মোড় ঘোরানো সোশ্যাল মিডিয়া
গণমাধ্যম, এমনকি রাষ্টীয় নীতি, বিচারব্যবস্থাকেও অনেকভাবে দারুণভাবে প্রভাবিত করছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম৷ অনেক ঘটনাকে যেমন ধামাচাপা পড়তে দেয়নি, আবার অনেক ক্ষেত্রে তৈরি হয়েছে বিচারের আগেই হয়রানি করার সংস্কৃতিও৷
নুসরাত হত্যা
ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসা শিক্ষার্থী নুসরাতকে মাদ্রাসার ছাদেই পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয় ২০১৯ সালের ৬ এপ্রিল৷ ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে চারদিন পর তাঁর মৃত্যু হয়৷ অভিযোগের আঙ্গুল ওঠে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা সিরাজউদ্দৌলা ও তার সহযোগীদের দিকে৷ এর আগে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠলেও প্রভাবশালীদের হস্তক্ষেপে পার পেয়ে যান তিনি৷ তবে এবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম উত্তাল হলে গ্রেপ্তার করা হয় তাকে৷
রিফাত হত্যাকাণ্ড ও মিন্নি
২০১৯ সালের ২৬শে জুন বরগুনায় রিফাত শরীফ নামে এক ব্যক্তিকে তার স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির সামনেই কুপিয়ে হত্যা করে একদল লোক। ঘটনার ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়ালে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। অভিযুক্ত হামলাকারীদের একজন নয়ন বন্ড 'বন্দুকযুদ্ধে' নিহত হয়। এরপর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিন্নিকেও দায়ী করে আলোচনা ছড়ায়৷ পুলিশ মিন্নিকেও আটক করে৷ তাদের দাবি, মিন্নি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন৷
শিশু রাজন হত্যা
একটি রিকশা ভ্যান চুরির অভিযোগ তুলে ২০১৫ সালের ৮ জুলাই সিলেটের কুমারগাঁওয়ে ১৩ বছর বয়সী রাজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। মূল আসামি কামরুলের সহযোগী নূর মিয়া সেদিন রাজনকে পেটানোর দৃশ্য ভিডিও করে ইন্টারনেটে ছেড়ে দেন। ওই ঘটনায় সারা দেশে তৈরি হয় তীব্র ক্ষোভ। এ মামলায় চার আসামির ফাঁসি ও পাঁচজনের কারাদণ্ডের রায় দেয় আদালত৷
হজ ও লতিফ সিদ্দিকী
২০১৪ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর হজ, তাবলিগ জামাত, প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও সাংবাদিকদের সম্পর্কে তৎকালীন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য যোগাযোগপ্রযুক্তি মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর একটি বক্তব্যের ভিডিও ভাইরাল হয়৷ নিজেকে হজ আর তাবলিগ জামাতের ঘোরতর বিরোধী বলায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তৈরি হয় ব্যাপক প্রতিক্রিয়া৷ এর ফলে তাকে মন্ত্রীত্ব তো খোয়াতে হয়েছেই, বহিষ্কার করা হয় আওয়ামী লীগ থেকেও৷
অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ
সম্প্রতি আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের প্রবাসীদের নিয়ে দেয়া একটি বক্তব্যের খণ্ডাংশ ফেসবুকে ভাইরাল হয়৷ প্রবাসীদের কষ্টের কথা গল্পচ্ছলে স্বভাবসুলভ মজার ঢং-এ বর্ণনা করলেও তাকে প্রচার করা হয় প্রবাসীবিদ্বেষী বলে৷ অবশ্য অধ্যাপক আবু সাঈদ বা তার বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া না আসায় ধীরে ধীরে তা স্তিমিত হয়ে পড়ে৷