1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

স্বজনদের ভিড় কমেনি

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা২৪ মে ২০১৩

সাভার রানা প্লাজা ধসের একমাস পূর্ণ হলেও থামেনি স্বজনদের কান্না৷ এখনো অনেকে খুঁজে বেড়াচ্ছেন তাদের নিখোঁজ আত্মীয়-স্বজনকে৷ জানেন পাবেন না৷ তবুও আশা, যদি অজ্ঞাত হিসেবে দাফন করা লাশের ভিতরে তাদের স্বজনদের লাশ থেকে থাকে৷

https://p.dw.com/p/18dQy
Bangladeshi relatives hold photos of the missing and dead workers three days after an eight-storey building collapsed in Savar, on the outskirts of Dhaka on April 27, 2013. Police arrested two textile bosses over a Bangladeshi factory disaster as the death toll climbed to 332 and distraught relatives lashed out at rescuers trying to detect signs of life. AFP PHOTO/ Munir uz ZAMAN (Photo credit should read MUNIR UZ ZAMAN/AFP/Getty Images)
ছবি: MUNIR UZ ZAMAN/AFP/Getty Images

এপ্রিল মাসের ২৪ তারিখে সাভারের রানা প্লাজা ধসে পড়ে৷ শুক্রবার সেই মর্মান্তিক ঘটনার একমাস পূর্ণ হলেও এখনো শেষ হয়নি স্বজনহারাদের কান্না আর অপেক্ষা৷ রানা প্লাজার নিউ ওয়েভ গার্মেন্টস-এর কর্মী মমতাজ বেগমকে (২২) এখনো তার বাবা আবুল কালাম খুঁজে ফেরেন৷ ছবি হাতে নিয়ে শুক্রবারও তিনি যান ধসে পড়া রানা প্লাজার সামনে৷ মেয়ের লাশও পাননি৷ তাঁর প্রশ্ন, কোনদিন কি তিনি জানতেও পারবেন না যে তার মেয়ের লাশটি পাওয়া গিয়েছে কিনা৷ একই প্রশ্ন নুরুন্নাহার বেগমের৷ তিনি তার মেয়ে গার্মেন্ট কর্মী শরীফার কোন খোঁজ পাননি৷ কোনো দিন পাবেন কিনা তাও জানেন না৷

রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় জীবিত এবং মৃত অবস্থায় মোট ৩,৫৫৩ জনকে উদ্ধার করা হয়৷ এর মধ্যে লাশ উদ্ধার করা হয় ১,১১৫টি৷ চিকিত্‍সাধীন অবস্থায় মারা যান আরো ১২ জন৷ মোট ১,১২৭টি লাশের মধ্যে ৮৩৬টি লাশ আত্মীয় স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে৷ বাকি ২৯১টি লাশ সনাক্ত করা যায়নি৷ তাদের অজ্ঞাত হিসেবে ঢাকার জুরাইন কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে৷ জেলা প্রশাসক ইউসুফ হারুন ডয়চে ভেলেকে জানান, অজ্ঞাত সব লাশেরই ডিএনএ নমুনা রাখা হয়েছে৷ এখন আত্মীয় স্বজনের ডিএনএ নিয়ে ডিএনএ প্রোফাইল মিলিয়ে লাশ সনাক্ত করা হবে৷ তিনি জানান, প্রতিটি কবরই একটি নির্দিষ্ট সংখ্যা দিয়ে চিহ্নিত করা আছে৷ তবে পরিচয় নিশ্চিত হতে বেশ সময় লাগবে৷

জেলা প্রশাসন বলছে অজ্ঞাত লাশ দাফন করা হয়েছে ২৯১টি৷ কিন্তু বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন দাবি করছে, তাদের কাছে নিখোঁজদের যে তালিকা রয়েছে তার সংখ্যা অজ্ঞাত লাশের চেয়ে বেশি, ৩৫০ জন৷ শ্রমিক নেত্রী আফরোজা বেগম ডয়চে ভেলেকে জানান, নিখোঁজ ব্যক্তির তালিকা আরো বাড়ছে৷ এদিকে সাভার থানায় নিখোঁজ ব্যক্তিদের আত্মীয়স্বজন সাধারণ ডায়েরি বা জিডি করছেন৷ সাভার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান ডয়চে ভেলেকে জানান, তাঁরা শুক্রবার পর্যন্ত ৯০টি জিডি নিয়েছেন৷ তবে প্রতিদিনই লোক আসছেন জিডি করতে৷ নিখোঁজ ব্যক্তিদের কয়েকজন আত্মীয়-স্বজন অবশ্য দাবি করেন, থানা জিডি নিতে চায়না সহজে৷ সে কারণেই জিডি-র সংখ্যা কম৷ তবে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলেন জিডির সঙ্গে তারা কিছু প্রমাণপত্র নেন৷ যেমন গার্মেন্টস-এর কর্মচারী হলে তাদের পরিচয়পত্রের ফটোকপি অথবা অন্য কোনো প্রমাণপত্র৷ কেউ যাতে অনুদানের টাকা নিয়ে প্রতারণা করতে না পারে সে জন্যই এই ব্যবস্থা৷

রানা প্লাজায় মোট ৫টি তৈরি পোশাক কারখানা ছিল৷ হিসাব অনুযায়ী সেখানে মোট ২,৪৩৮ জন শ্রমিক কর্মরত ছিলেন বলে ডয়চে ভেলেকে জানান বিজিএমই-র সহ সভাপতি শহীদুল আজিম৷ তাদের মধ্যে জীবিত এবং নিহতদের পরিবার মিলিয়ে দু'দফায় মোট ২,৩০০ শ্রমিককে বেতন দেয়া হয়েছে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে৷ তাদের হিসেবে ১৩৮ জন শ্রমিক এখনো নিখোঁজ৷ আর ভবনে মোট ৪,৫০০ লোক ছিল বলে প্রাথমিক তথ্য৷ উপজেলা প্রশাসন তাই নিখোঁজ ব্যক্তিদের একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরির কাজ শুরু করেছে বলে জানান জেলা প্রশাসক ইউসুফ হারুন৷ সাভারের অধরচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এখন আর নিখোঁজদের স্বজনরা যাননা৷ তারা ভিড় করছেন উপজেলা পরিষদ চত্তরে৷

Two Bangladeshi women look at a board with notices posted of missing and dead workers three days after an eight-storey building collapsed in Savar, on the outskirts of Dhaka, on April 27, 2013. Police arrested two textile bosses over a Bangladeshi factory disaster as the death toll climbed to 332 and distraught relatives lashed out at rescuers trying to detect signs of life. AFP PHOTO/ Munir uz ZAMAN (Photo credit should read MUNIR UZ ZAMAN/AFP/Getty Images)
নিখোঁজ ব্যক্তির তালিকা আরো বাড়ছেছবি: MUNIR UZ ZAMAN/AFP/Getty Images

এদিকে রানা প্লাজা ধসের একমাস পূর্তিতে শুক্রবার বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন এবং নিহত, নিখোঁজ এবং আহতদের স্বজনরা ধসে যাওয়া ভবনের সামনে মিলিত হন৷ তারা সেখানে নিহতদের স্মরণে ইট দিয়ে একটি অস্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি করেন৷ তাদের দাবি, সেখানে যেন একটি স্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি করা হয়৷ তারা রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানার সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন৷ আর দাবি করেন দ্রুত নিহত, নিখোঁজ এবং আহতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি করে যেন তাদের ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য