1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

শুরু হলো ৬১তম ফ্রাংকফুর্ট বইমেলা

১৪ অক্টোবর ২০০৯

মঙ্গলবার, অর্থাৎ ১৩ই অক্টোবর, ‘ফ্রাংকফুর্ট বুক ফেয়ার’-এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল৷ এ’বছর ফ্রাংকফুর্ট আম-মাইন শহরে অনুষ্ঠিত এই পুস্তকমেলার অতিথি দেশ চীন৷

https://p.dw.com/p/K5dZ
বইমেলা উদ্বোধন করেন জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলছবি: AP

বিশ্বের সবচেয়ে বড় বইমেলা বলতেই চলে আসে জামার্নির ফ্রাংকফুর্ট বইমেলার নাম৷ এই বইমেলার ইতিহাস প্রায় ৫০০ বছর পুরোনো৷ প্রতি বছর অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি সময়ে এই বইমেলা অনুষ্ঠিত হয়৷ আর এ-বছরও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি৷ কিন্তু, বইমেলার শুরু থেকেই বিশ্বের সবচেয়ে বড় এই পুস্তকমেলাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়ে গেছে সমালোচনা, তিরস্কার, আবার অনেকক্ষেত্রে বিক্ষোভ৷ কারণ একটাই - অতিথি দেশ চীন৷

অন্যান্য দেশের তুলনায় চীনে বাক স্বাধীনতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা অথবা মত-প্রকাশের স্বাধীনতাকে কম গুরুত্ব দেওয়া হয়৷ তাই ফ্রাংকফুর্টের আন্তর্জাতিক বইমেলায়, চীন থেকে কোন কোন প্রকাশক অংশ নেবেন, কি ধরনের বিষয় সেখানে আলোচিত হবে, কারা সেখানে প্রতিনিধিত্ব করবেন - সবটাই নির্ভর করছে সে দেশের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল, অর্থাৎ কমিউনিস্ট পার্টির ওপর৷

Buchmesse 2009 - Partnerland China
এবারের বইমেলায় অতিথি দেশ চীনছবি: AP

তাই এই অংশগ্রহণ কিছুতেই রাজনীতি বহির্ভূত হতে পারে না৷ হতে পারে না স্বাধীন - মনে করেন অনেকেই৷ যদিও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল বলেন, ‘‘বই বিতর্কের জন্ম দেয়, প্ররোচিত করে৷ আবার ক্ষেত্র বিশেষে উদ্বুদ্ধও করে থাকে বই৷ এ কথা আমরা গোড়া থেকেই জানি৷ বইতে ভিন্ন মত প্রকাশ হতেই পারে৷ কোনো বইতে একনায়কতন্ত্র সম্পর্কে লেখা হলে, অন্য একটি বই-এ লেখা হতে পারে গণতন্ত্রের কথা৷’’

তাই ম্যার্কেল বলেন, ফ্রাংকফুর্ট বইমেলায় চীনের অতিথি দেশ হিসেবে আসা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷ এখানে চীনের প্রতিটি লেখক ও প্রকাশনা সংস্থা নিজ মত প্রকাশের পূর্ণ স্বাধীনতা পাবে৷ কোনো ধরনের ট্যাবু ছাড়াই বিভিন্ন বিষয় আলোচিত হবে এখানে৷

ম্যার্কেল ছাড়াও, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চীনের তরফ থেকে উপস্থিত ছিলেন চীনা ভাইস-প্রেসিডেন্ট শে শিংপং৷ তাঁর কথায়, ভিন্ন ভিন্ন মতাদর্শ যৌথ উন্নয়নের পথে বাধা না হয়ে দাঁড়ানোই সমীচীন৷ প্রসঙ্গত, চীনকে এবারের বইমেলায় অতিথি দেশ করে নিয়ে আসার জন্য গত প্রায় ১৫ বছর যাবত কাজ করেছেন ফ্রাংকফুর্ট বইমেলার আয়োজকরা৷ বইমেলায় অংশ নিতে প্রায় ৩০০টি চীনা প্রকাশনা সংস্থা ইতিমধ্যেই ফ্রাংকফুর্ট-এ এসে পৌঁছেছে৷ এছাড়া, বিশ্বের প্রায় ১০০টি দেশ থেকে কমপক্ষে ৭,০০০টি প্রতিষ্ঠান এসেছে এই বইমেলায় অংশ নিতে৷ যা সংখ্যার বিচারে, গতবছরের তুলনায় প্রায় ৪০০ কম৷

Buchmesse Frankfurt 2009
ফ্রাংকফুর্টে চীনা স্ট্যান্ডের সামনে এক ব্যক্তিছবি: AP

অনেকে এর জন্য বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দাকে দায়ী করলেও, জার্মান বুক সেলারস ইন্ডাস্ট্রি বা জার্মানির পুস্তকশিল্পের প্রধান গটফ্রিড হনেফেল্ডার জানান, ‘‘পুস্তক বিক্রেতা এবং প্রকাশকদের জন্য ২০০৯-এ আমরা বিশেষ কোন পরিবর্তন লক্ষ্য করি নি৷ আর্থিক মন্দা বই-এর বাজারকে খানিকটা প্রভাবিত করলেও, মোটের ওপর তা অপরিবর্তনীয়ই রয়েছে৷ বই আগের মতোই তার নিজস্ব বাজার বজায় রেখেছে৷’’

উল্লেখ্য, বুধবার থেকে আগামী পাঁচ দিন একটি ভিন্ন প্রদর্শনীর মাধ্যমে বিশ্ব বাণিজ্যের বর্তমান চাহিদাগুলি তুলে ধরতে চলেছে চীন৷ তাই এই বইমেলার মাধ্যমে বিশ্ব দরবারে নিজেদের সংস্কৃতি, সাহিত্য এবং ঐতিহ্যকে তুলে ধরা চীনের কাছে যে একটি অন্যতম সুযোগ - তা বলাই বাহুল্য !

প্রতিবেদক: দেবারতি গুহ

সম্পাদনা: রিয়াজুল ইসলাম