সকলের সহযোগিতায় দেশের উন্নতি চান শাহ নেওয়াজ
৩ আগস্ট ২০১১সত্তরে ছাত্র হিসেবেই সেনা প্রশিক্ষণ নেওয়ার সুযোগ হয়েছিল শাহ নেওয়াজ এর৷ মানসিকভাবে তাই যুদ্ধের জন্য একটা প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলেন ফরিদপুরের এই তরুণ৷ এরপর একাত্তরের ২৫ মার্চ যখন পাকিস্তানি হানাদার ঢাকা আক্রমণ করে, তখন অস্ত্র তুলে নেন শাহ নেওয়াজরা৷
ফরিদপুরে পাক বাহিনী
একাত্তরের ২১ এপ্রিল পাকিস্তানি বাহিনী ফরিদপুরে প্রবেশ করে৷ বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী এই শহরটি দখলে রাখা পাক বাহিনীর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল৷ শাহ নেওয়াজরা বুঝতে পারেন, সংগঠিত শত্রুপক্ষের সঙ্গে লড়তে গেলে আরো সেনা প্রশিক্ষণ প্রয়োজন৷ তাই, গেরিলা প্রশিক্ষণ নিতে ভারতে পাড়ি জমান তারা৷ ২৮দিন প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন বিহারের একটি কেন্দ্রে৷
গেরিলা হামলা
গেরিলা প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে দেশে ফিরে আসেন শাহ নেওয়াজ৷ এরপর ছোট ছোট গেরিলা আক্রমণ চালিয়ে শত্রুপক্ষকে তটস্থ রাখতেন তারা৷ ডিসেম্বরে শুরু হল চূড়ান্ত লড়াই৷ যশোরসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন এলাকা থেকে পাক সেনারা ফিরতে চাইলো ঢাকায়৷ এজন্য সবাই জড়ো হতে থাকে ফরিদপুরের পদ্মা নদীর পাড়ে৷ এই সুযোগে পাক বাহিনীকে আক্রমণ করে মুক্তিসেনারা৷ সেই সম্মুখ যুদ্ধে বেশ কয়েকজন শত্রুসেনাকে হত্যা করতে সক্ষম হন শাহ নেওয়াজরা৷
স্বাধীন বাংলাদেশ
এভাবে দেশ স্বাধীন হল৷ শাহ নেওয়াজ ফিরে গেলেন কলেজে৷ শিক্ষাজীবন শেষে কিছুদিন চাকুরিও করেছেন তিনি৷ এরপর মনোযোগ দেন ব্যবসায়৷ বর্তমানে ফরিদপুরেই অবস্থান করছেন শাহ নেওয়াজ৷ জানালেন, পঁচাত্তরের পর স্বাধীন দেশের চিত্রটা বদলে গিয়েছিল৷ সর্বশেষ নির্বাচনে আবার ক্ষমতায় ফিরেছে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তি৷
বর্তমান বাংলাদেশের কাছে ব্যক্তিগতভাবে তেমন কিছু প্রত্যাশা করেননা শাহ নেওয়াজ৷ তবে, সামগ্রিকভাবে সকলের সহযোগিতায় দেশের উন্নতি চান এই বীর সেনা৷ ব্যক্তির চেয়ে রাষ্ট্র যেন বড় হয়ে ওঠে রাজনীতিবিদদের কাছে, এই প্রত্যাশা তাঁর৷
প্রতিবেদন: আরাফাতুল ইসলাম
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন