হাতে হাতে বাংলাদেশের পতাকা দেখাই তাদের বড় আনন্দ
১৬ ডিসেম্বর ২০২২ডয়চে ভেলের কনটেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে পতাকা বিক্রেতা শাহীন আলম বলেন, ‘‘এই যে আজকে মানুষ খুশি হইয়া আসতেছে, এই খুশি জানি সবসময় থাকে, ” বিজয় দিবসে এটুকুই তার প্রত্যাশা৷
বৃহস্পতিবার রাত তখন ২টা বেজে ১০ মিনিট৷ তিনজনেরই বাড়ি উত্তরের জেলা গাইবান্ধায়৷ গাজীপুর চৌরাস্তা থেকে সাভারে এসেছেন পতাকা বিক্রি করতে৷
অবশ্য পতাকা বিক্রি তাদের কারো মূল পেশা নয়৷ একজন মাছ বিক্রেতা, একজন কৃষক, আরেকজন রাজমিস্ত্রি৷ তিনজনের মধ্যে বয়োজ্যেষ্ঠ লাল মিয়া জানালেন, তিনি ছাড়া বাকি দুজনের কেউ ঢাকায় থাকেন না৷ প্রতিবছর বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবস এলে গাইবান্ধা থেকে তারা দুজন আসেন৷ তিনজন মিলে ফেরি করে বিক্রি করেন জাতীয় পতাকা৷
তারিখ বা উপলক্ষ্য ধরে এভাবে পতাকা বিক্রি করে কখনো কিছু লাভ থাকে, কখনো আর্থিক লাভের চেয়ে শ্রমটাই বেশি যায়৷ তবে তাদের কাছে লাভের চেয়ে দেশের পতাকা বিক্রি করতে পারার আনন্দটাই মুখ্য৷
লাল মিয়া বলেন, ‘‘আমি চৌরাস্তায় মাছ বেচি৷ কিন্তু ১৬ ডিসেম্বর, ২৬ মার্চ পতাকার বিক্রি ভালো হয়, তাই প্রতিবছর আসি৷ এই যে আইজকাও আসছি ঠাণ্ডার মধ্যে৷ খেলার টাইমেও বিক্রি করছি৷ কিন্তু অন্যদেশের চেয়ে নিজের দেশের পতাকা বেচতি বেশি ভাল্লাগে৷”
এই দলের আরেক সদস্য স্বপন মিয়া গাইবান্ধায় কৃষিকাজ করেন৷ তিনি বললেন, “প্রতিবছর দুইটা দিনে স্মৃতিসৌধে আসি৷ পতাকা বেচা হয় অনেক৷ সারাবছর আবাদী করি৷ তবে, নতুন সংসারে এই বাড়তি আয় কাজে লাগে৷ মানুষ খুব আনন্দ নিয়া পতাকা কেনে, দেশের জন্য অনেক গর্ব হয়৷”
নববিবাহিত এই পতাকাবিক্রেতার কাছে দেশের পতাকা বিক্রি করতে পারাটা অনেক ‘মহান কাজ' বলে মনে হয়৷
তাদেরই আরেকজন শাহীন আলমের কাছে প্রশ্ন ছিল দেশকে কোথায় দেখতে চান৷ তিনি বললেন, ‘‘এই যে আজকে মানুষ খুশি হইয়া আসতেছে৷ এই খুশি জানি সবসময় থাকে৷ সবাই যেন ভালো থাকবার পারে৷”
মানুষের হাতে হাতে বিজয় নিশান তুলে দিতে হবে যে ! ভোরের আলো ফুটলেই বাড়বে চাপ, তাই তারা ব্যাগ থেকে আরও পতাকা বের করে বাঁশের গায়ে সাজাতে লেগে গেলেন৷
এনএস/এসিবি (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)