জার্মানির শিল্পখাতে বিপর্যয়ের শঙ্কা
১৭ আগস্ট ২০২২করোনা সংকট এবং ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে জার্মানির অর্থনীতি এমনিতেই বেশ সংকটে৷ গতমাসে ইনস্টিটিউট ফর ইকনমিক রিসার্চ জানায়, জার্মানির মুদ্রাস্ফীতি রেকর্ড সাত দশমিক ছয় শতাংশে পৌঁছেছে৷ অর্থনীতির এই মন্দাভাব আরো প্রকট হতে পারে বলে মনে করেন ফেডারেল অব জার্মান ইন্ডাস্ট্রিজ (বিডিআই)-এর ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর হোলগার ল্যোশ৷ তার এমন আশঙ্কার কারণ বৈরি প্রকৃতি৷ বেশ কিছুদিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছে না, তীব্র গরমে প্রাণ ওষ্ঠাগত৷ বিরতিহীন গরম এবং বৃষ্টিহীনতার কারণে কমছে রাইন নদীর পানির উচ্চতা৷ ধীরে পন্যবাহী যান চালানোই মুশকিল হয়ে যাচ্ছে৷ তাই তার আশঙ্কা খুব শিগগির পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হলে পরিস্থিতি এমন দিকে চলে যেতে পারে যখন আর নদীতে পণ্যবাহী যান চালানো যাবে না এবং তার ফলে শিল্পখাতে বিপর্যয় নামবে৷ তিনি বলেন, ‘‘দীর্ঘ খরা এবং পানির উচ্চতা কমে যাওয়া শিল্পখাতের সরবরাহকে ঝুঁকির মুখে ফেলেছে৷ কোম্পানিগুলোর ক্রমশ খারাপের দিকে যেতে থাকা অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এখন আরো খারাপ হয়ে যাচ্ছে৷''
তীব্র দাবদাহের এ মৌসুমে, বিশেষ করে নদীতে যখন পণ্যবাহী যান চলাচল কঠিন হয়ে পড়ছে, তখন অন্য বিকল্প থাকলে ভালো হতো৷ কিন্তু ল্যোশ জানা, জার্মানির রেল যোগাযোগ নেটওয়ার্কের সীমাবদ্ধতা এবং ট্রাক চালকের স্বল্পতার কারণে পণ্য সরবরাহের অন্য বিকল্পগুলোও এই মুহূর্তে কাজে আসছে না৷
ফেডারেল অব জার্মান ইন্ডাস্ট্রিজ (বিডিআই)-এর ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর মনে করেন, এ অবস্থা চলতে থাকলে বিশেষ করে রাসায়নিক, ইস্পাত, পেট্রোলিয়াম এবং নির্মাণ শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামাল গন্তব্যে পৌঁছানো অচিরেই বন্ধ হয়ে যেতে পারে৷
প্রচণ্ড গরম এবং খরার কারণে রাইন নদীর পানির উচ্চতা গত কিছুদিন ধরেই ধীরে ধীরে কমছে৷ তবে সম্প্রতি বিষয়টি খুব উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ মঙ্গলবার সকালে দেখা যায়, আগের ২৪ ঘণ্টায় ডাচ সীমান্ত সংলগ্ন জার্মান শহর এমেরিশে নদীর পানি আরো চার সেন্টিমিটার (১.৬ ইঞ্চি) নেমেছে৷ এর ফলে পণ্যবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা আরো বেড়েছে৷ পণ্যবাহী নৌযান চলাচলের পথে পানি এখনো দুই মিটার গভীর৷ এই গভীরতায় অল্প পণ্য বোঝাই করা বাহন চলাচল করা সম্ভব৷ গভীরতা আরো কমলে সেই সুযোগও আর থাকবে না৷ তবে আশার কথা, জার্মানির কিছু অঞ্চলে গরমের তীব্রতা কমতে শুরু করেছে, বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনাও বাড়ছে৷
এসিবি/ কেএম (ডিপিএ, এপি, এএফপি, রয়টার্স)