আর্থিক সাহায্য
২২ আগস্ট ২০১২প্রথম বৈঠক হবে বুধবার৷ ইউরোপের অর্থমন্ত্রীদের সংস্থা ‘ইউরোগ্রুপ'-এর প্রধান জ্যঁ ক্লোদ ইয়ুঙ্কার'এর সঙ্গে আলোচনা হবে গ্রিক প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টোনিও সামারাস'এর৷ এরপর শুক্রবার বার্লিন যাবেন সামারাস৷ সেখানে জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল'এর সঙ্গে তিনি কথা বলবেন৷ এরপর সেদিনই তিনি উড়ে যাবেন প্যারিসে, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফ্রঁসোয়া ওলঁদ'এর সঙ্গে বৈঠক করতে৷
এদিকে, ম্যার্কেল আর ওলঁদ, সামারাস'এর সঙ্গে বৈঠকে বসার আগে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করবেন বৃহস্পতিবার, বার্লিনে৷
এসব বৈঠকের পরই হয়ত গ্রিসের ভবিষ্যৎ, অর্থাৎ তাদের ইউরো'তে থাকা বা না থাকা বিষয়ে একটা ধারণা পাওয়া যেতে পারে৷
ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক, ইসিবি'র সদস্য ইয়োর্গ আসমুসেন বলেছেন, গ্রিস যদি ইউরোজোন'এ থাকতে না পারে, তাহলে হয়তো পরিস্থিতি ‘সামাল' দেয়া যাবে৷ কিন্তু সেটা সবার জন্য বেশ ব্যয়বহুল হবে বলে মনে করেন তিনি৷
জার্মান প্রভাবশালী সাপ্তাহিক ‘ডের স্পিগেল'-এর রবিবারে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, সমস্যায় থাকা স্পেন আর ইটালি যেন কম খরচে ধার নিতে পারে - সে ব্যবস্থা করবে ইসিবি৷ এজন্য প্রয়োজনে ধার নেয়ার জন্য সুদের সর্বোচ্চ হার ঠিক করে দিতে পারে ইসিবি৷ এছাড়া ঐসব দেশের বন্ড কেনার কথাও বিবেচনা করছে ইসিবি৷ কিন্তু জার্মানির কেন্দ্রীয় ব্যাংক, বুন্ডেসবাঙ্ক ইসিবি'র এসব পরিকল্পনার সঙ্গে একমত নয়৷
এদিকে ইসিবি'র এক মুখপাত্র বলেছেন, স্পিগেল'এর প্রতিবেদনটা সঠিক নয়৷ ব্যাপারগুলো নিয়ে ইসিবি'র সদস্যদের মধ্যে কোনো আলোচনা হয়নি বলেও জানান তিনি৷ তবে ইসিবি'র আরেক সদস্য জানিয়েছেন, প্রস্তাবগুলো নিয়ে ইসিবি'র আগামী বৈঠকে আলোচনা হবে৷ বৈঠকটা হবে আগামী মাসের ৬ তারিখ৷
ইসিবি যদি শেষ পর্যন্ত স্পেন আর ইটালির জন্য কম সুদে ধারের ব্যবস্থা করতে পারে তাহলে সেটা ঐ দুই দেশের অর্থনীতির জন্য সুফল বয়ে আনবে৷ এবং তারা গ্রিস বা পর্তুগালের মতো পরিস্থিতি এড়াতে পারবে৷ কেননা, অতীতে গ্রিস বা পর্তুগালের অবস্থা যখন আজকের স্পেন বা ইটালির মতো ছিল, তখন গ্রিস আর পর্তুগাল অধিক হারে ধার নিয়েছিল৷ এর ফলে, সাময়িকভাবে হয়ত তারা লাভবান হয়েছিল, কিন্তু আদতে সেটা তাদের অর্থনীতির ওপর মারাত্মক চাপ তৈরি করেছিল৷ ব্যাপারটা এরকম - ধরুন, আপনি গাড়ি কেনার জন্য ঋণ নিলেন৷ তাতে আপনার গাড়িটা কেনা হলো ঠিকই, কিন্তু উচ্চহারে ঋণ নেয়ার ঘানিটা কিন্তু আপনাকে অনেকদিন ধরেই টানতে হবে৷ স্বাভাবিকভাবেই এটা কারো কারো জন্য সুখকর হয় না৷
স্পিগেল বলছে, ইউরোপের কাছ থেকে অর্থ সহায়তার পরবর্তী অংশ পেতে গ্রিসকে তার বর্তমান বাজেট থেকে প্রায় ১,৪০০ কোটি ইউরো কমাতে হবে৷ তবে ইউরোপীয় কমিশনের এক মুখপাত্র মনে করেন, এ বিষয়ে মন্তব্য করার সময় এখনো আসেনি৷ তিনি বলেন, এজন্য ইসিবি, আইএমএফ ও ইউরোপীয় কমিশন'এর সমন্বয়ে গঠিত গ্রিস বিষয়ক ত্রয়িকার চূড়ান্ত প্রতিবেদনের জন্য অপেক্ষা করতে হবে৷ এই তিন সংস্থার প্রতিনিধিরা গ্রিসের অবস্থা দেখতে সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে আবারো গ্রিসে যাবেন৷
জেডএইচ / ডিজি (এএফপি, রয়টার্স)