শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানোর সময়সীমা নিয়ে বিতর্ক
চার মাস, ছ’মাস নাকি তার চেয়েও বেশি দিন শিশুকে মায়ের বুকের দুধ পান করানো উচিত? এ নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মধ্যেও রয়েছে নানা বিতর্ক৷ বিষয়টি নিয়ে কে সিদ্ধান্ত নেবে বা কী করবেন জেনে নিন৷
নানাজনের নানামত
কোনো মা হয়ত চারমাস পরেই শিশুকে বুকের দুধ পান করানো বন্ধ করে দিলেন৷ কেউ আবার ছ’মাস, আবার কেউ কেউ দু’বছর পর্যন্ত পান কারিয়ে গেলেন৷ আসলে অনেক নতুন মা হয়ত জানেনই না যে ঠিক কতদিন পর্যন্ত বুকের দুধ পান করানো যায়, যা শিশু ও মায়ের জন্য ভালো৷
বিশেষজ্ঞরা যা বলেন
বুকের দুধ পান করলে শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে৷ শিশুর হাঁপানি এবং রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি কমে৷ বুকের দুধ পান করার মধ্য দিয়ে শিশুর ফুসফুসও শক্তিশালী হয়৷ অন্যদিকে মায়ের ক্ষেত্রে জ্বরায়ুর ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা কমে৷ তবে ঠিক কতদিন বুকের দুধ খাওয়াতে হবে তা সঠিকভাবে কোনো সমীক্ষায় জানা যায়নি৷
জার্মান সমীক্ষা
জার্মান অ্যালার্জি ও ক্লিনিকাল ইমিউনোলজি বিষয়ক সোসাইটির পরামর্শ, বুকের দুধ খাওয়ানো উচিত শিশুর জন্মের প্রথম চারমাস৷ ওদিকে জার্মানির জাতীয় ব্রেস্টফিডিং কমিশনের পরামর্শ, শিশুকে মায়ের দুধ পান করানো উচিত জন্মর পর প্রথম পাঁচ মাস৷
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা ডাব্লিউএইচও সম্প্রতি জানিয়েছে, প্রতিটি শিশুকে প্রথম ছ’মাস শুধু বুকের দুধ পান করানো উচিত এবং তারপর দুধের পাশাপাশি অন্য খাবারও দেওয়া উচিত৷
নিজস্ব সিদ্ধান্ত
কোনো মা তাঁর সন্তানকে কতদিন নিজের দুধ পান করাবেন তা একান্তই তাঁর নিজের সিদ্ধান্ত৷ কারণ কিছু মা আছেন, যাঁরা বুকের দুধ পান করানোর মধ্য দিয়ে শিশুর সাথে এক নিবিড় সম্পর্ক গড়ে তুলতে চান এবং এটা করানোর সময় খুবই ভালো বোধ করেন৷ কাজেই নিজ দুধ নিজের সন্তানকে পান করানোর সময়সীমা নির্ধারণ করার সিদ্ধান্তটাও মায়ের নিজস্ব সিদ্ধান্ত৷
পারিবারিক বিষয়
প্রতিটি পরিবার যেমন আলাদা, তেমনি তাদের জীবনযাত্রাও ভিন্ন৷ এক্ষেত্রে মায়ের স্বাস্থ্যের বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ৷ দুধ খাওয়ার আগে মা কোনো ব্যথা অনুভব করেন কিনা বা তাঁকে অন্য কোনো ওষুধ সেবন করতে হয় কিনা, সে বিষয়গুলো অবশ্যই বিবেচনায় আনতে হবে৷
জোর করে কিন্তু নয়!
অনেক মা রয়েছেন যাঁরা শিশুকে বুকের দুধ পান করাতে চান না৷ কিন্তু অন্যদের চাপে করাতে হয়৷ এক্ষেত্রে জোর করে না করানোই উচিত৷ এতে মা, বাবা বা শিশু – কেউ ভলো বোধ করতে পারে না৷ বরং এরকম মায়ের প্রথম থেকেই বলা উচিত যে তিনি বুকের দুধ ছাড়াই তাঁর আদরের সন্তানটিকে বড় করবেন৷ তাহলে আর এই সুন্দর বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক বা ভুল বোঝাবুঝির সুযোগ থাকবে না৷