উচ্চশিক্ষা
১২ নভেম্বর ২০১২প্রায় এক ডজন শীর্ষস্থানীয় বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয় সিঙ্গাপুরে তাদের শাখা খুলেছে৷ এর মধ্যে যেমন রয়েছে ‘ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি' বা এমআইটি, তেমনি রয়েছে স্ট্যানফোর্ড, ডিউক ইউনিভার্সিটি ইত্যাদি৷ রয়েছে ফ্রান্স তথা ইউরোপের অন্যতম সেরা বিজনেস স্কুল ‘ইএসএসইসি', রয়েছে ফ্রান্সেরই আরেকটি বিজনেস স্কুল ‘আইএনএসইএডি' এর ক্যাম্পাস৷
এসব প্রতিষ্ঠানে পড়ছেন এশিয়ার সেরা শিক্ষার্থীরা৷ রয়েছে স্থানীয় মেধাবীরাও৷ ফলে সিঙ্গাপুরের শিক্ষার্থীরা দেশেই পাচ্ছেন উচ্চমানের শিক্ষা৷ তাদেরকে যেতে হচ্ছে না যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য বা অস্ট্রেলিয়ায়৷ এতে বন্ধ হচ্ছে মেধা পাচার৷
সিঙ্গাপুর ‘ইকোনোমিক ডেভেলপমেন্ট বোর্ড' বা ইডিবি'র নির্বাহী পরিচালক এলভিন তান বলছেন, এশিয়ায় কাজ করছে বিশ্বের নেতৃস্থানীয় অনেক কোম্পানি৷ কিন্তু মাঠ পর্যায়ে কাজ করার জন্য পর্যাপ্ত লোকবলের অভাব বোধ করছে এসব কোম্পানি৷ কেননা সেখানে প্রয়োজন দক্ষ স্থানীয় কর্মী৷ অর্থাৎ ঐসব কোম্পানিতে কাজ করার মতো মধ্য পর্যায়ের কর্মকর্তার যথেষ্ট অভাব রয়েছে৷ তাই সিঙ্গাপুরের এসব বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ক্যাম্পাসগুলোতে পড়াশোনা করাদের যথেষ্ট চাহিদা দেখা যাচ্ছে৷
জার্মানির অন্যতম প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ‘টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি অফ মিউনিখ' বা টিইউএম ২০০২ সালে সিঙ্গাপুরে তাদের ক্যাম্পাস খুলেছে৷ সেখানে মাইক্রোইলেক্ট্রনিক্স, ইন্ডাস্ট্রিয়াল কেমেস্ট্রি ও ট্রান্সপোর্টেশনের উপর স্নাতকোত্তর ডিগ্রি দেয়া হচ্ছে৷
টিইউএম এর এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক মার্কুস ভেশটার বলছেন, ‘‘আমাদের প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে এই অঞ্চলে যেসব জার্মান কোম্পানি কাজ করছে তাদের জন্য দক্ষ লোকবলের ব্যবস্থা করা৷''
জানা গেছে, সিঙ্গাপুরের টিইউএম থেকে বের হওয়া স্নাতকদের অর্ধেকই কাজ করছে বিভিন্ন জার্মান কোম্পানিতে৷
কাটারিনা ক্লাজের নামে ২৪ বছরের এক জার্মান তরুণী সিঙ্গাপুরে টিইউএম'এ ‘ট্রান্সপোর্ট ও মোবিলিটি'র উপর পড়াশোনা করছেন৷ তিনি জার্মানির ম্যুনস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যবসায় প্রশাসনের উপর পড়াশোনা করেছেন৷
ক্লাজের বলছেন, সিঙ্গাপুর টিএউএম এ তিনি জার্মান বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার পরিবেশ পাচ্ছেন৷ সেই সঙ্গে পাচ্ছেন এশিয়া সম্পর্কে তথ্য৷ ভবিষ্যতে এশিয়ায় কাজ করতে চান তিনি৷
আগামী বছর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত ‘ইয়েল ইউনিভার্সিটি' সিঙ্গাপুরের ‘ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি' এনইউএস'এর সঙ্গে যৌথভাবে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু করতে যাচ্ছে৷ এজন্য ভবন তৈরির কাজ শুরু হয়ে গেছে - যা শেষ হবে ২০১৫ সালে৷ তবে আপাতত ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসেই ক্লাস হবে৷
তবে সিঙ্গাপুরের মতো দেশে ইয়েলের শাখা খোলায় যুক্তরাষ্ট্রে ইয়েলের ক্যাম্পাসে সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে৷ সমালোচকদের অভিযোগ, সিঙ্গাপুরে প্রাতিষ্ঠানিক স্বাধীনতা নেই৷
তবে সিঙ্গাপুরের শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, সিঙ্গাপুরের আইনের মধ্যে থেকে ‘ইয়েল-এনইউএস কলেজ' এর শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা গবেষণা ও মত প্রকাশের পর্যাপ্ত স্বাধীনতা পাবে৷
উল্লেখ্য, প্রায় ৫০ বছর আগে স্বাধীনতা পাওয়ার পর থেকে একচ্ছত্রভাবে সিঙ্গাপুর পরিচালনা করছে দেশটির জনক লি কুয়ান ইউ'এর দল৷ তাদের দাবি, সিঙ্গাপুরের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে কঠোর হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে৷
সিঙ্গাপুরের তিন চতুর্থাংশ জনগণ চীনা বংশোদ্ভূত, ১৩ শতাংশ মালয়েশীয় ও ৯ শতাংশ ভারতীয়৷
জেডএইচ / এএইচ (ডিপিএ)