সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সংগ্রামের দপ্তর
১ আগস্ট ২০১১নাইন-ইলেভেনের পর অনেকদিন অবধি সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধে ইউরোপীয় সহযোগিতার দাবিটা দাবিই থেকে গিয়েছিল, বাস্তবে পরিণত হয়নি৷ তবে ২০০৪ সালে মাদ্রিদে ট্রেন বোমা বিস্ফোরণে প্রায় ২০০ জন মানুষ প্রাণ হারানোর পর ইইউ একজন সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধ সমন্বয়কর্তা নিয়োগ করে: নেদারল্যান্ডসের গাইস ডে ভ্রিস৷ তিনি একবার তাঁর দপ্তরের কর্মপদ্ধতি এইভাবে বর্ণনা করেছিলেন: তথ্যের আদানপ্রদান খুবই গুরুত্বপূর্ণ৷ বিভিন্ন দেশের পুলিশ ইউরোপোল'এর মাধ্যমে তা করতে পারে৷ বিভিন্ন দেশের সরকারি কৌঁসুলিরা ইউরোইয়ুস্ট'এর মাধ্যমে খবরাখবর নিতে এবং রাখতে পারেন৷ সন্ত্রাসবাদে অর্থ যোগানোর বিরুদ্ধে আইন প্রণয়নের ব্যবস্থা করাও এই দপ্তরের দায়িত্ব৷ সেক্ষেত্রে অবশ্য আন্তর্জাতিক সহযোগিতারও প্রয়োজন৷
মাদ্রিদের বছর দেড়েকের মধ্যেই আসে লন্ডন মেট্রোরেলে বোমা সন্ত্রাসের ঘটনা৷ নিহত হন ৫০ জন মানুষ৷ কিন্তু সেযাবৎ ইউরোপ মোটামুটি ঠান্ডাই আছে৷ এবং সেটা পুলিশ এবং গুপ্তচর বিভাগগুলির কৃতিত্ব বলেই তাদের বিশ্বাস৷ ভ্রিসের উত্তরসুরী হন বেলজিয়ামের জিল দ্য কারশোভ৷ তিনি এই ভ্রান্ত নিরাপত্তার অনুভূতি সম্পর্কে বারংবার সাবধান করে দিয়েছেন, সম্প্রতি ওসামা বিন লাদেনের মৃত্যুর পরেও৷
‘‘বিগ ব্রাদার ইজ ওয়াচিং''
ইউরোপীয় সন্ত্রাস প্রতিরোধ ব্যবস্থার বিরুদ্ধে নানা ধরনের সমালোচনা শোনা গেছে৷ পথেঘাটে পর্যবেক্ষণ ক্যামেরা বসানো, বিমানবন্দরে যাত্রীদের জন্য কড়াকড়ি, এবং বিশেষ করে টেলিফোন, মুঠোফোন কিংবা ব্যাংকে লেনদেন সংক্রান্ত তথ্য কেন্দ্রীয় সার্ভারে জমা রাখা - এসবই নাগরিক অধিকারের বিরোধী বলে অনেকে মনে করেন৷ বিতর্ক আসলে নাগরিকদের নিরাপত্তা এবং তাদের ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তার মধ্যে ভারসাম্য নিয়ে৷
দ্য কারশোভের মতে এ দুটোর মধ্যে কোনো পরষ্পরবিরোধিতা নেই৷ সন্ত্রাসবাদের ঝুঁকি বাড়লে আরো বেশি তথ্য সংগ্রহ করতে হবে বৈকি: সন্দেহভাজন ব্যক্তি, যাতায়াত, আচরণ, অর্থের লেনদেন, টেলিফোনালাপ, সব কিছুর উপরেই নজর রাখতে হবে, আড়ি পাততে হবে - পুলিশ এবং গুপ্তচর বিভাগ তা খুব ভালো করেই জানে৷ কিন্তু যুগপৎ নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষা বাড়াতে হবে৷
প্রতিবেদন: ক্রিস্টফ হাসেলবাখ/অরুণ শঙ্কর চৌধুরী
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ