1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

গোয়েন্দা প্রধানের প্রস্থান

৬ নভেম্বর ২০১৮

জার্মানির সরকারি জোট ও চ্যান্সেলর ম্যার্কেলকে দুর্বল করে বিদায় নিতে হলো জার্মানির অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থার প্রধানকে৷ তিনি উগ্র দক্ষিণপন্থি দলে যোগ দিলে বিতর্ক আরো জোরদার হবে৷

https://p.dw.com/p/37iLp
বিদায়ী গোয়েন্দা প্রধান হান্স-গেয়র্গ মাসেন
ছবি: picture-alliance/AP Photo/M. Sohn

জার্মানির অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থার প্রধান হান্স-গেয়র্গ মাসেন-কে ঘিরে বিতর্ক গত কয়েক মাসে চরম অস্বস্তি সৃষ্টি করেছে৷ এমনকি তাঁকে কেন্দ্র করে চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের মহাজোট সরকারের পতনের আশঙ্কাও দেখা দিয়েছিল৷ সরকারের শরিক বাভেরিয়ার সিএসইউ দলের প্রধান ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্স্ট সেহোফার অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থার প্রধানের প্রতি পূর্ণ আস্থা দেখিয়ে চলেছিলেন৷ কেমনিৎস শহরে নব্য নাৎসিদের তাণ্ডব ও বিদেশিদের বিরুদ্ধে হামলার বিষয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে সরকারকে চরম অস্বস্তিতে ফেলা সত্ত্বেও মাসেনকে বরখাস্ত করতে রাজি হননি সেহোফার৷ বরং তাঁকে প্রতিমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ করতে চেয়েছিলেন তিনি৷ বাকি দুই শরিক দলের চাপে তা সম্ভব না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত একই বেতনে তাঁকে উপদেষ্টা হিসেবে নিযুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী৷ কিন্তু শেষরক্ষা হলো না৷ সোমবার সেহোফার গম্ভীর মুখে জানিয়ে দিলেন, মাসেনকে অবসরে পাঠানো হচ্ছে৷ তিনি বলেন, ব্যক্তিগত স্তরেও তিনি ক্ষুণ্ণ হয়েছেন৷

গত ১৮ই অক্টোবর পোল্যান্ডের রাজধানী ওয়ারশ শহরে ইউরোপীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলির এক সম্মেলনে মাসেন যে বিদায়ী ভাষণ দিয়েছিলেন, তার ফলেই তাঁকে বিদায় নিতে হলো৷ সম্প্রতি সেই ভাষণের লিখিত রূপ প্রকাশিত হওয়ায় বিষয়টি আবার সংবাদ মাধ্যমের শিরোনাম হয়৷ তাতে মাসেন দাবি করেছিলেন, তাঁর বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে৷ বিশেষ করে এসপিডি দলের ব়্যাডিকাল বামপন্থি অংশ তাঁকে কাজে লাগিয়ে মহাজোট সরকারের পতন তরান্বিত করতে চায় বলেও মাসেন দাবি করেন৷ এমন বিস্ফোরক মন্তব্যের পর সেহোফার আর তাঁর প্রতি আস্থা দেখাতে পারলেন না৷

মাসেন-কাণ্ডের জের ধরে সরকারের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷ পরপর দু'টি রাজ্য নির্বাচনে তার প্রতিফলন দেখা গেছে৷ সরকারের শরিক তিন দলই ব্যাপক মাত্রায় জনসমর্থন হারিয়েছে৷ চ্যান্সেলর ও সিডিইউ নেত্রী হিসেবে আঙ্গেলা ম্যার্কেল এতটাই দুর্বল হয়ে পড়েছেন যে, দলের প্রধানের তিনি দায়িত্ব ছেড়ে দিচ্ছেন৷ বাভেরিয়ায় সিএসইউ দলের অভূতপূর্ব খারাপ ফলাফলের পর হর্স্ট সেহোফারকেও বিদায় নিতে হবে, এমন সম্ভাবনা বেড়েই চলেছে৷ সেক্ষেত্রে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবেও তাঁর পক্ষে কাজ চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে না, এমনটা ধরে নেওয়া যায়৷ এমন প্রেক্ষাপটে মাসেন-কাণ্ডে তাঁর ভূমিকা আরো সমালোচনার কারণ হয়ে উঠেছে৷

যাকে ঘিরে জার্মানির রাজনৈতিক জগতে তোলপাড় হয়ে গেল, সেই মাসেন নিজে সংবাদ শিরোনাম থেকে এবার বিদায় নেবেন, সেই সম্ভাবনাও দেখা যাচ্ছে না৷ কারণ, মাসেন নিজে এবার সক্রিয় রাজনীতিতে প্রবেশ করার ইঙ্গিত দিয়েছেন৷ সঙ্গে সঙ্গে চরম দক্ষিণপন্থি এএফডি দল তাঁকে স্বাগত জানিয়েছে৷ উল্লেখ্য, কেমনিৎস শহরের ঘটনা সম্পর্কে মন্তব্যের পর থেকেই উগ্র দক্ষিণপন্থিদের প্রতি তাঁর সহানুভূতির অভিযোগ শোনা যাচ্ছিল৷ এএফডি দলের বেশ কয়েকজন নেতার সংবিধানবিরোধী আচরণ ও মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা দলের উপর নজর রাখার ইঙ্গিত দেওয়ায় এএফডি নেতৃত্ব বর্তমানে দুশ্চিন্তায় পড়েছে৷ বলা বাহুল্য, সে অবস্থায় খোদ মাসেনকে দলের নেতা হিসেবে পেলে তাদের খুবই সুবিধা হবে৷ তবে সক্রিয় রাজনীতিতে যোগ দিলে মাসেন তাঁর সরকারি ভাতা হারাবেন৷ তাছাড়া সেক্ষেত্রে তিনি গোপনীয়তা সংক্রান্ত শপথ ভঙ্গ করতে পারেন বলেও আইনি বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন৷

এসবি/এসিবি (ডিপিএ, রয়টার্স)