শিশুরা নিজের পরিবারেই বেশি যৌন নিপীড়নের শিকার
১৫ জুন ২০১৭একটি নিরপেক্ষ তদন্ত কমিশন জার্মানিতে শিশুদের যৌন নিপীড়নের বিষয়টি অনুসন্ধান করে দেখছে৷ বুধবার কমিশন তাদের অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদন পেশ করে৷ কমিশন ইতিমধ্যেই শত শত নিপীড়িত ও নিপীড়নের সাক্ষীর সাক্ষাৎকার নিয়েছে ও এজাহার সংগ্রহ করেছে৷
কমিশনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, জার্মানিতে শিশুদের যৌন নিপীড়নের ঘটনা ঘটে প্রধানত পরিবারের মধ্যে অথবা পরিচিত মহলে৷ এর পরেই আসে স্কুল বা অপরাপর প্রতিষ্ঠান৷
প্রধানত মেয়েরাই যৌন নিপীড়নের শিকার হয় বলে বার্লিনে প্রতিবেদনটি পেশ করার সময় জানান কমিশনের প্রধান সাবিনে আন্ড্রেসেন৷
শিশুদের যৌন নিপীড়নের ক্ষেত্রে জার্মানিতে প্রথম স্থানে রয়েছে নর্থ রাইন ওয়েস্টফালিয়া রাজ্য, যার পরেই আসছে দক্ষিণের বাভেরিয়া রাজ্য৷
অভাগা যেদিকে চায়...
পরিবারের মধ্যে যৌন নিপীড়নের ক্ষেত্রে শিশুরা প্রায়ই কোনো সাহায্য পায় না অথবা দেরিতে সাহায্য পায়, কেননা মায়েরা সময়মতো হস্তক্ষেপ করেন না, বলেছেন গবেষকরা৷
যারা শৈশবে যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছেন, তারা ছাড়া সাক্ষীদের মতেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে নিগ্রহকারী হয় শিশুটির বাবা, ভাই অথবা সৎভাই৷
এখানে মায়েদের মনোভাব একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, কেননা, মাত্র স্বল্প কয়েকটি ক্ষেত্রে মায়েরা নিগৃহীত শিশুদের কথা বিশ্বাস করে তাদের পাশে দাঁড়ান বলে জরিপে দেখা গেছে৷
মায়েরা যে তাদের সন্তানের যৌন নিপীড়ন নীরবে সহ্য করে যান, তার কারণ স্বামী বা সঙ্গীর সঙ্গে সম্পর্কে এই সব মহিলাদের অসহায়ত্ব৷
‘‘এই রিপোর্ট থেকে মায়েদের ব্যর্থতার একটা ধারণা পাওয়া যায়, কিন্তু এ-ও দেখা যায় যে, শিশুদের যে কিভাবে সাহায্য করতে হবে, সে ব্যাপারে মায়েরা কতটা কম জানেন,'' জার্মান ডিপিএ সংবাদ সংস্থাকে বলেছেন শিশুদের যৌন নিপীড়ন সংক্রান্ত কমিশনের সদস্য ইওহান্নেস-ভিলহেম ব়্যোরিশ৷
মুখ খুলতে শেখা
বিভিন্ন জরিপ ও সাক্ষাৎকার থেকে যে তথ্য সংগৃহীত হয়েছে, শিশুদের যৌন নিপীড়ন রোধের পন্থা নির্ণয়ে তা সাহায্য করবে বলে কমিশনের আশা৷ যুগপৎ কমিশন গবেষণা চালিয়ে যাওয়ার জন্য আরো বেশি আর্থিক সাহায্য প্রদানের আহ্বান জানিয়েছে৷
জার্মানি ও সাবেক পূর্ব জার্মানিতে শিশুদের যৌন নিপীড়নের যে নানা ধরনের পন্থা প্রচলিত ছিল, তার তদন্তের জন্য এই নিরপেক্ষ কমিশন প্রতিষ্ঠা করা হয়৷ কমিশনের কাজ হলো, কী ধরনের পারিবারিক, সামাজিক ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোয় শিশুদের যৌন অপব্যবহারের পথ খুলে যায়, তা নির্ধারণ ও চিহ্নিত করা৷
আগামী বছর এই তদন্ত কমিশন খ্রিষ্টীয় গির্জা সম্প্রদায়গুলিতে শিশুদের যৌন নিপীড়ন ও সাবেক পূর্ব জার্মানিতে শিশুদের যৌন অপব্যবহার সম্পর্কে তাদের রিপোর্ট পেশ করবে৷
এসি/এসিবি (এএফপি, ডিপিএ, ইপিডি, কেএনএ)