এবোলার বিরুদ্ধে অভিযান
২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪এবোলা একটি ভয়ংকর মহামারী৷ পশ্চিম আফ্রিকার অবস্থাও এখন বিশৃঙ্খল৷ এই পরিস্থিতিতে সেখানে সরকারি আদেশ দিয়ে জার্মান সৈন্য পাঠানোর অর্থ, তাঁরা অসুস্থ হয়ে পড়লে সরকারকে তাঁদের বীমা ও ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত নানা আইনগত সমস্যায় জড়িয়ে পড়তে হতে পারে – প্রতিরক্ষামন্ত্রী হয়ত যা করতে চাননি৷ স্বদেশে সৈন্যদের প্রাকৃতিক বিপর্যয় কিংবা মহামারীর বিরুদ্ধে সক্রিয় হতে বলা চলে – কিন্তু বিদেশে? বস্তুত একটি মানবিক মিশনে?
এক হিসেবে জার্মান সেনাবাহিনী ও জার্মান সমাজ তাদের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর মান রেখেছে: ফন ডেয়ার লাইয়েন ডাক দেবার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সেনাবাহিনীর ৫০০ জন সদস্য জানিয়েছেন যে, তাঁরা স্বেচ্ছায় এবোলার বিরুদ্ধে সংগ্রামে যেতে রাজি৷ এই স্বেচ্ছাসেবীরা ‘বুন্ডেসভের', অর্থাৎ জার্মান সেনাবাহিনীর প্রায় সব অংশ থেকে এসেছেন, বলে জানান জার্মান সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র৷
সৈন্যদের সঙ্গে সঙ্গে সৈন্য হিসেবে যাঁদের ডাক পড়তে পারে, তেমন রিজার্ভ সৈন্যরা, এবং বেসামরিক ব্যক্তিরাও প্রতিরক্ষামন্ত্রীর ডাকে সাড়া দিয়েছেন – ফন ডেয়ার লাইয়েন যাকে বলেছেন, ‘‘সাহায্যের প্রস্তুতির একটি চমৎকার নিদর্শন''৷ বিশ্ব তথা ইউরোপের অপরাপর দেশেও অনুরূপ সাহায্যের প্রস্তুতি পরিলক্ষিত হয়েছে: যেমন ব্রিটেনের সরকারি স্বাস্থ্য সেবার মোট ১৬০ জন সদস্য এবোলার বিরুদ্ধে সংগ্রামে যেতে প্রস্তুত৷
ইউরোপীয় ইউনিয়নের সরকারবর্গ ইউরোপীয় ত্রাণকর্মীদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত৷ ২৮টি ইইউ দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রীবর্গ ইটালির মিলানে মিলিত হয়ে যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন, সেটি হলো: এবোলার বিরুদ্ধে অভিযানে ইউরোপীয় ত্রাণকর্মীরা যদি নিজেরাই সংক্রমণের শিকার হন, তাহলে তাদের নিয়ে কী করা হবে৷ সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ত্রাণকর্মীর অকুস্থলেই চিকিৎসা করা হবে, নাকি রোগীকে বিমানযোগে স্থানান্তরিত করা হবে, সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার একটা প্রক্রিয়া থাকা প্রয়োজন, বলে ইইউ স্বাস্থ্যমন্ত্রীদের ধারণা৷ ইইউ দেশগুলির একক সরকারবর্গ বিমান, ত্রাণকর্মী ও রোগীদের জন্য বিশেষ ‘স্ট্রেচার' প্রদান করবেন, সেটিও এক সিদ্ধান্ত৷
লাইবেরিয়ার প্রেসিডেন্ট এলেন জনসন সারলিফ জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের প্রতি জরুরি সাহায্যের আবেদন জানিয়েছিলেন৷ লাইবেরিয়াতেই এবোলার প্রকোপ সর্বাধিক, বলে সারলিফ জানান: সংক্রমিতদের সংখ্যা তিন হাজারের বেশি; অর্ধেকের বেশি রোগীর মৃত্যু ঘটে থাকে৷ জাতিসংগের এক উচ্চপদস্থ প্রতিনিধি লাইবেরিয়া সফর করার পর জানিয়েছেন যে, সেখানে জরুরি ভিত্তিতে অন্তত ৭০০ স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ প্রয়োজন৷ বর্তমানে সেখানে বড়জোর শ'দেড়েক বিদেশি চিকিৎসক, পরিচারক ও নার্স কাজ করছেন৷ রোগীদের আলাদা রাখার জন্য মাত্র ৪০০টি ‘বেড' রয়েছে, অথচ প্রয়োজন দুই হাজার ‘বেডের'৷
এসি/ডিজি (ইপিডি)