1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

অনিয়মিতদের ফেরাতে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের উপর ইইউ’র চাপ

২৮ জানুয়ারি ২০২৩

অনিয়মিত অভিবাসীদের ফেরত না নেয়া দেশগুলোর উপর ভিসা কঠোরতা আরোপ করবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন৷ সেই সঙ্গে ফেরত নেয়ার প্রক্রিয়া উন্নততর করতে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে নতুন চুক্তির পরিকল্পনাও করেছে তারা৷

https://p.dw.com/p/4MpHT
সাইপ্রাসের পুরনারা শিবিরে আশ্রয়প্রার্থীরা
সাইপ্রাসের পুরনারা শিবিরে আশ্রয়প্রার্থীরাছবি: Anupam Deb Kanunjna/DW

ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যভুক্ত দেশগুলোতে যেসব আশ্রয়প্রার্থীর আবেদন বাতিল হয়ে গেছে তাদেরকে নিজ দেশে প্রত্যাবর্তনের সংখ্যা বাড়াতে চায় ইইউ৷ এই জন্য বিদ্যমান যে প্রক্রিয়া আছে তার ‘পূর্ণ ব্যবহার' করা হবে বলে জানিয়েছেন সুইডেনের অভিবাসন বিষয়ক মন্ত্রী মারিয়া মলমের স্ট্যানেরগার্ড৷ বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘‘রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক প্রচেষ্টা এক্ষেত্রে কাঙ্খিত ফল দিচ্ছে না৷ এই বিষয়ে কাউন্সিলের কাছে ভিসা কড়াকড়ি আরোপের প্রস্তাব জমা দিতে ইউরোপীয় কমিশনকে আহ্বান জানিয়েছে সদস্য রাষ্ট্রগুলো৷'' এই বিষয়ে বৃহস্পতিবার স্টকহোমে বৈঠকে সদস্যরা একমত হয়েছেন বলেও জানান তিনি৷

বর্তমানে সভাপতি হিসাবে ইইউ বৈঠকের নেতৃত্ব দিচ্ছে সুইডেন৷ দেশটির কট্টর-ডানপন্থি সরকার অনিয়মিত অভিবাসীদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে ভিসা, পররাষ্ট্রনীতি ও উন্নয়ন সহযোগিতাকে শর্ত হিসেবে ব্যবহারের বিষয়ে ইইউকে আগে থেকেই চাপ দিয়ে আসছে৷

অনিয়মিত অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর বিষয়ে ইইউর কঠোর অবস্থানের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে জোট কমিশনের প্রধান উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েনের বক্তব্যেও৷ ফেব্রুয়ারিতে স্টকহোমে জোটের সম্মেলন শুরুর আগে ইইউ দেশগুলোর নেতাদের কাছে পাঠানো চিঠিতে তিনি বিষয়টি আলোচ্যসূচিতে রাখার কথা উল্লেখ করেন৷

লাইয়েন জানান, বছরের প্রধমার্ধে ইইউ সদস্য রাষ্ট্রগুলো একটি পাইলট প্রকল্পে স্বাক্ষর করতে পারে৷ এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য হলো আশ্রয় আবেদন ও যোগ্য প্রার্থীদের আশ্রয় প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করা এবং যারা যোগ্যতা অর্জন করবেন না তাদের অবিলম্বে ফেরত পাঠানো৷

অভিবাসীরা যেসব দেশ থেকে আসেন সেগুলোর মধ্য থেকে ‘নিরাপদ দেশের' একটি তালিকা তৈরির প্রস্তাব তার৷ অর্থাৎ, যেসব দেশ নিরাপদ বিবেচিত হবে সেসব দেশের আশ্রয়প্রার্থীদের আবেদন গৃহীত হওয়ার সম্ভাবনা তখন কমে যাবে৷ সেই সঙ্গে ভূমধ্যসাগর ও বলকান অভিবাসন রুটে সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার করার কথাও বলেন তিনি৷

ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেয়া কতটা নিরাপদ?

বিভিন্ন দেশের সঙ্গে চুক্তির পরিকল্পনা

কিছু দেশের সঙ্গে নতুন করে প্রত্যাবর্তন সংক্রান্ত চুক্তির পরিকল্পনা কথাও জানিয়েছেন ইইউ কমিশন প্রধান৷ বার্তা সংস্থা এএফপি লাইয়েনের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, ‘ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া উন্নততর করতে.... ও বহিঃর্গমন প্রতিরোধ' করতে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, মিশর, মরক্কো, টিউনিশিয়া এবং নাইজেরিয়ার সঙ্গে অভিবাসন চুক্তি করার পরিকল্পনা করেছে ইইউ৷     

ইইউ স্বরাষ্ট্র কমিশনার ইলভা ইয়োহানসন বলেন, ‘‘গত বছর প্রায় দশ লাখ আশ্রয় আবেদনের প্রেক্ষিতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ব্যাপক চাপে রয়েছে৷ এর বাইরে ইউক্রেন থেকে ৪০ লাখ শরণার্থীর আগমনে দেশগুলোর আশ্রয়ের সক্ষমতা আরো হ্রাস পেয়েছে৷''

নিয়ম অনুযায়ী, ইউরোপীয় ইউনিয়নে প্রবেশের পর অনিয়মিত অভিবাসীরা জোটভুক্ত দেশগুলোতে আশ্রয় আবেদনের সুযোগ পান৷ প্রথমবার আবেদন বাতিল হলে তার বিরুদ্ধে আপিলের সুযোগও রয়েছে৷ এরপরও তা বাতিল হলে ফেরত যাওয়ার বাধ্যবাধকতা তৈরি হয়৷ এক্ষেত্রে স্বেচ্ছায় ফেরত যাওয়াদের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের নানা সহায়তা প্রকল্প রয়েছে৷ এই সুযোগ নিয়ে কেউ ফেরত না গেলে তাকে জোরপূর্বক ফেরত পাঠাতে পারে দেশগুলো

তবে ইউরোপীয় কমিশনের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ফেরত যাওয়ার নির্দেশের তুলনায় কার্যকর প্রত্যাবর্তনের হার অনেক কম৷ ২০২১ সালে তিন লাখ ৪০ হাজার ৫০০ জনকে ফেরত যাওয়ার নির্দেশের বিপরীতে সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে মাত্র ২১শতাংশ৷

বাংলাদেশের অবস্থান

গত কয়েক বছরে ইউরোপীয় ইউনিয়নে অনিয়মিত উপায়ে বাংলাদেশিদের অভিবাসন বেড়েছে৷ বর্তমানে সেন্ট্রাল ভূমধ্যসাগর হয়ে পাড়ি জমানোদের মধ্যে তৃতীয় অবস্থানে আছেন দক্ষিণ এশিয়ার দেশটির নাগরিকেরা৷ এছাড়া বলকান রুট হয়েও ইইউ সদস্য দেশগুলোতে পৌঁছানোর চেষ্টা করেন অনেকে৷ তাদের মধ্যে আশ্রয় আবেদন বাতিল হওয়া কয়েকশো জনকে গত কয়েক বছরে দেশে ফেরত পাঠিয়েছে জার্মানি, গ্রিসসহ বিভিন্ন দেশ৷

অভিবাসীদের ফেরত নিতে ঢাকার উপরে ব্রাসেলসের চাপ রয়েছে৷ বৈধ কাগজবিহীন অভিবাসীদের ফেরাতে যথাযথ ব্যবস্থা না নেয়ায় ২০২১ সালের ১৫ জুলাই বাংলাদেশিদের ভিসা প্রক্রিয়ায় সাময়িক কড়াকড়ি আরোপের প্রস্তাব করে ইউরোপীয় কমিশন৷ এই প্রস্তাবে বাংলাদেশ ছাড়াও ইরাক এবং গাম্বিয়াকেও সেসময় যুক্ত করা হয়৷

বার্তা সংস্থা এএফপি অবশ্য জানিয়েছে এখন পর্যন্ত ইইউ শুধু গাম্বিয়ার উপরই ভিসা কড়াকড়ি আরোপ করেছে৷ এতে দেশটির নাগরিকদের জন্য শেঙেন ভিসা পাওয়া কঠিন ও ব্যয়বহুল হয়েছে৷ বাংলাদেশ ও ইরাকের বিরুদ্ধেও একই ব্যবস্থা নেয়ার প্রস্তাব করা হলেও তা কার্যকর হয়নি৷

গত নভেম্বরে বাংলাদেশ সফরকালে ইলভা ইয়োহানসন বলেছেন ভিসা নিষেধাজ্ঞার হুমকির পর ঢাকা অনিয়মিত অভিবাসীদের গ্রহণে ‘রাজনৈতিকভাবে আরো উদার' হয়েছে৷

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে বৈধ কাগজবিহীন অভিবাসীদের ফেরত নেয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশের সঙ্গে ইইউর স্ট্যান্ডার্ড অব প্রসিডিউর (এসওপি) চুক্তি হয়৷ তা বাস্তবায়নে বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশকে বিভিন্ন সময়ে চাপ দিয়ে এসেছে ইইউ৷

অভিবাসীদের নিয়ে তথ্যচিত্র: কন্ট্রাক্টের নাম সাইপ্রাস

এফএস/এআই

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান