নারীদের প্রতিরোধ
১৯ এপ্রিল ২০১৩ঢাকায় নারী গণসমাবেশ হবে ২৭শে এপ্রিল৷ হাইকোর্টের সামনে কদম ফোয়ারা হবে সমাবেশের মূল কেন্দ্র৷ এই সমাবেশ ছড়িয়ে পড়বে তিন দিকের সড়কে৷ বিকেল ৩টার এই সমাবেশে ঢাকাসহ সারাদেশ থেকে নারীরা অংশ নেবেন৷ তৈরি পোশাক শিল্পের কর্মী থেকে উচ্চ পদে আসীন – সব নারীই থাকবেন এই সমাবেশে৷ অংশ নেবেন সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিরাও৷
হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফার বিরুদ্ধে কেন এই নারী গণসমাবেশ? এই প্রশ্নের জবাবে মহিলা পরিষদের কর্মকর্তা নারী নেত্রী রেখা চৌধুরী ডয়চে ভেলেকে বলেন, ১৩ দফার একটি দফাও তাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়৷ এই দফাগুলো সংবিধান বিরোধী এবং নারী প্রগতি বিরোধী৷ এই ১৩ দফা বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশের নারীরা অবরুদ্ধ হয়ে পড়বেন৷ তারা হয়ে পড়বে গৃহবন্দি৷ তাই নারী সমাজ হেফাজতে ইসলামের পুরো ১৩ দফার বিরুদ্ধেই অবস্থান নিয়েছে৷
তিনি বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডসহ নানা ক্ষেত্রে নারীরা এখন এগিয়ে যাচ্ছেন৷ ঠিক সেই সময়ে হেফাজত নারী পুরুষের সহাবস্থানের বিরুদ্ধে কথা বলছে৷ কথা বলছে শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে৷ তারা বাংলাদেশকে একটি তালেবানী রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়৷ তাদের সেই ষড়যন্ত্র সফল হতে দেয়া হবেনা৷ তাদের দাবি মানা হলে নারীরা শিক্ষা এবং জ্ঞান বিজ্ঞানেও পিছিয়ে পড়বে৷
রেখা চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাক শিল্প আর সেখানে নারী কর্মীর সংখ্যা প্রায় ৮০ ভাগ৷ এই নারীরা দেশের অর্থনীতির চাকা যেমন সচল রাখছেন, তেমনি নিজেদের পরিবারের উন্নয়নেও ভূমিকা রাখছেন৷ হেফাজতের দাবি মানলে তেরি পোশাক শিল্প বন্ধ করে দিতে হবে৷ শুধু তাই নয়, হেফাজত যে দাবি তুলেছে সেই দাবির মাধ্যমে মানুষ হিসেবে নারীর অবমাননা করা হয়েছে৷ তারা ইসলাম চায় না, তারা ধর্মকে ব্যবহার করে ফায়দা লুটতে চায়৷
২৭শে এপ্রিলের নারী গণসমাবেশ সফল করতে ইতিমধ্যেই আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ১৪ দলের সঙ্গে মত বিনিময় করেছেন নারী নেত্রীরা৷ তারা সমাবেশের আগ পর্যন্ত ঢাকা এবং ঢাকার বাইরে এই মতবিনিময় এবং গণসংযোগ চালিয়ে যাবেন৷ তারা চাইছেন ঢাকায় সমাবেশে নারীদের ব্যাপক অংশগ্রহণের মাধ্যমে হেফাজতের দাবিকে বিদায় করতে৷ রেখা চৌধুরী জানান, ইতিমধ্যেই ৮০টি সংগঠন এক হয়েছে৷ সমাবেশের আগে এর সংখ্যা শতাধিক ছাড়িয়ে যাবে৷ তারা মতে, এটি নারী সমাবেশ হলেও মৌলবাদ ও জঙ্গিবাদের হাত থেকে দেশের মানুষকে বাঁচাতে এ সমাবেশ একটা বড় ভূমিকা রাখবে৷