শপথ নিলো অন্তর্বর্তীকালীন সরকার
প্রকাশিত ৮ আগস্ট ২০২৪শেষ আপডেট ৮ আগস্ট ২০২৪আপনারা যা জানা দরকার
বাংলাদেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শপথগ্রহণ৷
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, উপদেষ্টা ১৬ জন৷
সোমবার গণআন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়৷
নির্ভয়ে মত প্রকাশের সুযোগ তৈরি হবে: ড. ইউনূস
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশে গণতন্ত্র , সুবিচার, মানবাধিকার এবং নির্ভয়ে মত প্রকাশের সুযোগ তৈরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন৷
বঙ্গভবনে শপথ গ্রহণের পর দেয়া বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘‘(পূর্ববর্তী সরকারের) ঘৃণ্য চেষ্টায় ব্যবহৃত হয়ে যারা অপরাধ সংগঠিত করেছেন তাদেরকে আইনানুগ বিচারের মাধ্যমে শিগগিরই শাস্তি দেয়া হবে৷ একই কথা সকল মন্ত্রণালয়, সংস্থা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নানা কর্মক্ষেত্রের জন্য প্রযোজ্য৷ সর্বত্র অপরাধীর বিচার হবে৷’’
সরকারি প্রতিষ্ঠান ও কর্মচারীদের প্রতি যথাযথ দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠান ও তার কর্মীরা নিজ নিজ কর্তব্য পালন করার মাধ্যমে দ্বিতীয় স্বাধীনতাকে উপভোগ করবেন৷ দেশকে গৌরবের শীর্ষে নিয়ে যাবেন৷’’
বাকস্বাধীনতা, মানবাধিকারের উপরও জোর দেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারপ্রধাণ৷ বলেন, নিষ্ঠুর স্বৈরাচারী সরকার দূর হয়ে গেছে৷ কাল সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে গণতন্ত্র, সুবিচার, মানবাধিকার এবং নির্ভয়ে মত প্রকাশের সুযোগ তৈরি হবে৷
তিনি বলেন, ‘‘এই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সৃষ্ট সরকার দেশের প্রত্যেকের সরকার৷ এখানে থাকবে সকলের আকাঙ্খা পূরণের অধিকার৷ অরাজকতার বিষবাষ্প এখন যেই ছড়াবে তাকে সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ব্যর্থ করে দেয়া হবে৷ ...যদি ঐক্যবদ্ধ থাকি ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড থেকে দূরে থাকি, মুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারি আমাদের বিজয় অবশ্যই হবে৷’’
এফএস/এডিকে
শপথ নিলো অন্তর্বর্তীকালীন সরকার
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নিলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বঙ্গভবনের দরবার হলে তাকে শপথ বাক্য পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
এ সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, সামরিক–বেসামরিক কর্মকর্তা ও কূটনীতিকেরা দরবার হলে উপস্থিত ছিলেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে ১৬ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
উপদেষ্টারা হচ্ছেন-
সালেহউদ্দিন আহমেদ, ড. আসিফ নজরুল, আদিলুর রহমান খান, এ এফ হাসান আরিফ, তৌহিদ হোসেন, সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, শারমিন মুরশিদ, বিধান রঞ্জন রায়, ফারুক–ই–আজম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন, সুপ্রদীপ চাকমা, আ. ফ. ম খালিদ হাসান, ফরিদা আখতার, নূর জাহান বেগম, মো. নাহিদ ইসলাম এবং আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
১৬ উপদেষ্টার ১৩ জন আজ শপথ নিয়েছেন। ঢাকার বাইরে থাকায় বিধান রঞ্জন রায়, ফারুক–ই–আজম এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ নিতে পারেননি। তবে তাদের নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে, শিগগিরই তারা শপথ নেবেন বলে জানা গেছে।
এডিকে/টিএম
আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কঠোর হওয়ার সিদ্ধান্ত
দেশব্যাপী অরাজকতা, অগ্নি সংযোগ ও ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে সেনাবাহিনী জানায়, চলমান অরাজকতা, অগ্নি সংযোগ ও ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম বন্ধের মাধ্যমে দেশের স্থিতিশীলতা রক্ষায় সশস্ত্র বাহিনীসহ অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শক্ত অবস্থান গ্রহণের বিষয়ে বাহিনী প্রধানগণ কর্তৃক সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।
সেনাসদরে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, ওএসপি, এসজিপি, পিএসসি এর সাথে নৌ ও বিমান বাহিনী প্রধানের উপস্থিতিতে নবনিযুক্ত পুলিশের আইজিপি, র্যাবের মহাপরিচালক এবং ডিএমপি কমিশনার সাক্ষাৎ করেন।
এসময় আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে সেনাবাহিনীর সহায়তায় দেশের সকল থানার কার্যক্রম শুরু করার বিষয়ে আলোচনা হয়।
ড. ইউনূস ছাত্রদের এবং আমাদের মনোনীত ব্যক্তি: মির্জা ফখরুল
ড. মুহাম্মদ ইউনূস অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পরিচালনায় সফল হবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালে কোটা সংস্কার আন্দোলনে আহতদের খোঁজ খবর নেয়ার পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, "ড. মুহাম্মদ ইউনূস তো ছাত্রদের-আমাদের মনোনীত ব্যক্তি যাকে আমরা গোটা জাতির পক্ষ থেকে দায়িত্ব দিয়েছি… তিনি এই দায়িত্ব পালন করবেন।"
"আমরা অত্যন্ত আশাবাদী যে, তার সফল নেতৃত্বে, তার যোগ্য নেতৃত্বে যে বিষয়টি (আইনশৃঙ্খলা) এটা কাটিয়ে উঠে তিনি তা পূরণ করতে পারবেন।"
মির্জা ফখরুল বলেন, "সবচেয়ে বড় বিষয় শুধু কিন্তু সেটা না। এই গোটা সমস্যার মূল হচ্ছে গণতন্ত্রের অভাব। সেই গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা হচ্ছে তার অন্যতম প্রধান কাজ।"
তিনি বলেন, "যত দ্রুত তিনি গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে পারবেন ততই তিনি সাফল্য অর্জন করতে পারবেন।"
এডিকে/এফএস (দ্য ডেইলি স্টার)
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের উপদেষ্টা পরিষদ
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদে যে নামগুলো শোনা যাচ্ছে:
ড. মুহাম্মদ ইউনূস (প্রধান উপদেষ্টা)
উপদেষ্টা:
সালেহ উদ্দিন আহমেদ
ড. আসিফ নজরুল
আদিলুর রহমান খান
হাসান আরিফ
তৌহিদ হোসেন
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান
মো. নাহিদ ইসলাম
আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া
ব্রিগ্রেডিয়ার (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন
সুপ্রদিপ চাকমা
ফরিদা আখতার
বিধান রঞ্জন রায়
আ ফ ম খালিদ হাসান
নূরজাহান বেগম
শারমিন মুরশিদ
ফারুক ই আজম
বাংলাদেশ সময় রাত নয়টায় শপথ নেবে উপদেষ্টা পরিষদ৷
গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হলে দেশে ফিরবেন শেখ হাসিনা: জয়
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখে পদত্যাগের পর দেশ ছেড়ে যাওয়া শেখ হাসিনা বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হলেই ফিরে আসবেন। ভারতের গণমাধ্যম পিটিআইকে টেলিফোনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বৃহস্পতিবার একথা জানিয়েছেন শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়।
বাংলাদেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির পেছনে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের ভূমিকা রয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
জয় বলেন, শেখ হাসিনা অবশ্যই বাংলাদেশে ফিরে আসবেন। তবে একজন সক্রিয় রাজনীতিবিদ হিসেবে ফিরবেন কি না এ বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি।
জয় আরও বলেন, শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবারের সদস্যরা কখনোই বাংলাদেশের মানুষকে ছেড়ে যাবে না, আওয়ামী লীগের কাউকেও ত্যাগ করবে না।
শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও তার সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান জয়।
বাংলাদেশের নতুন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান
সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. আসাদুজ্জামানকে বাংলাদেশের নতুন অ্যাটর্নি জেনারেল হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তাঁকে এই পদে নিয়োগ দিয়েছেন। এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার আদেশ জারি করেছে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগ।
দেশের ১৭তম অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ পেলেন মো. আসাদুজ্জামান। তিনি এ এম আমিন উদ্দিনের স্থলাভিষিক্ত হলেন।
শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর বুধবার ব্যক্তিগত অসুবিধার কারণ উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বরাবর অব্যাহতিপত্র দেন এ এম আমিন উদ্দিন। এরপর পদটি শূন্য ছিল।
আমার কথা যদি না শোনেন, আমাকে বিদায় দেন: ড. ইউনূস
বিমানবন্দরে বেলা পৌনে তিনটার দিকে বক্তব্য দেন ড. ইউনূস। বক্তব্যের শুরুতেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের স্মরণ করেন তিনি৷ রংপুরে পুলিশের গুলিতে নিহত আবু সাঈদের কথা বলতে গিয়ে অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন৷
দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘দেশবাসীর প্রতি আমার আবেদন আপনারা যদি আমার উপরে বিশ্বাস রাখেন, আমার উপরে ভরসা রাখেন, তাহলে নিশ্চিত করেন দেশের কোনো জায়গায় কারো উপরে হামলা হবে না৷ এটা আমাদের প্রথম দায়িত্ব৷ এটা যদি আমি করতে না পারি, আমার কথা যদি না শোনেন আপনারা তাহলে আমার প্রয়োজন এখানে নাই৷ আমাকে বিদায় দেন৷ আমি আমার কাজে থাকি, সেখানেই ব্যস্ত থাকি৷’’
তিনি বলেন, ‘‘মানুষ মনে করে সরকার দমন পীড়নের যন্ত্র৷ এটা সরকার হতে পারে না৷ সরকারকে মানুষকে রক্ষা করবে৷ আস্থাভাজন হতে হবে৷ মানুষের মনে আস্থা ফেরাতে হবে৷ সবাই মিলে অগ্রসর হতে হবে৷ সারা বাংলাদেশ পরিবার হিসেবে চলবে৷’’
দেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণ চলছে বলে মন্তব্য করেন ড. ইউনূস৷ তবে এগুলোকে ষড়যন্ত্রের অংশ বলে আখ্যা দেন তিনি৷ তিনি বলেন, ‘‘প্রতিটি মানুষকে রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব৷ যেই যাত্রার শত্রু এগুলো৷ এই শত্রুকে রোধ করতে হবে৷’’
ইউনূস দেশবাসী, তরুণ আন্দোলনকারী এবং সেনাবাহিনীকে অবিলম্বে বিশৃঙ্খলা, সহিংসতা থেকে দেশকে রক্ষার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘‘বিশৃঙ্খলা, সহিংসতা থেকে দেশকে রক্ষা করেন৷ বাংলাদেশ সুন্দর, সম্ভাবনাময় দেশ৷ সেটা আমরা নষ্ট করে ফেলেছি৷ সেটা নতুন করে আমাদে গড়তে হবে৷"
তরুণদের প্রশংসা করে তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘‘স্বাধীনতার অর্থ হলো, দেশ তোমাদের হাতে। তোমাদের মনের মতো করে গড়তে পারো৷ পালটে ফেলতে পারো৷ পুরনোদের বাদ দাও। তোমাদের মধ্যে সৃজশীলতা আছে, তাকে কাজে লাগাও৷’’
দেশে পৌঁছেছেন ইউনূস
দুপুর সোয়া দুইটা নাগাদ বাংলাদেশের শহাজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান ড. মুহাম্মদ ইউনূস৷ বিমানবন্দরের বাইরে রয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা৷
তাকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে রয়েছেন সশস্ত্র বাহিনীর প্রধানেরা৷ বিমানবন্দরের আশেপাশের রাস্তায় জড়ো হয়েছে বিপুল সংখ্যক মানুষ৷
আজ রাত আটটা নাগাদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের শপথ নেয়ার কথা রয়েছে৷
এফএস/এপিবি
রাতে নতুন সরকারের শপথগ্রহণ
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশের সরকারে আজই নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা হতে যাচ্ছে৷ গণআন্দোলনের মুখে হাসিনা সরকারের পতনের ৭২ ঘণ্টা পরে নতুন সরকার দায়িত্বভার নিতে যাচ্ছে৷ ড. মুহাম্মদ ইউনূস তার প্রধান হচ্ছেন সেই সিদ্ধান্ত আগেই নেয়া হয়েছে৷ তবে তার সঙ্গে এই সরকারের অন্য সদস্য কারা হচ্ছেন সেই তালিকা প্রকাশ করা হয়নি৷ এই সরকারের মেয়াদ কতদিন হবে, কী ধরনের কার্যপরিধি থাকবে সেসব বিষয়ও এখনও পরিষ্কার নয়৷
অলিম্পিক আয়োজনের সঙ্গে যুক্ত থাকায় প্যারিসে অবস্থানরত ইউনূস গতকালই বাংলাদেশের পথে রওনা হয়েছেন৷ কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি ঢাকায় পৌঁছাবেন৷ রাতে আটটা নাগাদ বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে শপথ নেবেন৷
এফএস/এপিবি