হেলমুট কোলের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া
শনিবার জার্মানির সাবেক চ্যান্সেলর হেলমুট কোলকে শেষ বিদায় জানান জার্মানি ও ইউরোপ সহ বিশ্বের নেতারা৷ গতমাসের ১৬ তারিখ ৮৭ বছর বয়সে মারা যান তিনি৷
স্ট্রাসবুর্গে বিশ্বনেতারা
ইউরোপের বিশটি দেশের রাজনীতিবিদরা এবং সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিন্টন স্ট্রাসবুর্গে ইউরোপীয় ইউনিয়ন আয়োজিত হেলমুট কোলের শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন৷ গত ১৬ জুন ৮৭ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন দুই জার্মানির পুনরেকত্রীকরণের এই নায়ক৷
‘তিনি একজন সত্যিকারের ইউরোপিয়ান’
‘‘হেলমুট কোল ছিলেন একজন সত্যিকারের ইউরোপীয় এবং একজন বন্ধু৷ ইউরোপ তাঁর কাছে অনেক ঋণী,’’ বলেন ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান জঁ ক্লোদ ইয়ুঙ্কার৷
‘কোল ছাড়া আমার জীবন সম্পূর্ণ ভিন্ন হতো’
দুই জার্মানিকে একত্রীকরণের মাধ্যমে কোটি কোটি মানুষের ভাগ্য বদলে দিয়েছিলেন কোল, স্ট্রাসবুর্গে সেকথা উল্লেখ করার পাশাপাশি নিজের জীবনে কোলের অবদানের কথাও অকপটে স্বীকার করেছেন জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল৷ তিনি বলেন, ‘‘হেলমুট কোলের অবদান না থাকলে আমার জীবনও সম্পূর্ণ ভিন্ন হতো৷’’ জার্মান রাজনীতিতে ম্যার্কেল শক্ত অবস্থান গড়েছিলেন কোলের হাত ধরেই৷
‘আমি এই মানুষটাকে ভালোবেসেছিলাম’
স্ট্রাসবুর্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পতাকায় ঢাকা হেলমুট কোলের কফিনের সামনে দাঁড়িয়ে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিন্টন বলেন, ‘‘আমি এই মানুষটাকে (কোল) ভালোবেসেছিলাম কেননা তিনি এমন একটি বিশ্ব গড়তে চেয়েছিলেন যেখানে কেউই অধীনস্থ নয়৷ এমন একটি বিশ্ব যেখানে সংঘাতের চেয়ে সহযোগিতা ভালো৷ যেখানে বিভিন্ন গ্রুপ স্বতন্ত্র একনায়কদের চেয়ে ভালো সিদ্ধান্ত নেবে৷’’
‘কোল শুধু জোট সঙ্গী নন, বন্ধু ছিলেন’
স্ট্রাসবুর্গে কোলের শেষকৃত্যে অংশ নেয়া ফ্রান্সের নতুন প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ বলেন, ‘‘ফ্রান্সের জন্য কোল ছিলেন একজন মুখ্য সংলাপে অংশগ্রহণকারী, একজন গুরুত্বপূর্ণ সঙ্গী, একজন নিরন্তর সেতুবন্ধনকারী - আর ফ্রান্সের কাছে এসবের চেয়েও বেশি হচ্ছে তিনি একজন বন্ধু ছিলেন৷’’
জাহাজে করে স্পায়ারে
স্ট্রাসবুর্গে অনুষ্ঠান শেষে কোলের কফিন প্রথমে তাঁর জন্মস্থল ল্যুডভিগসহাফেনে নিয়ে যাওয়া হয়৷ সেখানে তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানানোর পর কফিনটি এই জাহাজে করে রাইন নদী দিয়ে স্পায়ারে নিয়ে যাওয়া হয়৷
স্পায়ারে পৌঁছার পর
স্পায়ারে পৌঁছার পর কোলের কফিন এই গাড়িতে করে স্পায়ার ক্যাথিড্রালে নিয়ে যাওয়া হয়৷ সেখানে ‘রিকুইয়েম মাস’ (মৃত ব্যক্তির আত্মার সদগতির উদ্দেশ্যে নিবেদিত প্রার্থনা সংগীত) অনুষ্ঠিত হয়৷
স্পায়ার ক্যাথিড্রাল
এই ক্যাথিড্রালেই ‘রিকুইয়েম মাস’ অনুষ্ঠিত হয়েছে৷ কোল এই ক্যাথিড্রাল বেশ পছন্দ করতেন৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বোমার হাত থেকে বাঁচতে তিনি প্রায়ই এই ক্যাথিড্রালে আশ্রয় নিতেন বলে জানিয়েছেন৷ চ্যান্সেলর থাকাকালীন জার্মানি সফর করা উচ্চ পর্যায়ের রাষ্ট্রপ্রধানদের অনেককে তিনি এই ক্যাথিড্রাল দেখাতে নিয়ে গিয়েছিলেন৷
সমাধিস্থল
ছবিতে স্পায়ার ক্যাথিড্রাল থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে অবস্থিত আডেনাওয়ার পার্ক দেখতে পাচ্ছেন৷ সেখানকার কবরস্থানেই সমাহিত করা হয়েছে জার্মানিতে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি সময়, ১৬ বছর, চ্যান্সেলর পদে থাকা রাজনীতিবিদ কোলকে৷