1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মোদীর আর্থিক সংস্কার এবং অসহিষ্ণুতা

সঞ্জীব বর্মন৪ নভেম্বর ২০১৫

ভারতে অহিষ্ণুতা বেড়ে চলেছে এবং প্রধানমন্ত্রী মোদী নীরব থেকে সেই কাজে ইন্ধন জোগাচ্ছেন – এমন অভিযোগ আরও জোরালো হয়ে উঠছে৷ এই অবস্থায় সংলাপের প্রয়োজন বলে মনে করেন অনিল চট্টোপাধ্যায়৷

https://p.dw.com/p/1GzN5
Indien Kailash Vijayvargiya
ছবি: Getty Images/AFP/N Nanu

গোমাংসের রেশ ধরে ভারতে সামাজিক অসহিষ্ণুতা যেভাবে তেড়েফুঁড়ে উঠছে, তাতে বিদেশের অর্থনৈতিক মূল্যায়ন সংস্থাগুলি বেশ চিন্তিত৷ বিশ্বস্তরের অর্থনৈতিক মূল্যায়ন সংস্থা মুডিজ দেশের বিজেপি সরকারের প্রধানমন্ত্রী মোদীর দিকে আঙ্গুল তুলে বলেছে, এই প্রবণতা আটকাতে না পারলে আর্থিক সংস্কারে মোদী সরকারের বিশ্বাসযোগ্যতা ধাক্কা খাবে৷ মুখ খুলেছে দেশের ব্যাংকিং এবং শিল্পমহল৷ তারা মনে করে, উন্নয়নের গতি ত্বরান্বিত করতে, প্রবৃদ্ধির হার ৯-১০ শতাংশে নিয়ে যেতে মোদী সরকার আর্থিক সংস্কারের যে অ্যাজেন্ডা নিয়ে ক্ষমতাসীন হয়েছেন, সেটাকে বাস্তবায়িত করতে জরুরি হলো, সামাজিক সহিষ্ণুতা এবং শিল্প অনুকূল বাতাবরণ ধরে রাখা৷ সেটা না হলে দারুণভাবে মার খাবে দারিদ্র্য-মোচন কর্মসূচি৷ বিঘ্নিত হবে দেশের শ্রমশক্তির মাথাপিছু উত্পাদনশীলতা৷ মোদীর মেক-ইন-ইন্ডিয়া স্রেফ স্লোগান সর্বস্ব হয়ে থেকে যাবে৷ কারণ প্রধানমন্ত্রী মোদী তাঁর সংস্কারমুখী কর্মসূচি সংসদে পাশ করাতে পারবেন না৷ যেহেতু সংসদের উচ্চকক্ষে বিজেপি-জোটের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই৷ তাই আটকে রয়েছে জমি অধিগ্রহণ বিল, পণ্য ও পরিষেবা বিল৷ আটকে রয়েছে শ্রম আইন সংশোধন বিল৷ সেক্ষেত্রে সংসদের আসন্ন শীতকালীন অধিবেশনে মোদী হালে পানি পাবেন না, এমনটাই আশঙ্কা৷

Indien Proteste wegen der Verhaftung eines Sängers
সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী সমাবেশছবি: picture-alliance/dpa/Arun Sankar K.

শিল্পী, সাহিত্যিক, বৈজ্ঞানিক, ইতিহাসবিদ ও মুক্তমনা অনেকেই একের পর এক সোচ্চার হচ্ছেন৷ তাঁদের সঙ্গে গলা মিলিয়ে আমি শুধু এটুকুই বলতে চাই, বাবরি মসজিদ, গোধরা কাণ্ডের ক্ষত না শুকাতেই আবার সেটাকে খুঁচিয়ে ঘা করার কি দরকার আছে? মোদী সরকারের নিয়ামক হিন্দুত্ববাদী সঙ্ঘ পরিবার কি গোটা দেশটাকে মুড়ে ফেলতে চাইছে গৈরিক রংয়ে? তাই কি গৈরিকবাদীরা নাক গলাতে চাইছে শিক্ষায়, সংস্কৃতিতে বৈজ্ঞানিক গবেষণায় এমন কি দৈনন্দিন খাওয়া পরাতেও? কিন্তু ভারতের মত ১২৪ কোটি লোকের বহুত্ববাদী একটা বিশাল দেশে তা যে সম্ভব নয়, কেন সঙ্ঘ পরিবার বা মোদী সরকার সেটা বুঝতে চাইছেন না?

আমার মতে, হিন্দুত্ববাদী সঙ্ঘ পরিবারের রাশ টানতে যদি মোদী সরকার ব্যর্থ হয়, তাহলে সে বিহারের নির্বাচনই হোক বা আগামী সাধারণ নির্বাচনই হোক – বিজেপি হালে পানি পাবে না৷ ধর্মীয় মেরুকরণের জিগির মাঠেই মারা যাবে৷ মোদী সরকারকে তাই ধরি মাছ না ছুঁই পানির অবস্থান থেকে বেরিয়ে আসতেই হবে৷ কীভাবে? ভারত সফররত বিশ্ব বন্দিত সংগীতকার জুবিন মেহতা থেকে নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী কৈলাস সত্যার্থীর সঙ্গে আমি এবং আমার মতো আরো অনেকে মনে করেন, একমাত্র উপায় অবিলম্বে বাদী ও প্রতিবাদীদের সঙ্গে আলোচনায় বসা৷ আক্রমণ প্রতি-আক্রমণ থেকে সরে এসে আপোশ রফার সংলাপ শুরু করা৷

কথা হচ্ছে, বিড়ালের গলায় প্রথমে ঘণ্টাটা বাঁধবে কে? শুনতে পাচ্ছি মোদীর প্রতিনিধি হিসেবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং নাকি উদ্যোগী হয়েছেন৷ সেখানেও প্রতিপক্ষদের মনে একটা কিন্তু-কিন্তু ভাব রয়ে গেছে৷ তাই আমার মনে হয়৷ এই কাজে সবথেকে উপযুক্ত ব্যক্তি হলেন, দেশের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় স্বয়ং, বলা বাহুল্য দেশের বৃহত্তর স্বার্থে তিনি যদি রাজি হন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য