সমলিঙ্গ বিবাহ ঘিরে বিভক্ত তাইওয়ান
এশিয়ার ‘গে ক্যাপিটাল’ হিসাবে পরিচিত তাইওয়ানের একটি আদালত ২০১৭ সালের মে মাসে সমলিঙ্গ বিবাহের পক্ষে রায় দিয়েছে৷ কিন্তু নতুন প্রজন্ম এই রায়ের পক্ষে হলেও বিপক্ষে প্রবীণরা৷ বিস্তারিত ছবিঘরে...
এশিয়ায় প্রথম
তাইওয়ানই এশিয়ার প্রথম দেশ, যেখানে আদালত সমলিঙ্গ বিয়ের পক্ষে রায় ঘোষণা করেছে৷ কিন্তু ২০১৭ সালের মে মাসে এই রায় হলেও, এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নির্ভর করছে শনিবারের গণভোটের ওপর৷ এই ভোটে সমলিঙ্গ বিবাহের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন দেশের যুবপ্রজন্মের একাংশ৷ অন্যদিকে এর ঘোর বিরোধী প্রবীণ নাগরিকেরা৷
গণভোট কেন?
আদালত সমলিঙ্গ বিবাহের পক্ষে রায় দিলেও কেন প্রয়োজন গণভোট? গত বছর রায় ঘোষনার পর থেকেই গণভোটের দাবিতে আদালতের কাছে এসেছে ডান-বাম সব রাজনৈতিক গোষ্ঠীর প্রতিবাদপত্র৷ চাপে পড়ে গণভোটের আয়োজন করতে বাধ্য হয় সরকার৷
বিরোধ ঘরে-বাইরে...
এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় তাইওয়ান সমকাম বা সমলিঙ্গের প্রেম বিষয়ে বেশ উদার৷ কিন্তু তবুও আদালতের এই ঘোষণায় দ্বন্দ্ব দেখা দিচ্ছে৷ সমলিঙ্গ বিবাহের বৈধতা ঠিক না ভুল, এই তর্কে ছেয়ে গেছে বর্তমান তাইওয়ানের সব মহল৷ খাবার টেবিল থেকে অনলাইন যোগাযোগ মাধ্যম– সব জায়গাতেই আলোচনার বিষয় এটাই৷
পক্ষে কারা?
৩২ বছর বয়সি অস্টিন হাউং নিজে সমকামী৷ কিন্তু আরো অনেকের মতো অস্টিনের এই রায়ের পক্ষে থাকার কারণ শুধুই তার ব্যক্তিগত পছন্দ নয়৷ পেশায় চিত্রগ্রাহক অস্টিন সমকামী যুগলদের বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দিয়ে থাকেন৷ বর্তমানে তাইওয়ানে সমকামী যুগলদের বিবাহ বিষয়ে সঠিক পরামর্শ দেবার লোকের অভাব রয়েছে বলেই এই কাজকে তিনি পেশায় পরিণত করতে চান৷
বিপক্ষে রয়েছেন যারা...
হাউং এই রায়ের পক্ষে থাকলেও তার ৬০ বছর বয়সি মা জেং সমলিঙ্গ বিবাহের ঘোর বিরোধী৷ জেং বলেন, ‘‘সমলিঙ্গ বিবাহের পক্ষে থাকার কোনো দরকার নেই৷ তরুণ প্রজন্মের সব কথা শুনতে থাকলে সমাজে সমকামীদের সংখ্যা বাড়বে৷’’ জেং-এর মতো তাইওয়ানের অনেক প্রবীণ নাগরিকের ধারণা, বিয়ে কেবলমাত্র নারী ও পুরুষের মধ্যেই হওয়া উচিত৷
বিপাকে প্রেসিডেন্ট...
২০১৬ সালে সমলিঙ্গ বিবাহকে বৈধতা দেবার আশা দেখিয়ে ক্ষমতায় আসেন তাইওয়ানের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ৎসাই ইং-ওয়েন৷ কিন্তু ২০১৭ সালে রায় ঘোষনার পর থেকেই দেশজুড়ে বাড়তে থাকে রায়বিরোধী মনোভাব৷ তবুও সমলিঙ্গ বিবাহের পক্ষে লড়া সমাজকর্মীরা এখনো ইং-ওয়েনের প্রতিশ্রুতিতে বিশ্বাসী৷
বিবাহে ব্যবসা...
রাজধানী তাইপেই শহরে প্রতি বছর সমকামী বা ‘এলজিবিটি’ গোষ্ঠীর নেতৃত্বে আয়োজিত হয় ‘প্রাইড’ মিছিল৷ এ বছর এই মিছিল থেকে মোট ৩৩ লক্ষ মার্কিন ডলার আয় করেছে তাইওয়ানের অর্থনীতি৷ ফলে সমকামী সমাজকে ঘিরে দেশে গড়ে উঠছে একের পর এক ব্যবসা৷ সব মিলিয়ে, শনিবারের গণভোটের ওপর নির্ভর করছে দেশের সমাজ ও অর্থনীতির ভবিষ্যৎ৷