মিয়ানমার
১৮ মার্চ ২০১২আগামী পয়লা এপ্রিল মিয়ানমারে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে নির্বাচন৷
প্রথমে সু চি বলেছিলেন তিনি পয়লা এপ্রিলের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন না৷ এর কয়েকদিন পরেই তিনি মত পাল্টান৷ দেশের মানুষকে তিনি জানান তিনি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন৷ দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্যই তা করবেন৷ সু চির এই সিদ্ধান্ত দেশে বিদেশে সমাদৃত হয়েছে৷
গতকাল তিনি মিয়ানমারের সঙ্গে চীনের সীমান্তবর্তী শহর লাশিও'তে যান৷ সেখানে তার জন্য অপেক্ষারত ছিল প্রায় কুড়ি হাজার মানুষ৷ সু চি জানান সেখান অনেকেই চীনের কম্যুনিস্ট চিন্তাধারা প্রতিষ্ঠার কথা বলেছিল৷ এরা ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির বিরুদ্ধে৷
তিনি আরো জানান যে, তিনি শুনেছেন যে, এখানে চীনা ব্যবসায়ীরা প্রতিনিয়ত হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে৷ তাদের হুমকি দেয়া হয়েছে এই বলে যে, যদি এনএলডি নির্বাচনে জয়ী হয়, তাহলে তাদের ব্যবসার ইতি ঘটানো হবে৷ কারণ হিসেবে বলা হয়, এনএলডি-র সঙ্গে পশ্চিমা বিশ্বের যোগাযোগ এবং সম্পর্ক বেশ ভাল৷
উপস্থিত জনতার সামনে সু চি বলেন,‘‘আমি সবাইকে অনুরোধ করব, যে সব কথা বলা হচ্ছে তা বিশ্বাস না করতে, তাতে কর্ণপাত না করতে৷'' বলা প্রয়োজন, যে-সব মানুষ অপেক্ষা করছিল তাদের হাতে শোভা পাচ্ছিল বিভিন্ন ধরণের ব্যানার৷ তাতে লেখা ছিল,‘আমরা সু চির জন্য, সু চি আমাদের জন্য৷'
যদিও এরা জাতিগতভাবে চীনা, কথা বলে চীনা ভাষায় কিন্তু এদের সবার মিয়ানমারের নাগরিকত্ব রয়েছে৷ সু চি তার বক্তব্যে বেশ পরিষ্কারভাবেই বলেছেন যে, এনএলডি কোন অবস্থাতেই চীনাদের এসব ব্যবসায়ের ক্ষতি করবে না৷ তিনি আরো বলেন,‘‘মিয়ানমারের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক বেশ ভাল ছিল যখন দুটি দেশেই গণতান্ত্রিক সরকার ছিল৷'' তবে তিনি ঠিক কোন সময়ের কথা বলছেন তা তিনি উল্লেখ করেননি৷ তিনি বলেন যে, এখন যে সব সমস্যা রয়েছে তা খুবই নগণ্য৷ এবং দুটি পক্ষেরই উচিত এসব সমস্যা ভুলে গিয়ে সম্পর্ক ভালো করার ওপর জোর দেয়া৷
লাশিওতে চীন থেকে অনেক ধরণের নিত্য ব্যবহারযোগ্য পণ্য আমদানি করা হয়৷ এর মধ্যে কাপড়, ইলেকট্রনিক্স এবং ঘরের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন তৈজসপত্র উল্লেখযোগ্য৷ অনেক দোকান এবং বাড়ীতে চীনা ভাষায় নাম লেখা লাশিওতে৷
নোবেল শান্তি পুরষ্কার বিজয়ী সু চি আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ব্যবসা বিস্তৃত করার ওপর জোর দেন৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরা জানি যে ব্যবসায়ে বিনিয়োগ করলেই তা থেকে আমাদের দেশই লাভবান হবে৷ তা যে ধরণের ব্যবসাই হোক না কেন৷ তবে এদিকে খেয়াল রাখতে হবে যে, যে দেশ পণ্য আমদানি করছে সেই দেশটিও যেন লাভবান হয়৷ ব্যবসার ক্ষেত্রে যেন দুটি দেশই লাভবান হয়৷ তা হতে হবে ব্যবসার মূল নীতি৷''
তবে আসন্ন নির্বাচন সম্পর্কে তিনি উপস্থিত মানুষের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘‘এই নির্বাচনে কোন ধরণের কারচুপি যেন না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখা প্রতিটি মানুষের কর্তব্য৷'' তিনি সবাইকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, যে বা যারা নির্বাচনে কারচুপির আশ্রয় নেবে বা হুমকি দেবে তাদের সবার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে৷
প্রতিবেদন: মারিনা জোয়ারদার
সম্পাদনা: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী