সার্বিয়ার যত পরিত্যক্ত গ্রাম
সার্বিয়ার দক্ষিণ-পূর্বের নিয়াসেভাক পৌর এলাকার গ্রামগুলো এখন ভূতুড়ে নগরীতে পরিণত হয়েছে৷ একসময় জনবহুল এলাকা হলেও রাষ্ট্রায়ত্ত্ব কারখানা বন্ধ হওয়া এবং দেশের অর্থনৈতিক পরিবর্তনের কারণে গ্রাম ছেড়ে সবাই চলে যাচ্ছেন শহরে৷
গর্নিয়া কামেনিকা
গর্নিয়া কামেনিকা গ্রাম৷ একসময় তারুণ্য ও জীবনের উচ্ছ্বলতায় ভরপুর থাকলেও এখন গ্রামটি যেন শ্মশানপুরী৷ রাত তো বটেই, দিনের বেলাতেও ছবির বাড়ির মতো ভূতুরে অবস্থায় পড়ে থাকে বাড়িগুলো৷ বেঁচে থাকা গুটিকয়েক বুড়োবুড়িই বসে, ঘুমিয়ে নিজেদের মতো সময় কাটান৷ অধিকাংশেরই সন্তান থাকেন শহরে৷ সপ্তাহে বা মাসে একবার প্রয়োজনীয় জিনিসের সরবরাহ আসে৷ এটাই এখানে জীবন৷
কোরেনটাক
ছোট্ট, ছবির মতো সুন্দর ছিল এই গ্রামটি৷ সবকিছুই রয়েছে আগের মতো৷ কিন্তু দেখে মনে হয়, এক রাতের মধ্যে শুধু হাওয়া হয়ে গেছে গ্রামের বাসিন্দারা৷ গৃহস্থালি জিনিসপত্র, এমনকি রাস্তায় গাড়িও পড়ে থাকতে দেখা যায় এই গ্রামে৷
কালনা
জীবনের চেয়ে মৃত্যুর ছোঁয়াই বেশি এই গ্রামে৷ বাসস্টপ, বাসাবাড়ি, সবখানে শুধু মৃত্যুর ঘোষণা৷ ছবিতে দেখা যাচ্ছে, একটি বাসস্টপে একজন গ্রামবাসী বসে আছেন৷ যদিও বাস কখন আসবে, আদৌ আসবে কিনা, বলা মুশকিল৷ পেছনে নোটিশ বোর্ডে দেখা যাচ্ছে, অনেকগুলো ডেথ নোটিশ৷ তরুণরা তো শহরে পাড়ি দিয়েছেন আগেই, বৃদ্ধরাও জ্বলজ্যান্ত মানুষ থেকে ধীরে ধীরে এই বোর্ডের নোটিশে পরিণত হচ্ছেন৷
আলডিনাক
নিয়াসেভাক শহরের পাশের আরেক গ্রাম আলডিনাক৷ অধিকাংশ বাসিন্দাই চিরতরে গ্রাম ছেড়ে চলে গেছেন শহরে৷ দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় ঘরের তালাতেও পড়েছে মরিচা৷
রেপুসনিকা
আবারও মৃত্যুর ঘোষণা৷ রেপুসনিকা গ্রামের এই বাড়িটিতে একজন বৃদ্ধই থাকতেন৷ দেয়ালে যেমন পলেস্তারা খসে পড়েছে, বৃদ্ধেরও খসে পড়েছে জীবনটুকু৷ দেয়ালের গায়ে ছোট্ট একটি নোটিশেই অতীত হয়েছে তাঁর সব স্মৃতি৷
পাপরাতনা
না, যুদ্ধবিধ্বস্ত কোনো এলাকার দৃশ্য নয়৷ পাপরাতনা গ্রামের এই বাড়িটি গ্রামের অন্যান্য বাড়ির মতো বছরের পর বছর ধরে পরিত্যক্ত৷ অযত্ন অবহেলার প্রতিশোধ নিচ্ছে সময়৷ ভেঙে পড়ছে দরজা-জানালা৷
জীবন্ত জাদুঘর
নিয়াসেভাক পৌর এলাকার আশেপাশের গ্রামগুলো যেন এক একটি উন্মুক্ত জাদুঘর৷ বছরের পর বছর ধরে কারও বাস নেই, কিন্তু বাড়িঘর, সম্পত্তি পড়ে আছে একই রকম৷ আলডিনাক শহরের এই বাড়িটিতে সেই সমাজতান্ত্রিক সরকারের সময়কার শ্লোগান শোভা পাচ্ছে এখনও৷ সমাজ, রাষ্ট্র পরিবর্তন হয়েছে, রয়ে গেছে স্মৃতি৷
এডিকে/ডিজি (রয়টার্স)
আপনার গ্রাম এখন কেমন আছে? আমাদের জানান নীচের ঘরে৷