেখানোর জন্য মেশানো হয়েছে এই রাসায়নিক পদার্থ৷ এমনকি দুধ ছাড়াও, আইস ক্রিম এবং দইয়েও পাওয়া গেছে মেলামাইন৷
এরই মধ্যে বিভিন্ন গুঁড়ো দুধ উত্পাদনকারী কোম্পানির পণ্য ফিরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দিয়েছে চীন সরকার৷ এ ব্যাপারে জরুরি ভিত্তিতে তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে৷
বিষাক্ত উপাদান মিশিয়েছে এমন দুটো চীনা কোম্পানি তাদের পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ, ইয়েমেন, গ্যাবন, বুরুন্ডি এবং মিয়ানমারেও৷ তবে রপ্তানি করা আইটেমগুলোতে মেলামাইন মেশানো হয়েছে কি-না তা জানা যায় নি৷
চীনের গোয়াং ডুং ইসিলি গ্রুপের কোং ডাং সানকিয়ার লিমিটেড এবং সানলু গ্রুপের প্রস্তুত করা গুঁড়ো দুধ শিশুদের না খাওয়ানোর জন্য জনগণকে বিশেষভাবে সতর্ক করে দিয়েছে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর৷
খাদ্য ও স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ডা. এএমএম শওকত আলী জানিয়েছেন, আমদানিকৃত পণ্যে বিষাক্ত উপাদান রয়েছে কি-না সেটা পরীক্ষা করে দেখা হবে৷ খাদ্যে সেরকম কোন কিছু ধরা পড়লে বন্দর থেকেই সর্বশেষ চালানটি ফেরত্ পাঠানো হবে বলে আশ্বস্ত করেছেন উপদেষ্টা৷
চীনে খাদ্রপণ্যে বিষাক্ত উপাদান মেশানোর ঘটনা এটিই প্রথম নয়৷ এর আগেও গুঁড়ো দুধের মতো সামুদ্রিক মাছ, শূকরের মাংশ এবং ডিমের তৈরি বিভিন্ন খাদ্যেও মেশানো হয়েছে বিষাক্ত উপাদান৷ ২০০৪ সালে কোন রকম পুষ্টি ছাড়াই উত্পাদিত গুঁড়ো দুধ খেয়ে দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় শহর আনহুই-তে মৃত্যু হয় ১৩ শিশুর৷