ভারতে ‘ফোকাস কান্ট্রি’ বাংলাদেশ
২৩ নভেম্বর ২০১৫নতুন দিল্লিতে ৩৫তম ভারত আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা এখন চলেছে পুরোদমে৷ চলবে ২৭শে নভেম্বর পর্যন্ত৷ এবারের মেলার ‘থিম' হলো ‘মেক-ইন-ইন্ডিয়া'৷ রাজধানীর প্রগতি ময়দানের ১২৩ হেক্টর মেলা প্রাঙ্গন জুড়ে ১৬টি হলঘর৷ এছাড়া খোলা জায়গায় রয়েছে ১০ হাজার স্টল৷ যোগ দিয়েছে ছয় হাজার ছোট-বড় কোম্পানি, যার মধ্যে রয়েছে জার্মানিসহ ২৯টি দেশ৷ ভারতকে পণ্য তৈরি এবং পরিষেবার একটি আন্তর্জাতিক ঘাঁটি হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে আর্থিক সংস্কার, বাণিজ্য অনুকূল নীতি এবং উদ্যোগের অঙ্গ হিসেবে রয়েছে স্কিল ইন্ডিয়া, ডিজিটাল ইন্ডিয়া, স্মার্ট সিটি, স্টার্ট-অ্যাপ ইন্ডিয়া ইত্যাদির পৃথক পৃথক প্যাভেলিয়ান৷
এ বছরের বাণিজ্য মেলায় বাংলাদেশকে ‘ফোকাস কান্ট্রি'-র মর্যাদা দিয়ে বিশেষভাবে তুলে ধরার বিভিন্ন কারণ রয়েছে৷ ডয়চে ভেলের সঙ্গে এক সাক্ষাত্কারে বাংলাদেশ বাণিজ্য মন্ত্রকের যুগ্ম সচিব এবং বাংলাদেশ প্যাভেলিয়ানের ডায়রেক্টর মহম্মদ ওহায়িদুল্লা আলম সেই কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন, ‘‘এর প্রধান কারণ দু'দেশের গভীর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক, যা ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রেও লাগাতার প্রতিফলিত হয়ে চলেছে৷ ভবিষ্যতে কীভাবে তা আরো প্রসারিত করা যায়, তার জন্য ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে বিভিন্ন স্তরে বৈঠক হচ্ছে৷ এটা একটা চলমান প্রক্রিয়া৷
বাংলাদেশি পণ্যের চাহিদা ভারতে এবং অন্যত্র বৃদ্ধি পাচ্ছে, যার বড় কারণ পণ্যের গুণমান অক্ষুণ্ণ রেখে প্রতিযোগিতামূলক দামে তা বাজারজাত করা হয়, সেটা প্রমাণ করতেই বাংলাদেশ এত ব্যাপক আকারে যোগ দিয়েছে৷ এনেছে দিল্লিসহ অন্যান্য রাজ্যে অতি জনপ্রিয় ঢাকাই জামদানি, রাজশাহি সিল্ক, টাঙ্গাইল, বেনারসি৷ এছাড়াও এনেছে হস্তশিল্প, পাট ও কৃষিজাত সামগ্রী৷ পাশাপাশি ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্যিক লেনদেনের মধ্যে বিরাট ব্যবধানের কথা উল্লেখ করে ওহায়িদুল্লা আলম মনে করেন, এ জন্য দু'দেশের মধ্যে ট্যারিফ ও নন-ট্যারিফ প্রতিবন্ধকতা দুর করা দরকার৷ নন-ট্যারিফ বা শুল্ক-বহির্ভূত বাধা দূর করা কঠিন নয়৷ আশা করা যায়, ভারত সরকার তা করবে এবং তাহলে বাংলাদেশের আরো বেশি পণ্য ভারতে আসার পথ সহজতর হবে৷ সীমান্তহাটের জনপ্রিয়তার কথা উল্লেখ করে তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, উভয় দেশের ক্রেতারা এই সীমান্তহাটের জন্য অপেক্ষা করে থাকে৷ তাই দু'দেশের আরো বেশি পণ্য সীমান্তহাটে আনার কথা ভাবা হচ্ছে৷
বাংলাদেশের গোটা কুড়ি স্টল এসেছে, তার বেশির ভাগই হলে শাড়ি, তৈরি পোষাক পরিচ্ছদের৷ বাংলাদেশের পাশেই পাকিস্তানের স্টল৷ সেখানে আছে শালোয়ার কামিজ, পোর্সেলিনের তৈজষপত্র৷ সময়মত ভিসা না পাওয়ার জন্য একটা চাপা অসন্তোষ রয়েছে পাকিস্তানি স্টল মালিকদের মধ্যে৷ ‘পার্টনার কান্ট্রি'-র শিরোপা পেয়েছে আফগানিস্তান৷ আফগানিস্তান স্টলে আছে হাতে বোনা কার্পেট মনকাড়া রং ও ডিজাইনে৷ আছে শুকনো ফল-ফলাদি৷ বাণিজ্য মেলার আর এক আকর্ষণ সাস্কৃতিক অনুষ্ঠান৷ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের বর্ণময় লোকসংস্কৃতির একটা বড় ক্যানভাস৷ প্রতিদিন সন্ধ্যায় মুক্তমঞ্চে এবং অডিটোরিয়ামে রয়েছে নাচ-গানের আসর৷ তবে প্যারিস সন্ত্রাসী হামলার পর বাণিজ্য মেলা প্রাঙ্গণে নিরাপত্তা ব্যবস্থা দ্বিগুণ কঠোর করা হয়েছে৷
প্রিয় পাঠক, আপনি কী বাণিজ্য মেলায় গিয়েছেন? নীচে মন্তব্যের ঘরে লিখুন আপনার অভিজ্ঞতা৷