জার্মানিতে কোয়ালিশন চুক্তি চূড়ান্ত
৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮বুধবার সকালে জার্মানিতে প্রস্তাবিত মহাজোট সরকারের কোয়ালিশন চুক্তি চূড়ান্ত রূপ পাবার পর দুপুরে সিডিইউ, সিএসইউ ও এসপিডি দলের শীর্ষ নেতারা এক সংবাদ সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে এই সাফল্যের ঘোষণা করেন৷ চ্যান্সেলর ও সিডিইউ দলের নেত্রী আঙ্গেলা ম্যার্কেল, বাভেরিয়ার সিএসইউ দলের শীর্ষ নেতা হর্স্ট সেহোফার ও এসপিডি নেতা মার্টিন শুলৎস একযোগে প্রস্তাবিত সরকার সম্পর্কে ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেন৷
শেষ মুহূর্তে আলোচনার পরিবেশ স্পষ্ট করে দিচ্ছিলো, যে নতুন করে মহাজোট সরকার গঠন করতে দুই পক্ষের সদিচ্ছার অভাব নেই৷ সাফল্যের জন্য দুই পক্ষের উপর প্রবল চাপও কাজ করছে৷ তীরে এসে তরি ডুবলে দুই পক্ষেরই ভাবমূর্তির ক্ষতি হতো৷ সেই অবস্থায় বিকল্প হিসেবে নতুন নির্বাচনের মুখোমুখি হওয়া তাদের জন্য কঠিন হতে পারতো৷ অতএব বাকি সব বিষয়ে ঐকমত্যের পর হাতে গোনা কয়েকটি ইস্যুতে মতপার্থক্যের কারণে সরকার গড়ার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হতে দেননি দলের নেতারা৷
কোয়ালিশন চুক্তি চূড়ান্ত হবার পর মন্ত্রিসভার রূপরেখা ও মন্ত্রী পদের বণ্টনও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়৷ সেই প্রশ্নেও দর কষাকষির অবকাষ কম নয়৷ কোয়ালিশন চুক্তির মধ্যে নিজস্ব স্বাক্ষর তুলে ধরতে চায় দুই শিবিরই৷ দলের অ্যাজেন্ডা কার্যকর করতে বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে মন্ত্রিত্বের দাবিতে অটল থেকেছে ৩ দলই৷ এ ক্ষেত্রে এসপিডি দলের উপর বিশেষ চাপ কাজ করেছে৷ কারণ দলের সদস্যরা ভোটের মাধ্যমে সম্ভাব্য কোয়ালিশন চুক্তি অনুমোদন না করলে মহাজোট সরকার গঠন করাই সম্ভব হবে না৷ অতএব ইউনিয়ন শিবিরকেও বাধ্য হয়ে যতটা সম্ভব ছাড় দিতে হয়েছে৷ সরকার গড়া সম্ভব হলে ছোট শরিক দল হওয়া সত্ত্বেও এসপিডি পররাষ্ট্র, অর্থ ও শ্রম মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেতে চলেছে৷
সিডিইউ নেত্রী আঙ্গেলা ম্যার্কেল মঙ্গলবারই বলেছিলেন, সব পক্ষকে কষ্ট সহ্য করে অনেক ছাড় মেনে নিতে হবে৷ এসপিডি নেতা মার্টিন শুলৎস বুধবারকে ‘সিদ্ধান্তের দিন’ হিসেবে বর্ণনা করেছিলেন৷ বাকি দলগুলি নতুন মহাজোটের রূপরেখার সমালোচনা করে বলছে, দুই বড় দলের বিদায়ী সরকারের স্থবিরতা অপরিবর্তিত থাকছে৷ শুধু বাড়তি অর্থ ব্যয় করার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে৷
বছরের শুরু থেকে এসপিডি দলের সদস্যসংখ্যা উল্লেখযোগ্য মাত্রায় বেড়ে গেছে৷ ২৪,৩৩৯ ব্যক্তি দলের খাতায় নাম লিখিয়েছেন৷ ফলে এই মুহূর্তে মোট ৪৬৩,৭২৩ জন সদস্যের ভোটাধিকার রয়েছে৷ তবে এই সাফল্যের পেছনে দলের যুব শাখার বিশেষ ভূমিকা রয়েছে৷ মহাজোটের বিরোধিতা করতেই তারা প্রচার চালিয়ে অনেক নতুন সদস্য আকর্ষণ করতে পেরেছে৷ ভোটাভুটির সময় সেই বিরোধিতার প্রতিফলন ঘটলে সম্ভাব্য মহাজোট সরকারের প্রতি সমর্থন অনিশ্চিত হয়ে পড়বে৷ সেক্ষেত্রে দলের গোটা নেতৃত্বের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়বে৷
এসবি/এসিবি