লোহিত সাগরে নৌ-অভিযান শুরু করছে ইইউ
২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ইউক্রেনের জন্য অস্ত্র ও গোলাবারুদ নিয়ে দুশ্চিন্তা ও ট্রাম্প শিবিরের চাপে নিজস্ব নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ সত্ত্বেও ইউরোপীয় ইউনিয়ন বিশ্বের অন্য প্রান্তে অশান্তির মুখে হাত গুটিয়ে বসে থাকতে পারছে না৷ বিশেষ করে নিজস্ব অর্থনীতি হুমকির মুখে পড়লে তো নয়ই৷ ইয়েমেনে হুতি বিদ্রোহীদের দৌরাত্মের কারণে লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচলে বিঘ্ন ঘটায় বিশ্ব বাণিজ্যের উপর কুপ্রভাব পড়ছে৷ অনেক কোম্পানি বাধ্য হয়ে বিকল্প ও অনেক দীর্ঘ পথে জাহাজ চালাচ্ছে৷ ইইউ অর্থনীতি বিষয়ক কমিশনর পাওলো জেন্কিলোনি বলেন, এর ফলে ১০ থেকে ১৫ দিনের এই বিলম্বের ফলে ইউরোপ ও এশিয়ার মধ্যে পণ্য পাঠানোর ব্যায় প্রায় ৪০০ শতাংশ বেড়ে যাচ্ছে৷ অ্যামেরিকা, ব্রিটেনসহ কিছু দেশ যুদ্ধজাহাজ পাঠিয়ে ও ইরান-সমর্থিত হুতিদের উপর পালটা হামলা চালিয়ে সেই পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা করছে৷ এবার ইইউ সংঘবদ্ধভাবে সেখানে সক্রিয় হওয়ার সিদ্ধান্ত নিলো৷
সোমবার ইইউ আনুষ্ঠানিকভাবে লোহিত সাগরে নৌবাহিনীর মিশনের ঘোষণা করলো৷ গ্রিক ভাষায় ‘আসপিদেস' বা ঢাল নামের সেই অভিযানের আওতায় চারটি জাহাজ কয়েক সপ্তাহের মধ্যে লোহিত সাগরে পৌঁছে যাবে৷ এখনো পর্যন্ত ফ্রান্স, জার্মানি, ইটালি ও বেলজিয়াম জাহাজ পাঠিয়ে সেই মিশনে অবদান রাখতে চায়৷ তবে এক বছর মেয়াদের সেই অভিযানে শুধু লোহিত সাগরে বেসরকারি জাহাজের সুরক্ষার লক্ষ্য স্থির করা হয়েছে৷ ইয়েমেনের ভূখণ্ডে কোনো হামলা চালাবে না ইইউ৷ শুধু হামলা ঘটলে পালটা জবাব দিতে পারবে যুদ্ধজাহাজগুলি৷ লোহিত সাগর থেকে এডেন উপসাগর পর্যন্ত এলাকায় সেই অভিযান চলবে৷ জাহাজের পাশাপাশি আকাশ থেকে সতর্ক করার সিস্টেমও মোতায়েন করা হবে৷
ইইউ কমিশন প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন বলেন, সেখানে অবাধে জাহাজ চলাচল নিশ্চিত করতে ইইউ আন্তর্জাতিক সহযোগীদের সঙ্গে কাজ করবে৷ ইটালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্তোনিও তাজানি বলেন, সাধারণ ইউরোপীয় প্রতিরক্ষা ক্ষমতা গড়ে তোলার পথে এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ৷
সোমবার সন্ধ্যায় হুতি বিদ্রোহীরা জানিয়েছে, তারা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তিনটি জাহাজের উপর হামলা চালিয়েছে৷ ব্রিটেন ও অ্যামেরিকায় নথিভুক্ত জাহাজগুলির উপর নির্দিষ্টভাবে হামলা চালানো হয়েছে৷ এর আগে অ্যামব্রে নামের এক সামুদ্রিক নিরাপত্তা কোম্পানি জানিয়েছিল, যে গ্রিসের পতাকাধারী মার্কিন মালিকানার একটি জাহাজের উপর দুই ঘণ্টায় দুটি হামলা চালানো হয়েছে৷
গাজার উপর ইসরায়েলি হামলার কারণ দেখিয়ে হুতি বিদ্রোহীরা লোহিত সাগরে জাহাজ চলাচলে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে৷ কাতারের জ্বালানি মন্ত্রী সাদ আল-কাবি সোমবার গাজায় অস্ত্রবিরতির আহ্বান জানান৷ তিনি গাজার পরিস্থিতিকে ‘সমস্যার শিকড়' হিসেবে বর্ণনা করে অস্ত্রবিরতির মাধ্যমে গোটা বিশ্বে অর্থনৈতিক প্রভাব বন্ধ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন৷ মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাতাহ আল সিসি জানিয়েছেন, লোহিত সাগরে উত্তেজনার কারণে সুয়েজ ক্যানেলের রাজস্ব চলতি বছরে ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ কমে গেছে৷
এসবি/কেএম (এএফপি, ডিপিএ)