১৬ বছরে বিয়ে জার্মানিতেও সম্ভব
২১ অক্টোবর ২০১৫ইউরোপের দেশ স্পেনে আগে ১৪ বছর বয়সেই বিয়ে বৈধ ছিল৷ গত জুলাইয়ে সেটা বাড়িয়ে ১৬ করা হয়েছে৷ আর জার্মানিতে ১৬ বছর বয়সির বাবা-মা চাইলে এবং আদালত অনুমতি দিলে বিয়ে সম্ভব৷ তবে যার সঙ্গে বিয়ে হবে তার বয়স আঠারো হতে হবে৷ আর স্বাভাবিক নিয়মে আঠারোর নীচে বিয়ে সম্ভব নয়৷
এতটুকু পড়েই হয়ত, অনেকে বলে বসবেন আরে বাংলাদেশে তাহলে ১৬ বছর বয়সে বিয়ে নিয়ে এত হৈচৈ কেন? এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার আগে চলুন আরেকবার দেখে নেই, নারীর জন্য বাল্যবিবাহ কেন ক্ষতিকর:
বাল্যবিবাহের শিকার মেয়েদের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে প্রসবকালীন মৃত্যু৷ অধিকাংশক্ষেত্রে দেখা যায় মেয়েটির শরীর সন্তান ধারনে সক্ষম হবার আগেই সে গর্ভধারণ করছে৷ ফলে প্রসবকালীন মৃত্যুর শঙ্কা অনেক বেশি থাকে৷ অল্পবয়সে মৃত্যুর হারও তাদের মধ্যে বেশি৷
শিশুমৃত্যুর হারও অল্প বয়সে যারা গর্ভধারণ করছেন তাদের ক্ষেত্রে বেশি৷ প্ল্যান ইন্টারন্যাশনালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, অল্পবয়সি মায়েদের ক্ষেত্রে ‘প্রিমেচিউর' শিশু এবং মৃতশিশু জন্মের হার বেশি৷ তাদের বাচ্চাদের অল্প বয়সে মৃত্যুর আশঙ্কাও বেশি থাকে৷
বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোতে বাল্যবিবাহের শিকার হওয়া মেয়েদের শিক্ষার সুযোগ বিয়ের সঙ্গে সঙ্গেই কার্যত শেষ হয়ে যায়৷ বিয়ের পর তারা বরং সন্তান নেয়া এবং পরিবারের কাজের প্রতি বেশি মনোযোগী হতে বাধ্য হয়৷ অল্প বয়সে মা হওয়াদের মেয়েদের ক্ষেত্রেও স্কুল ত্যাগ করার এবং অল্প বয়সে বিয়ে বসার প্রবণতা বেশি৷
পরিসংখ্যান বলছে, অল্প বয়সে বিয়ের শিকার মেয়েরা অল্প বয়সেই নিজেদের সকল অধিকার হারান৷ নিজের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা, নিজের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হবার সুযোগ তারা পান না৷ বরং পারিবারিক সহিংসতা এবং যৌন নিগ্রহের শিকার হওয়ার আশঙ্কায় তারা বেশি থাকেন৷
এরকম আরো অনেক বিজ্ঞানসম্মত, সামাজিক কারণ আছে যা বাল্যবিবাহের অনুকূলে যায় না৷ আর উন্নয়নশীল দেশগুলোর ক্ষেত্রে সেটা আরো অনেক বেশি প্রযোজ্য৷
শেষ করার আগে যা জানানো প্রয়োজন, জার্মানিতে ১৬ বছর বয়সে বিশেষ বিবেচনায় বিয়ের সুযোগ থাকলেও সেই সুযোগ বলতে গেলে কেউই নেননা৷ দেশটির সামাজিক ব্যবস্থা অনেক বেশি আধুনিক এবং বাস্তবসম্মত৷ ছেলেমেয়েদের ছোটবেলা থেকেই তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করে দেয়া হয়, তাদের যৌন শিক্ষা দেয়া হয়৷ জোর করে তাদের দিয়ে কিছু করানো অধিকাংশক্ষেত্রেই সম্ভব নয়৷ তাই এদেশে বাল্যবিবাহ নিয়ে কোনো আলোচনাই নেই৷
১৬ বছরে বিয়ে কী বাংলাদেশে বৈধ হওয়া উচিত? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷