শ্রীলঙ্কা হামলায় জঙ্গি নেতাও নিহত: প্রেসিডেন্ট
২৬ এপ্রিল ২০১৯দেশটির পুলিশ ১৪০ জন সন্দেহভাজনের একটি তালিকা তৈরি করেছে৷ তাদের ধারণা, এই সন্দেহভাজনদের সঙ্গে ইসলামিক স্টেটের যোগাযোগ রয়েছে৷
গির্জা ও হোটেলে হামলার পর সরকার ন্যাশনাল তাওহীদ জামাত- এনটিজেকে এর জন্য দায়ী করে৷ স্থানীয় জঙ্গিরা বিদেশ থেকে সহায়তা পেয়েছে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়৷ পরবর্তীতে এনটিজে নেতা হাশিম আইএসের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করছেন, এমন এক ভিডিও সামাজিক যোগায়োগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়৷ এরপরই হাশিমকে খুঁজতে দেশব্যাপী অভিযান শুরু করে শ্রীলঙ্কা পুলিশ৷
তবে শুক্রবার প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা জানান, ছয়টি হামলাস্থলের একটি রাজধানী কলম্বোর সাংগ্রি-লা হোটেলে বিস্ফোরণে মারা গেছেন হাশিম৷ গোয়েন্দা সংস্থা তাঁকে এ তথ্য জানিয়েছে বলেও জানান তিনি৷
সরকারকেই দায়ী করলেন সিরিসেনা
এক ভাষণে সিরিসেনা তাঁর রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিংহের সরকারকে ব্যর্থতার জন্য দায়ী করেন৷ তিনি বলেন, যে ভুলগুলোর জন্য এ হামলাগুলো ঘটেছে, তার দায় সরকারের নেয়া উচিত৷
সিরিসেনার মতে, তামিল টাইগারদের বিরুদ্ধে রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর সেনা গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের বিচার করে সরকারই দেশের প্রতিরক্ষাব্যবস্থা দুর্বল করে দিয়েছে৷ ২০০৯ সালে বিদ্রোহ দমনের মধ্য দিয়ে শেষ হয় দেশটিতে দীর্ঘদিন ধরে চলা গৃহযুদ্ধ৷
এপ্রিলের মাঝামাঝি প্রতিরক্ষা সচিব ও পুলিশ প্রধান সিরিসেনার সঙ্গে দেখা করেন৷ তখন নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের কাছে ‘বন্ধুপ্রতীম দেশের' কাছ থেকে হামলার প্রস্তুতির সতর্কবার্তা থাকলেও, তা তাঁকে জানানো হয়নি বলে অভিযোগ করেন সিরিসেনা৷
প্রেসিডেন্ট জানান দেশটির পুলিশ প্রধান অচিরেই পদত্যাগ করতে পারেন৷
নতুন হামলার সতর্কতা
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় মুসলিম সংখ্যালঘুদের ‘জঙ্গি' হিসেবে না দেখতে দেশবাসীকে আহ্বান জানান৷ কর্তৃপক্ষ দেশের অভ্যন্তরে আইএসের কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে আনতে সম্পূর্ণ সক্ষম ছিল বলেও জানান তিনি৷
দেশটির সেনাবাহিনী জানিয়েছে সন্দেহভাজনদের খুঁজে বের করা এবং ধর্মীয় স্থাপনায় নিরাপত্তা দিতে দেশজুড়ে প্রায় ১০ হাজার নিরাপত্তাকর্মী মোতায়েন করা হয়েছে৷
এদিকে, প্রতিশোধমূলক হামলার আশঙ্কায় শুক্রবার মসজিদে নামাজ না পড়ে বাসায় নামাজ আদায়ের জন্য মুসলিমদের আহ্বান জানিয়েছিল ধর্মীয় নেতারা৷ ইস্টার হামলার পরপরই শ্রীলঙ্কার বিভিন্ন স্থানে পাকিস্তান থেকে আসা আহমদিয়া শরণার্থীদের ওপর সহিংসতার খবর পাওয়া গেছে৷
বোমা হামলার পর দেশটির খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীরাও গির্জায় যেতে ভয় পাচ্ছেন৷ দেশটিতে আবার হামলা হতে পারে বলে শুক্রবার সতর্ক করেছে অস্ট্রেলিয়া৷
অস্ট্রেলীয় নাগরিকদের জন্য জারি করা ভ্রমণ সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে. ‘‘সবার ওপরই হামলা হতে পারে, বিশেষ করে যেসব স্থানে বিদেশিরা বেশি যান৷''
এডিকে/জেডএইচ (এপি, এএফপি, রয়টার্স)