গ্রেপ্তার আতঙ্কে বিএনপি
২ এপ্রিল ২০১৫
এরই মধ্যে ঢাকার দুইটি এবং চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে প্রার্থী চূড়ান্ত হয়ে গেছে৷ নির্বাচন কমিশনের বাছাইও শেষ৷ একদিন সময় আছে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের৷ তারপর শুরু হবে পুরোদমে নির্বাচনি প্রচারণা৷ তবে বিএনপি একটু বেকায়দায় আছে তাদের ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রার্থী নিয়ে৷ কারণ এখানে বিএনপির মেয়র প্রার্থী আব্দুল আউয়াল মিন্টুর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে৷ তবে তাঁর আপিল করার কথা৷ আপিল না টিকলে মনোয়নপত্র বৈধ হওয়া বিকল্প ধারার মাহি বি চৌধুরীকে সমর্থন দিতে পারে বিএনপি৷
তবে বিএনপির সমস্যা হল, তাদের মেয়র এবং কাউন্সিলর পদে অধিকাংশ প্রার্থীই হয় কারাগারে নয় আত্মগোপনে৷ যারা জামিন না নিয়ে আত্মগোপনে আছেন, তাদের জন্য নির্বাচনের সময় প্রকাশ্যে আসা কঠিন হবে৷ পুলিশের পক্ষ থেকে এরই মধ্যে এ ধরনের একটি তালিকা নির্বাচন কমিশনে পাঠানো হয়েছে বলে ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম কমিশনর মনিরুল ইসলাম৷ আর এই তালিকা ধরে জামিনে না থাকা প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র শেষ পর্যন্ত বাতিল হয়ে যাবে৷
নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, কেউ প্রার্থী হলে তার বিরুদ্ধে যদি কোনো অভিযোগ থাকে তাহলে তাকে গ্রেপ্তারে বাধা নেই৷ নির্বাচন কমিশনের অনুমতিও নিতে হবে না গ্রেপ্তারের আগে৷
বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আহমেদ আযম খান ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘সরকার বিএনপির নেতা-কমীদের বিরুদ্ধে গণহারে মিথ্যা মামলা দিয়েছে৷ একেক জনের বিরুদ্ধে ১০ থেকে ৫০টি মামলা রয়েছে৷ এই মিথ্যা মামলায় কখন জামিন নেবে আর কখন নির্বাচন করবে? নির্বাচন কমিশনের এটা বোঝা উচিত৷''
এদিকে পুলিশ এরই মধ্যে গ্রেপ্তার অভিযান শুরু করেছে৷ ঢাকার ২৮ নং ওয়ার্ডের বিএনপির কাউন্সিলর প্রার্থী সাইদুর রহমানকে বৃহস্পতিবার গ্রেপ্তার করেছে করেছে পুলিশ৷ তাঁকে গ্রেপ্তারের পর রিটার্নিং অফিসারকে পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে মামলা থাকার কথা জানায়৷ তবে গ্রেপ্তারের সময় সাইদুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, তিনি তাঁর বিরুদ্ধে মামলার কথা জানতেন না৷
বিএনপির প্রার্থীরা আশঙ্কা করছেন, তাঁদের এখন পুরনো মামলায়ও গ্রেপ্তার করা হতে পারে৷ অবরোধ হরতালে যে সব মামলা হয়েছে তাতে অনেক আসামি করা হয়েছে, সবাই জানেনও না যে তাঁরা আসামি৷ আর প্রতি মামলায়ই অজ্ঞাতপরিচয় সন্ত্রাসীদের কথা বলা আছে৷ তাই সেই সব মামলায় গ্রেপ্তার হতে পারেন কেউ কেউ৷
আহমেদ আযম খান বলেন, ‘‘আমরা আশঙ্কা করছি, অনেক মামলা আছে যার খবর আমাদের জানা নেই৷ পুলিশ গোপনে করে রেখেছে৷ সেই সব মামলা এখন কাজে লাগানো হবে৷ আর নেতা-কর্মীদেরও প্রচার প্রচারণায় অংশ নিতে দেবে না পুলিশ৷ গ্রেপ্তারের ভয়ে তারা বাইরেই বের হবে না৷''
বিএনপি এরই মধ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রামকে হরতালের বাইরে রাখছে৷ আর অবরোধ নামে থাকলেও তা কার্যকরে তারা সক্রিয় না৷ তারা নির্বাচনকেই গুরুত্ব দিচ্ছে৷ বিএনপি নেতারা বলেন, সরকার ও নির্বাচন কমিশনের উচিত বিএনপির সমান সুযোগ নিশ্চিত করা৷
পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘‘নির্বাচনের জন্যতো আমরা মামলার আসামিদের ছেড়ে দিতে পারি না৷ অপরাধী যারা, যাদের বিরুদ্ধে মামলা থাকার পরও জাসিন নেননি তাদের বিরুদ্ধে আমরা আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব৷''
আর নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, ‘‘পুলিশের কাজে আমরা বাধা দিতে পারি না৷ আমরা নির্বাচনের দিকটা দেখছি৷''