হারিয়ে যাওয়া শিল্পকর্ম ফিরে পাওয়ার আশা করছে জার্মানি
২০ জানুয়ারি ২০০৯আখেনের স্যুরমন্ট-লুডভিশ জাদুঘর থেকে উধাও যাওয়া শিল্পকর্মগুলি যেখানে শোভা পেত, সেখানে আজ গাঢ় রঙের উপরে খালি ফ্রেম বা সাদাকালো ছবি প্রদর্শিত হচ্ছে – যা দেখে দর্শনার্থীরা বিরক্ত বোধ করতেন৷ এই শিল্পকর্মগুলি ফিরিয়ে আনার পথ কারো জানা ছিল না৷
জাদুঘরের পরিচালক ফান ডেন ব্রিন্ক বলেছেন, ‘‘আমরা সেই ছবিগুলির নকল প্রদর্শন করছি যেগুলি এখন আর এখানে নেই৷'' এই প্রদর্শনী শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ফান ডেন ব্রিন্ক ইউক্রেন থেকে একটি আশ্চর্যজনক সংবাদ পান৷ ক্রিমিয়ায় অবস্থিত সিমফারপোল শিল্প-জাদুঘরে জার্মান পর্যটকেরা এমন কিছু শিল্পকর্মের সন্ধান পেয়েছেন যা এককালে আখেনের ঐ জাদুঘরে প্রদর্শিত হত৷
পর্যটকদের তোলা ছবি এবং ভিডিও চিত্র বিশ্লেষণ করে ফান ডেন ব্রিন্ক ছবিগুলি জাদুঘরের পুরানো তালিকার সঙ্গে মিলিয়ে দেখেছেন এবং সেগুলিকে তাদের হারিয়ে যাওয়া শিল্পকর্ম হিসেবে চিহ্নিত করেছেন৷
ইতিমধ্যে সিমফারপোল জাদুঘরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে৷ ফান ডেন ব্রিন্ক বলেছেন খুব শীঘ্রই আখেনের একটি বিশেষজ্ঞ দল বিষয়টি খতিয়ে দেখতে ইউক্রেনের উদ্দেশ্যে রওনা হবেন৷ আখেন জাদুঘরের একজন বিশেষজ্ঞ কিউরেটর হাইনরিশ বেকার বলেছেন, তারা ক্রিমিয়ায় পর্যবেক্ষক দল হিসেবে গিয়ে নিশ্চিত হতে চাইছেন যে ঠিক কোন কোন শিল্পকর্মগুলি সেখানে আছে এবং কী অবস্থায় আছে৷
ব্রিন্ক আরো বলেছেন, সিমফারপোল আর্ট মিউজিয়ামের প্রধান লারিনা কুদরিয়াশোভার সাথে এবিষয়ে যোগাযোগ করা হয়েছে৷ তিনি বলেছেন, বিষয়টি সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে সম্পর্কিত হলেও তিনি তাঁর সহকর্মীদের নিয়ে এব্যাপারে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবেন৷ তিনি আরো বলেছেন, রাজনৈতিক জটিলতা এড়িয়ে ব্যক্তিগত এবং প্রাতিষ্ঠানিকভাবেই এই খোয়া যাওয়া শিল্পকর্মগুলোর বিষয়ে একটা ঐক্যমতে আসা সম্ভব৷
কুদরিয়াশোভাও জার্মানির পক্ষ থেকে একই ধরনের আচরণ আশা করছেন৷ তিনি চাইছেন দুপক্ষের আলোচনার মাধ্যমে এবং রাজনৈতিক প্রভাব এড়িয়ে বিনিময় প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে৷ তিনি জার্মান বিশেষজ্ঞদের আসন্ন সফর সম্পর্কে আশা ব্যক্ত করেছেন৷ তিনি আরো বলেছেন, ‘‘আমরা রাজনীতিবিদ নই – বরং জাদুঘরের উন্নয়নের জন্য কাজ করি৷ আমরা একে অপরের সহযোগী৷''
উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, এই লুণ্ঠিত শিল্পকর্মের গল্প শুরু হয়েছিল ১৯৪২ সালে৷ এই শিল্পকর্মগুলি আখনের সংগ্রহশালা থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছিল৷ বোমার আঘাত থেকে রক্ষা করার জন্য সপ্তদশ ও ঊনবিংশ শতাব্দীর মূল্যবান শিল্পকর্মগুলি সাবেক পূর্ব জার্মানির ড্রেসডেনের কাছে মাইসেনে আলব্রেশটসবার্গ প্রাসাদে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল৷ সম্ভবত এই চিত্রকর্মগুলি লুণ্ঠিত শিল্পকর্ম হিসাবে মস্কো হয়ে লেনিনগ্রাদে পাঠানো হয়েছিল, যে শহরের বর্তমান নাম সেন্ট পিটার্সবার্গ৷