সমাজ ও অর্থনীতি নিয়ে ড. ইউনূসের ভাবনা
৯ আগস্ট ২০২৪ব্যবসা-বাণিজ্য, বিশ্বায়ন, সমাজ উন্নয়ন, নারী উন্নয়ন নানান খাতেই ড. মুহম্মদের ইউনূসের যুগান্তকারী ভাবনা বিশ্বমহলে সমাদৃত৷
সামাজিক ব্যবসা
সামাজিক ব্যবসা- ধারণার জনক ড. মুহম্মদ ইউনূস৷ সামাজিক ব্যবসা বলতে তিনি এমন একটি ধারণাকে বুঝিয়েছেন যেখানে ব্যবসা করে অর্থসম্পদ উপার্জনের চেয়ে সামাজিক সমস্যা সমাধানের উপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়৷ প্রাপ্ত মুনাফা ব্যবসার প্রসারণে পুনর্বিনিয়োগ করা হয়৷ তার প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংক এই ধারণার উপরই প্রতিষ্ঠিত যার মধ্যে দিয়ে দেশে হাজার হাজার মানুষ দারিদ্রতা থেকে মুক্তি দিয়েছেন৷ ক্ষুদ্র ঋণের ধারণা বিকাশে ২০০৬ সালে নোবেল পুরস্কার পান মুহম্মদ ইউনূস৷ ক্ষুদ্র ঋণ বিষয়ে তার এই ধারণা অনুন্নত বিশ্বের দেশগুলোতেও ছড়িয়ে পড়ে আর ড. মুহম্মদ ইউনূস হয়ে উঠেন গরীবের ব্যাংকার৷
দারিদ্র্য
ড. ইউনূসের মতে, বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক সমস্যার মূলে রয়েছে দারিদ্র৷ দারিদ্রতার কারণে সমাজে সন্ত্রাসবাদ থেকে শুরু করে মানবপাচার নানা সমস্যা সৃষ্টি হয়৷ ‘‘আপনি মানুষকে গরিব রেখে তাকে সুখি করতে পারবেন না … তারা একটি অসহনীয় অবস্থায় থাকবে৷ আপনি যখন বেপোরোয়া, তখন আপনি শান্তির বিনষ্ট ঘটাবেন,'' ২০০৬ সালে নোবেলডটওআরজিকে এই কথা বলেন ড, ইউনূস৷
বিশ্বায়ন
বিশ্বয়নের এই যুগে বিশ্বায়ন প্রক্রিয়ার সাথে তাল মিলিয়ে অর্থনীতিবিদ ইউনূস সামাজিক ব্যবসা নিয়ে আরেকটি নতুন ধারণা দেন৷ এ বিষয়ে তার পরামর্শ হলো ‘বহুজাতিক সামাজিক ব্যবসা'৷ এই ব্যবসার মূল ধারণাটি হলো, এটি এমন এক ধরণের ব্যবসা, যা গরিবদের হাতে ব্যবসার মালিকানা তুলে দেবে অথবা ব্যবসার মুনাফা স্বল্পোন্নত দেশগুলোতেই থাকবে৷
যেমন, ২০০৭ সালে তিনি বাংলাদেশের চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে কন্টিনেন্টাল সমুদ্রবন্দর করে তোলার প্রস্তাব দিয়েছিলেন৷ অবশ্য সমালোচকেরা বলেছিলেন, এর ফলে দেশের জাতীয় নিরাপত্তা, পরিবেশ এবং কর্মসংস্থান বিপন্ন হবে৷
এদিকে সম্প্রতি ভারতের একটি সংবাদমাধমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আরেকটি ধারণার কথা বলেন ড. মুহম্মদ ইউনূস৷ এর নাম দেন তিনি ‘গ্লোবাল সিভিলাইজেশন'৷ সাক্ষাৎকারে তিনি বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতাকে ভারতে ‘দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়' বলে মন্তব্য করায় ভারতের সমালোচনা করেন৷ এসময় তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের এই অস্থিরতা পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতেও ছড়িয়ে পড়তে পারে৷
নারী
ভবিষ্যৎ নির্মাণে নারীদের ভূমিকা নিয়ে ড. ইউনূসের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে৷ ইউনূসের প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ ব্যাংকে কর্মরত নারীর সংখ্যাও পুরুষের তুলনায় বেশি৷
২০১২ সালে হার্ভার্ড রিভিউ বিজনেসকে তিনি বলেন, নারীরা নিজের টাকা দিয়ে ভবিষ্যতের জন্য কিছু করতে চায়৷ আর পুরুষেরা নিজের টাকা খরচ করে নিজেরা উপভোগ করতে চায়৷''
আরআর/জেডএইচ (রয়টার্স)