সুন্দরবনে জমজমাট রাসমেলা
বিশ্বের সবচেয়ে বড় শ্বাসমূলীয় বন সুন্দরবনের দুবলারচরে প্রতিবছর কার্তিক-অগ্রহায়ণের পূর্ণিমা তিথিতে বসে রাসমেলা৷ অসংখ্য হিন্দু পুণ্যার্থী আর পর্যটক এ উৎসবে শামিল হতে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে ছুটে আসেন৷
দুবলার চর
রাসমেলা অনুষ্ঠিত হয় সুন্দরবন ঘেঁষে বঙ্গোপসাগরের কোলে জেগে ওঠা ছোট্ট দ্বীপ দুবলার চরে৷ কুঙ্গা এবং মরা পশুর নদীর মোহনার এই চরে বহুকাল ধরে চলে আসছে রাসমেলা৷
রাসমেলার শুরু যেভাবে
জনশ্রুতি আছে ১৯২৩ সালে ঠাকুর হরিচাঁদের অনুসারী হরি ভজন নামে এক হিন্দু সাধু এই মেলা শুরু করেছিলেন৷ তিনি ২৪ বছরেরও বেশি সময় ধরে সুন্দরবনে গাছের ফলমূল খেয়ে অলৌকিক জীবনযাপন করতেন৷
অন্যমতে
অনেকের মতে আবার হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অবতার শ্রীকৃষ্ণ শত বছর আগের কোনো এক পূর্ণিমা তিথিতে পাপমোচন এবং পুণ্যলাভে গঙ্গাস্নানের স্বপ্নাদেশ পান৷ সেই থেকে শুরু হয় রাসমেলা৷
পুণ্যার্থী আর পর্যটক
দুবলার রাসমেলায় দেশের বিভিন্ন জায়গা ছাড়াও বিদেশ থেকে প্রচুর পুণ্যার্থী ও পর্যটকের সমাগম ঘটে৷ প্রায় অর্ধ লক্ষ মানুষ প্রতি বছর এ উৎসবে অংশ নেন৷
প্রার্থানার শুরু
মেলার মূল প্রার্থনা হয় ভোরের প্রথম জোয়ারে পুণ্যস্নানের মধ্য দিয়ে৷ এদিন সূর্য ওঠার আগেই সমুদ্রের বেলাভূমিতে প্রার্থণায় বসেন পুণ্যার্থীরা৷
পুণ্যস্নান
সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সমুদ্রেও জোয়ার শুরু হয়৷ জোয়ারের পানি পুণ্যার্থীদের ছুঁলেই স্নানে নামেন তাঁরা৷
মাছ ধরা শুরু
তিন মাস বিরতির পর সুন্দরবনে মাছ ধরার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয় রাসমেলার এই প্রার্থনার মধ্য দিয়ে৷
লোকজ মেলা
রাসমেলাকে কেন্দ্র করে দুবলার চরে বসে লোকজ মেলাও৷ বিভিন্ন রকম হস্তশিল্প সামগ্রীর সমাগম ঘটে এ মেলায়৷
পূজা মণ্ডপ
রাসমেলা উপলক্ষ্যে দুবলার চরে স্থাপন করা হয় পূজা মণ্ডপ, যেখানে প্রাথর্না করেন পুণ্যার্থীরা৷
ফানুস
রাসমেলার শুরুর দিন আকাশে ওড়ানো হয় ফানুস৷