হজ নিয়ে বিধান ও নির্দেশনা
ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের একটি হজ৷ আর্থিক ও শারীরিকভাবে সমর্থ পুরুষ ও নারীর ওপর হজ ফরজ৷ ফরজ হজ, বদলি হজ, মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে হজ, হারাম সম্পদ দিয়ে হজ ইত্যাদি বিষয়ে কোরান ও হাদিসে যা বলা আছে তার সংকলন করা হয়েছে এই ছবিঘরে৷
হজ ফরজ
ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের একটি হজ৷ আর্থিক ও শারীরিকভাবে সমর্থ পুরুষ ও নারীর ওপর হজ ফরজ৷ সুরা আল ইমরানের ৯৭ আয়াতে বলা হয়েছে, ‘‘আল্লাহর তরফ থেকে সেই সব মানুষের জন্য হজ ফরজ করে দেওয়া হয়েছে, যারা তা আদায়ের সামর্থ্য রাখে৷’’
বদলি হজ
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, বিদায় হজে খাশ’আম গোত্রের এক নারী রাসুলুল্লাহ (সা.)কে জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘‘হে আল্লাহর রাসুল, আমার বাবার ওপর হজ ফরজ৷ কিন্তু তিনি এত বৃদ্ধ যে, গাড়িতে স্থির হয়ে বসে থাকতে পারেন না৷ আমি কি তার পক্ষ থেকে হজ করতে পারব?’’ নবী (সা.) বলেছিলেন, ‘‘হ্যাঁ, তুমি পারবে৷’’ (সহীহ বুখারী)৷
তবে...
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তিকে হজের ইহরামের সময় ‘‘শুবরুমার পক্ষ থেকে লাব্বাইক’’ বলতে শুনে রাসুলুল্লাহ (সা.) জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘‘শুবরুমা কে?’’ লোকটি বলল, ‘‘আমার ভাই৷’’ নবীজি (সা.) বললেন, ‘‘তুমি কি নিজের হজ করেছ?’’ সে বলল, ‘‘না৷’’ নবী (সা.) বলেছিলেন, ‘‘আগে তোমার নিজের হজ করো, তারপর শুবরুমার পক্ষ থেকে করো৷’’ (সহীহ আবু দাউদ শরীফ)৷
বদলি হজের খরচ
অন্যের পক্ষ থেকে বদলি হজে গমনকারী ব্যক্তি হজে প্রেরণকারী ব্যক্তির কাছ থেকে কেবল হজের খরচই গ্রহণ করবেন এবং প্রেরণকারীও কেবল হজের খরচই বহন করবেন৷ কোনো রকমের বিনিময় বা পারিশ্রমিক লেনদেন হারাম৷ বদলি হজের জন্য পারিশ্রমিক দেওয়া হলে গ্রহণকারী ও প্রদানকারী উভয়েই গুনাহগার হবেন এবং প্রেরিত ব্যক্তির জন্য হজের খরচের অতিরিক্ত সব টাকা প্রেরণকারীকে ফেরত দেওয়া ওয়াজিব হবে৷ (দুররুল মুখতার)৷
মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে হজ
হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, জুহায়না গোত্রের এক নারী হযরত মুহাম্মদ (সা.)কে বলেছিলেন, ‘‘আমার মা হজের মানত করেছিলেন, কিন্তু তা আদায় করার আগেই তিনি মারা গেছেন৷ আমি কি তার পক্ষ থেকে হজ করবো?’ নবী (সা.) বলেছিলেন, ‘‘হ্যাঁ, তার পক্ষ থেকে তুমি হজ করবে৷ যদি তার কোনো ঋণ থাকে তবে কি তুমি তার ঋণ পরিশোধ করতে না? সুতরাং আল্লাহর ঋণ পরিশোধ কর৷’’ (সহীহ বুখারী)
হারাম সম্পদ দিয়ে হজ সংক্রান্ত হাদিস
হযরত উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘‘যখন কোনো লোক হারাম সম্পদ দিয়ে অথবা হারাম উপায়ে হজ করতে গিয়ে ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ বলেন তখন আল্লাহ তায়ালা তাকে লক্ষ্য করে বলেন, তোমার সম্পদ হালাল নয়৷ তোমার ‘লাব্বাইক’ এ দরবারে গ্রহণযোগ্য নয়৷ তোমার হজ তোমার দিকেই ছুড়ে দেওয়া হলো৷’’ (হাইসামি)৷
সরকারের টাকায় হজ বৈধ
বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতির যুগ্ম মহাসচিব মুফতি মাওলানা শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী বলেন, ‘‘কোনো রাষ্ট্র বা সরকার চাইলে কোনো ব্যক্তিকে হজে পাঠাতে পারে৷ সেক্ষেত্রে তারা বিশেষ তহবিল ব্যবহার করে থাকে৷ রাষ্ট্রের স্বার্থে, জণগণের কল্যাণে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে থাকে৷ বিভিন্ন গুণীজনকে বিভিন্নভাবে সম্মানিত করে থাকে৷ এক্ষেত্রে অর্থায়ন করা হলে, তাতে দোষের কিছু নেই৷ এটি বৈধ, এটি জায়েজ৷’’