1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

হুমায়ূন আহমেদ ছাড়া দুই বছর

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা২০ জুলাই ২০১৪

হুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে তাঁর ১০০ ভক্ত ‘হিমু পরিবহণ’ নামে একটি বই লিখেছেন৷ তাঁরা সবাই হিমুর মতো হলুদ পাঞ্জাবি পরেই শনিবার নুহাশ পল্লিতে হাজির হন সেই বইয়ের মোড়ক উন্মোচনে৷

https://p.dw.com/p/1CfXV
ছবি: Mustafiz Mamun

দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকীতে হুমায়ূন আহমেদের ভক্তরা তাঁকে খুঁজে ফেরেন তাঁর গল্প, উপন্যাসে৷ হিমু হয়ে হলুদ পাঞ্জাবিতে, নুহাশ পল্লিতে৷

সকালেই নুহাশ পল্লিতে ভক্তরা কবরে ফুল দেন ও জিয়ারত করেন৷ হুমায়ূন আহমেদের দুই ছেলে নিষাদ ও নিনিত বাবার কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায়৷ ছোট্ট হাতজোড়া তুলে মোনাজাত করে৷ এসময় সেখানে হুমায়ূন আহমেদের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওনসহ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন৷ আশেপাশের কয়েকটি মাদ্রাসা ও এতিমখানার ছাত্ররা কোরান খতমে অংশ নেয়৷ বিকেলে কবর জিয়ারত শেষে ইফতার ও দোয়া অনুষ্ঠানে যোগ দেয় তারা৷

Screenshot Himu Paribahan
ছবি: Screenshot

হুমায়ূন আহমেদের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁর প্রিয় নুহাশ পল্লি ভক্তদের জন্য মোটামুটি উন্মুক্ত রাখা হয়৷ সারাদিনই ভক্তরা আসেন ফুল হাতে৷ কেউ কেউ হলুদ পাঞ্জাবি পরে৷ ভক্তদের একজন আফরোজা রিমি জানান, ‘‘হুমায়ূন আহমেদকে ছাড়া আমার নিজেকে অপূর্ণ মনে হয়৷ তাঁর লেখা পড়েই আমি সাহিত্য পড়া শুরু করেছি৷ তাঁর উপন্যাসগুলো আমি বারবার পড়ি৷''

আরেকজন ভক্ত সাব্বির হোসেন আসেন তাঁর স্ত্রী এবং শিশু পুত্র হিমুকে নিয়ে৷ হুমায়ূন আহমেদের প্রতি ভালবাসার কারণেই তাঁরা তাঁদের পুত্রের নাম রেখেছেন হিমু৷ তার গায়েও হলুদ পাঞ্জাবি৷ সাব্বির জানান, তাঁদের জীবনের সাথে হুমায়ূন আহমেদ মিশে আছেন৷ তিনি ও তাঁর স্ত্রী নূজহাত হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাসের ভক্ত৷ আর একারণেই তাঁদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা, প্রেম ও বিয়ে৷

Buch Messe Bangladesch Dhaka 2014
চলতি বছর বইমেলায় এভাবেই ছিলেন হুমায়ূন আহমেদছবি: Mustafiz Mamun

বিকেলে নুহাশ পল্লিতে মোড়ক উন্মোচন করা হয় ১০০ জন হিমু ভক্তের লেখা ‘হিমু পরিবহণ' নামে একটি বইয়ের৷ লেখকরা হুমায়ূন আহমেদের জনপ্রিয় চরিত্র হিমুর মতো হলুদ পাঞ্জাবি পরে নুহাশ পল্লিতে আসেন৷ তাঁরা জানান, হুমায়ূন আহমেদ তাঁদের হিমুতে পরিণত করেছেন৷ তাঁরা হিমু হয়েই থাকতে চান৷ তাঁরা বইয়ে হুমায়ূন আহমেদ এবং তাঁর চরিত্র হিমুকে নিয়ে তাঁদের ভাবনার কথা লিখেছেন৷

দুপুরে নুহাশ পল্লিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে হুমায়ূন আহমেদের স্বপ্নের ক্যান্সার হাসপাতাল নিয়ে কথা বলেন মেহের আফরোজ শাওন৷ তিনি বলনে, ‘‘ক্যান্সার হাসপাতাল করার জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন৷ অনেকেই সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন৷ কেউ টাকা দিতে চেয়েছেন, কেউ জমিও দিতে চেয়েছেন৷ পাঁচ বছরের মধ্যে হাসপাতাল স্থাপনের ব্যাপারে কাজ শুরু হতে পারে৷''

তিনি বলেন, ‘‘হুমায়ূন আহমেদ জীবিতকালে বলতেন, নুহাশ পল্লিকে কোনো ইনস্টিটিউট বানানো যাবে না৷ তা করলে আমার শান্তি থাকবে না৷'' তাই শাওন বললেন, ‘‘আমি নুহাশ পল্লিকে আরও ভালোভাবে চালাতে ট্রাস্টি বোর্ড করতে চাই৷ এজন্য আমি চেষ্টা চালাচ্ছি, সবার সঙ্গে যোগাযোগ করছি৷ এ বোর্ডে হুমায়ূন আহমেদের মা ছাড়াও তাঁর ভাইদের মধ্য থেকে একজন, শিলা-নুহাশদের মধ্য থেকে একজন এবং নিষাদ-নিনিতের মধ্য থেকে একজন সদস্য থাকবেন৷''

শাওন বলেন, ‘‘২০১২ সালের ১৯ জুলাই দিনটি আমার কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ৷ কারণ, এরপর থেকে আমি হুমায়ূন আহমেদের কথা শুনতে পাই না৷ হুমায়ূন আহমেদ শুধু স্বামীই নন, তিনি আমার সহকর্মী, নাট্যগুরু ও গানের গুরু ছিলেন৷ আমি তাঁর জীবন দর্শনকে ফলো করি৷ তিনি যে সময় যা করতেন, আমি একই সময়ে তা করার চেষ্টা করছি৷''

বাংলা সাহিত্যের তুমুল জনপ্রিয় লেখক হুমায়ূন আহমেদ দীর্ঘ ১০ মাস ক্যানসারে ভুগে দুই বছর আগে ২০১২ সালের ১৯ জুলাই অ্যামেরিকার নিউইয়র্কে মারা যান৷ তিনি তাঁর সাহিত্যকর্মের জন্য বাংলা অ্যাকাডেমি ও একুশে পদকসহ নানা পুরস্কার পেয়েছেন৷ পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য