1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সারা দেশে নিহত ছয়, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
১৬ জুলাই ২০২৪

কোটা সংস্কার আন্দোলনরত এবং ছাত্রলীগের সংঘর্ষ সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে৷ সংঘর্ষে ঢাকায় দুইজন, চট্টগ্রামে তিনজন এবং রংপুরে একজন নিহত হয়েছে৷ স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে৷

https://p.dw.com/p/4iNtg
Bangladesch | Studenten Proteste gegen Quoten für begehrte Regierungsjobs in Dhaka
ছবি: Zabed Hasnain Chowdhury/NurPhoto/IMAGO

সারা দেশে সব বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)৷ মঙ্গলবার রাতে দেওয়া সব পাবলিক ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের দেওয়া চিঠিতে এই তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, ‘সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় দেশের সব পাবলিক ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত মেডিকেল, টেক্সটাইল, ইঞ্জিনিয়ারিংসহ অন্যান্য কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে আবাসিক হল ত্যাগের নির্দেশনা দিয়ে নিরাপদ অবস্থানের নির্দেশনা প্রদানের নিমিত্তে নির্দেশক্রমে অনুরোধ জানানো হলো৷’

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে৷

মঙ্গলবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা দেয়া হয়৷

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিদ্যালয় ও কলেজগামী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শ্রেণি কার্যক্রম পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে৷

এছাড়া আগামী বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) অনুষ্ঠেয় সব বোর্ডের এইচএসসি  ও সমমানের পরীক্ষাও স্থগিত করা হয়েছে৷ ২১ জুলাই থেকে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী পরীক্ষা যথারীতি চলবে৷

মঙ্গলবার মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এই তথ্য জানায়৷

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনরতদের ওপর সোমবারের হামলার প্রতিবাদে সারাদেশে সড়ক ও রেলপথ অবরোধ চলছে৷ তাতে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে৷

কোটা সংস্কার আন্দোলনরত এবং ছাত্রলীগের মুখোমুখি অবস্থানের কারণে ঢাকাসহ সারাদেশে সংঘাত সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়েছে৷ এ পর্যন্ত ঢাকায় দুইজন, চট্টগ্রামে তিনজন এবং রংপুরে একজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে৷

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনরতদের ওপর হামলার সোমবারের হামলার প্রতিবাদে সারাদেশে সড়ক ও রেলপথ অবরোধ চলছে৷ তাতে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে৷

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঢাকা, বগুড়া, রাজশাহী ও চট্টগ্রামের চার জেলায় বিজিবি নামানো হয়েছে৷

হামলায় আহতদের মধ্যে কোটাসংস্কার আন্দোলন ও ছাত্রলীগের কর্মী ছাড়া সাংবাদিক ও পুলিশও সদস্য রয়েছেন৷

চট্টগ্রামের ষোলশহর ও মুরাদপুরে সংস্কার এবং ছাত্রলীগ ও যুবলীগের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে৷ সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন৷ নিহতদের দুজনের নাম মো. ফারুক ও ওয়াসিম আকরাম৷ আরেকজনের পরিচয় জানা যায়নি৷

ওয়াসিম চট্টগ্রাম কলেজের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র এবং ফারুক ফার্নিচার  ব্যবসায়ী বলে জানা গেছে৷ নিহত দুইজনের শরীরে গুলির দাগ আছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন৷

দুপুর দুইটার দিকে রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক দিয়ে কোটাবিরোধীরা ক্যাম্পাসে ঢুকতে চাইলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়৷ সেখানে পুলিশের গুলিতে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ছাত্র আবু সাঈদ নিহত হন৷

নিউমার্কেটের পাশে ঢাকা কলেজের সামনে একজন অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ৷  কোটা সংস্কার আন্দোলনরত ও ছাত্রলীগের মধ্যে সংঘর্ষ চলাকালে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়৷ সন্ধ্যা ছয়টার দিকে সিটি কলেজের সামনে রক্তাক্ত এক ব্যক্তিকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন৷ তার পরিচয়ও জানা যায়নি৷

 ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিহতের বিষয়টি পুলিশ নিশ্চিত করেছে৷

ঢাকার মহাখালীতে কোটাবিরোধীরা দুপুরের দিকে রেললাইন অবরোধ করায় সারাদেশের সঙ্গে রেল যোগাযোগ বন্ধ আছে৷ ফার্মগেট এলাকায় মেট্রোরেলে হামলা হয়েছে৷

চট্টগ্রামের কুমিরায় সকালে রেললাইন অবরোধের খবর পাওয়া গেছে৷

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করা হয়েছে৷

ঢাকার সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায় কোটা সংস্কার আন্দোলনরত ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়৷ উভয় পক্ষ লাঠিসোঁটা, রড, জিআই পাইপ নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে৷ সংঘর্ষের সময় আন্দোলনরতদের লক্ষ্য করে  পিস্তল উঁচিয়ে সাদা পোশাক পরা এক যুকককে বার বার গুলি করতে দেখা গেছে৷ পুলিশ টিয়ারগ্যাস ও রাবার বুলেট ছুঁড়েছে। এই সংঘর্ষ সায়েন্স ল্যারেটরি ছাড়িয়ে নিউমার্কেট, এলিফ্যান্ট রোড, ধানমন্ডি, কলাবাগান এলাকা পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে৷

ঢাকার মতিঝিল, ফার্মগেট, মহাখালী, পল্টন, রামপুরা, বাড্ডা, চানখারপুল, সদরঘাট, গোপীবাগসহ বিভিন্ন এলাকায়  কোটা সংস্কার আন্দোলনরতরা সড়ক অবরোধ করে৷ তাদের সঙ্গে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের দিনভর সংঘর্ষ হয়৷ এতে প্রায় পুরো ঢাকা শহরে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়৷ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থীও রাস্তায় নেমে আসেন৷

ঢাকার বাইরে চট্টগ্রাম, রাজশাহী, রংপুর, বগুড়া, ময়মনসিংহসহ বেশ কিছু স্থানে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে৷ কয়েকটি জেলায় মহাসড়ক অবরোধ করেন কোটাবিরোধীরা৷ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একটি অংশ ঢাকা আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে৷

মঙ্গলবার সারাদেশে সড়ক যোগাযোগও বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে৷

ঢাকাসহ সারাদেশে হামলা ও সংঘর্ষের সময় দুই পক্ষের হাতেই লাঠিসোঁটা দেখা গেছে৷

 কোটা সংস্কার আন্দোলন (বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন)-এর অন্যতম সমন্বয়কারী আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘‘সারাদেশে আমরা প্রতিরোধ গড়ে তুলেছি৷ আমাদের সমর্থনে সাধারণ শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে এসেছেন৷ সারাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়সহ অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা আমাদের সঙ্গে আছেন৷ আমাদের সড়ক ও রেলপথ অবরোধের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত৷''

‘আমাদের ঠেকাতে ছাত্রলীগ টোকাই এবং সশস্ত্র ব্যক্তিদের মাঠে নামিয়েছে৷’

তিনি বলেন, ‘‘এখন পর্যন্ত ছাত্রলীগ ও পুলিশের গুলিতে সারাদেশে চারজন নিহত হওয়ার খবর আমরা পেয়েছি৷ আর আহত পাঁচ শতাধিক৷ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঁচ এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনজন শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন৷''

তার দাবি, ‘‘আমাদের ঠেকাতে ছাত্রলীগ টোকাই এবং সশস্ত্র ব্যক্তিদের মাঠে নামিয়েছে৷ কিন্তু আমরাও প্রতিরোধ গড়ে তুলছি৷''

বিকালে তারা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশ করেন৷ সমাবেশে তারা হামলার বিচার এবং সরকারকে দ্রুত সংসদে আইন পাশ করে কোটা সংস্কার করতে বলেন৷ একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য প্রত্যাহার করার দাবিও জানান তারা৷

সমাবেশের পর তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ঢোকার চেষ্টা করছেন৷

 জগন্নাথ হলের পাশের সড়কে অবস্থান নিয়েছেন তারা৷

এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারি প্রক্টর ড. মো. আবদুল মুহিতের ওপর আন্দোলনকারীরা চড়াও হলে তিনি পড়ে গিয়ে আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে৷ তিনি বিকাল চারটার দিকে শহীদ মিনারে কোটাবিরোধীদের অবস্থানের কাছে গেলে এই ঘটনা ঘটে৷ তিনি প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যদের নিয়ে বহিরাগতদের ক্যাম্পাস ছাড়ার আহ্বান জানাতে গিয়েছিলেন৷

অন্যদিকে ছাত্রলীগ বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে সমাবেশ করেছে৷  তারা সমাবেশের পর সেখানেই অবস্থান নিয়েছে৷  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত দাবি করেন, ‘‘সাধারণ ছাত্রদের নামে এখন ছাত্রদল ও শিবির নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে৷ তারাই দেশের বিভিন্ন এলাকায় হামলা ও নাশকতা করছে৷ ছাত্রদল একদিন আগে ঘোষণা দিয়েছে তারা আজ (মঙ্গলবার) থেকে মাঠে থাকবে৷ তার ফল আমরা দেখতে পাচ্ছি৷''

‘সাধারণ ছাত্রদের নামে এখন ছাত্রদল ও শিবির নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে৷’

তিনি বলেন, ‘‘সারাদেশে আমাদের পাঁচ শতাধিক নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন৷ যে চারজন নিহত হয়েছে তার দায় ছাত্রদল ও শিবিরের৷ তারা প্রকাশ্যে মিছিল বের করেছে৷''

ছাত্রলীগ তাদের প্রতিবাদ সমাবেশ অব্যাহত রাখবে বলেও জানান তিনি৷ কোটা সংস্কারের বিষয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমরাও কোটার যৌক্তিক বিন্যাস চাই, কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী ও ধ্বংসাত্মক কাজ প্রতিরোধ করবো৷''

ঢাকার মতিঝিলে ইসলামী ছাত্র শিবির ও পল্টনে ছাত্রদল কোটা সংস্কার আন্দোলনরতদের সমর্থনে মঙ্গলবার মিছিল করেছে৷

এদিকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলাকে দেশের ‘রাজনীতির ইতিহাসে জঘন্যতম ঘটনা' বলে মন্তব্য করেছেন৷ তিনি শিক্ষার্থীদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে সারা দেশের মানুষকে তাদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন৷ সব রাজনৈতিক দলকেও শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল৷ তিনি ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বিএনপির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা মশিউর রহমান যাদু মিয়ার জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন৷

অন্যদিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের  কোটাবিরোধী আন্দোলন করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন৷ মঙ্গলবার ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘‘আমরা ধৈর্য ধরছি৷ সময়মতো সব কিছুই দেখবেন, সময়মতো যথাযথ অ্যাকশন নেওয়া হবে৷'' চলমান আন্দোলনে একটি মহলের রাজনৈতিক ইন্ধনের কথাও বলেন তিনি৷

বাংলাদেশে কোটা সংস্কার ইস্যুতে চলমান সহিংসতার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র৷ সোমবার মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে মুখপাত্র ম্যাথু মিলার উদ্বেগ প্রকাশ করেন৷ তিনি এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘‘ঢাকা ও বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় ব্যাপক ছাত্র বিক্ষোভে শত শত আহতের রিপোর্ট সম্পর্কে আমরা সচেতন আছি৷ আমরা বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছি৷''

তিনি আরও বলেন, ‘‘মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং শান্তিপূর্ণ সমাবেশ যে-কোনো বিকাশমান গণতন্ত্রের অপরিহার্য উপাদান৷ আমরা শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকারীদের বিরুদ্ধে যে-কোনো সহিংসতার নিন্দা জানাই৷ যারা এই সহিংসতার শিকার হয়েছেন, তাদের প্রতি আমাদের সহমর্মিতা রয়েছে৷'' তিনি তখন  দুই জন নিহত হওয়ার কথা বললেও তখন পর্যন্ত কোনো নিহতের ঘটনা ঘটেনি৷ দুইজন নিহত হওয়ার তথ্য উল্লেখ করায় তার প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র দপ্তর৷

অন্যদিকে কোটা সংস্কার আন্দোলনরতদের পক্ষে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ায় আয়মান সাদিকের টেন মিনিট স্কুলের পাঁচ কোটি টাকার বিনিযোগ বাতিল করেছে আইসিটি মন্ত্রণালয়ের অধীনের স্টার্টআপ বাংলাদেশ৷ টেন মিনিট স্কুলের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সিইও আয়মান সাদিক দুই দিন আগে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের পক্ষ নিয়ে নিজের ফেসবুক পোস্টে লিখেছিলেন, ‘‘কোটা সংস্কার চাই, মেধা হোক সবচেয়ে বড় কোটা৷''

রংপুরে উপাচার্যের ভবনে আগুন

রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ নিহত হওয়ার পর বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে কোটাবিরোধীরা উপাচার্যের বাসভবনে আগুন দিয়েছে।আগুন দেয়ার আগে দোতলা বাড়ির নিচতলায় ভাঙচুর করা হয়।এ সময় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হাসিবুর রশীদ ও সহ-উপাচার্যের গাড়িসহ পাঁচটি গাড়িতে আগুন দেয়া হয়।

ভাংচুর ও অগ্নি সংযোগের সময় উপাচার্য, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদকসহ অন্তত ২০ জন শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী উপাচার্যের বাসভবনের দোতলায় অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন।

আপিল করেছে সরকার

সরকারি চাকরিতে হাইকোর্টের দেয়া রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল আবেদন করেছে রাষ্ট্রপক্ষ।

মঙ্গলবার অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ের পক্ষ থেকে এ আবেদন জমা দেয়া হয়। আবেদনে বলা হয, সরকারি চাকরিতে কোটার বিধান রাখা সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত এবং আদালত এই নীতিগত সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ করতে পারে না।