শিশুমৃত্যু এক নিঃশব্দ সুনামী : জার্মান উন্নয়ন সাহায্য মন্ত্রী
১৯ এপ্রিল ২০০৫�র হার মোট সামাজিক উত্ পাদনের ০.৭ শতাংশে উন্নীত করতে চায়৷
নানা রোগব্যাধির কারণে বিশ্বব্যাপী অসংখ্য শিশুর মৃত্যুকে জার্মান উন্নয়ন সাহায্য মন্ত্রী এক নিঃশব্দ সুনামী বলে অভিহিত করেছেন৷ তিনি বলেন, দৈনিক ৩০ হাজার শিশু মারা যাচ্ছে এমন সব রোগব্যাধিতে যেগুলো প্রতিরোধ করা সম্ভব৷ মন্ত্রী হাইডেমারি ভিতসোরেক-সয়েল সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, এই নিঃশব্দ সুনামী চালু থাকলে চলবে না৷ তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে৷
আগামী সেপ্টেম্বর মাসে মহাসচিব কোফি আন্নান জাতিসংঘের পক্ষ থেকে এক শীর্ষ সম্মেলন ডেকেছেন৷ কীভাবে জাতিসংঘের মিলেনিয়াম লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা যেতে পারে, সেই সুযোগ আর সম্ভাবনাগুলো নির্দিষ্ট করতে এই সম্মেলন৷ জাতিসংঘ বিশ্বব্যাপী চরম দরিদ্রদশায় থাকা মানুষের সংখ্যা ২০১৫ সালের মধ্যে অর্ধেকে নামিয়ে আনার এক মিলেনিয়াম লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছিল সেই ২০০০ সালে৷ জার্মান উন্নয়ন সাহায্য মন্ত্রী হাইডেমারি ভিতসোরেক-সয়েল সে কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন নিউ ইয়র্কে তাঁর সংবাদ সম্মেলনে৷ তিনি বলেন : এ হল সুয়োগ ও সম্ভাবনার এক জানালা৷এই বিশেষ অবস্থায় আমরা যদি ব্যর্থ হই, তাহলে কেউই আমাদের ক্ষমা করবে না৷
জার্মান মন্ত্রী সাংবাদিক সম্মেলনে দেয়া তাঁর বক্তব্যে একই সঙ্গে জাতি সংঘের সংস্কার পদক্ষেপ এবং আরো বেশি উন্নয়ন সাহায্যের পক্ষে জোর দরবার করেছেন৷ তিনি বলেন : আগামী একটি দশকে বিশ্বব্যাপী বুভুক্ষা আর দারিদ্র্য লক্ষণীয়ভাবে হ্রাসের লক্ষ্যটিকে সামনে রাখতে হবে৷ তাঁর দাবি - উন্নয়ন সাহায্যের জন্য মোট সামাজিক উত্ পাদনের ০.৭ শতাংশ বরাদ্দ করার যে-দায়িত্ব নিজেরাই কাঁধে নিয়েছে সমৃদ্ধ ধনী দেশগুলো, সে-দায়িত্ব পূরণে তাদের এগিয়ে আসা উচিত এবার৷ মন্ত্রী বলেন : প্রতিদিন ৩০ হাজার শিশু প্রাণ হারাচ্ছে নানা ধরনের রোগব্যাধিতে ভুগে - যেগুলো প্রতিরোধ করা সম্ভব৷ সত্যি বলতে, এই অবস্থাটাকে আর মেনে নেয়া যায় না৷ ফলে এই দায়িত্ব পালন করতে আমরা সবাই দায়বদ্ধ৷ এ কথা জার্মান সরকারের জন্যেও প্রযোজ্য৷
মন্ত্রী হাইডেমারি ভিতসোরেক-সয়েল বলেছেন, তাঁর মন্ত্রণালয় উন্নয়ন সাহায্য খাতে বরাদ্দের হার ২০১০ সালের মধ্যে মোট সামাজিক উতপাদনের ০.৫ এবং ২০১৪-২০১৫ সাল নাগাদ তা ০.৭ শতাংশে উন্নীত করার যে-পরিকল্পনা নিয়েছে তা ইউরোপীয় ইউনিয়নের পরিকল্পনার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ৷ তিনি প্রসঙ্গত বলেন : উন্নয়ন সহযোগিতা হল সবচেয়ে ফলপ্রসূ নিরাপত্তানীতি৷ তা সংঘাত আর যুদ্ধ ঠেকানোর সহায়ক হতে পারে৷
জার্মান উন্নয়ন সাহায্য মন্ত্রী আরো উল্লেখ করেন, জার্মানিকে এ ক্ষেত্রে সুদৃষ্টান্ত রেখে এগিয়ে যেতে হবে৷ সব সমস্যা সত্ত্বেও জার্মানির সেই দৃষ্টান্ত হয়ে ওঠার যোগ্যতা রয়েছে৷ প্রসঙ্গত তিনি জানান যে, উন্নয়ন সহযোগিতার ক্ষেত্রে জার্মানি হল পঞ্চম বৃহত্তম অর্থদাতা এবং জাতিসংঘে সে তৃতীয় বৃহত্তম দাতা দেশ৷