রোহিঙ্গা ফেরাতে বাংলাদেশকে সহায়তার প্রতিশ্রুতি চীনের
তাইওয়ান নিয়ে চীনে যখন উত্তেজনা তুঙ্গে, তখনও দুনিদের সফরে বাংলাদেশে ঘুরে গেলে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী৷ এক চীন নীতির পক্ষে বাংলাদেশের অবস্থান আবারও নিশ্চিত করার পাশাপাশি আলোচনা হয়েছে রোহিঙ্গা ইস্যুতেও৷
বিষয়বস্তু কী?
চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরের আগে মুখপাত্র জানিয়েছিলেন, দ্বিপাক্ষিক এবং দুই দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক নানা ইস্যুতে আলোচনা হবে এই সফরে৷ তবে বৈশ্ব রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণে বাংলাদেশ যাতে চীনের পক্ষে থাকে বা অন্তত বিপক্ষে যাতে না যায়, সে চেষ্টা করাটাই সফরের মূল লক্ষ্য বলে মনে করছেন অনেক বিশ্লেষক৷
আবারো আলোচনায় রোহিঙ্গা
চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী সফরে ঢাকার সবচেয়ে বড় প্রত্যাশা ছিল রোহিঙ্গা সংকটের সমাধানে চীনের সহযোগিতা। বৈঠকে স্বাভাবিকভাবেই এই প্রসঙ্গটি আলোচনায় উঠে আসে৷ বৈঠকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরাতে চীনের সহযোগিতা চায় ঢাকা৷ চীনের পক্ষ থেকে প্রয়োজন হলে সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে চীনের পক্ষ থেকে৷
হাসিনা-ওয়াং বৈঠক
রোববার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে গণভবনে সৌজন্য সাক্ষা করেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই৷ এই বৈঠকেও আলোচনায় আসে রোহিঙ্গা ইস্যু৷ বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমেই সমাধানের কথা বলেন চীনা মন্ত্রী। তবে তৃতীয় পক্ষের সম্পৃক্ততার প্রয়োজন হলে চীন তার ভূমিকা পালন করবে বলে আশ্বাস দেয়া হয়েছে মন্ত্রীর পক্ষ থেকে৷
রোহিঙ্গাদের সহায়তা
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে এরই মধ্যে রোহিঙ্গাদের জন্য তিন হাজার বাড়ি তৈরি করার কথা জানিয়েছে চীন৷ এছাড়া যারা ফেরত যাবে, তাদের প্রাথমিক খাদ্য সহায়তা দেয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে চীন৷ কয়েক বছর আগে অবশ্য রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য চীনের মধ্যস্থতায় চুক্তি হয়েছিল এবং চেষ্টাও হয়েছিল। কিন্তু সেটি কোন কাজে লাগেনি।
আন্তর্জাতিক সংকট
প্রধাণমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে নানা আন্তর্জাতিক ইস্যুতেও আলোচনা হয়েছে৷ এর মধ্যে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং নিষেধাজ্ঞা-অবরোধ ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞা-অবরোধ এবং এ থেকে উত্তরণে একসঙ্গে কাজ করার বিষয়টিও উঠে আসে৷ বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের এ বিষয়ে ব্রিফ করেন।
চুক্তি, সমঝোতা স্মারক
চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন এর মধ্যে বৈঠকে চারটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে৷ পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, এসব স্মারক ও চুক্তিতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, কচা নদীর উপর নির্মিত সেতু হস্তান্তর, সাংস্কৃতিক বিনিময় চুক্তি নবায়ন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে মেরিন সায়েন্সেস শিক্ষা বিষয়ে সহযোগিতার বিষয় রয়েছে৷
এডিকে/কেএম (এপি, ডিপিএ, বিডিনিউজ টোয়েন্টফোর ডটকম)