মৃত্যুদণ্ড বাড়ছে ইরানে, প্রতিবাদে রাজনৈতিক বন্দিরা
১১ অক্টোবর ২০২৪বিশ্ব মৃত্যুদণ্ড-বিরোধী দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার নরওয়েভিত্তিক এনজিও ইরান হিউম্যান রাইটস সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ২৪ ঘণ্টার লাইভ অনুষ্ঠান করে৷ সেখানে এসব তথ্য দেয়া হয়৷
এই অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্য ছিল ইরানে মৃত্যুদণ্ড ও দণ্ডিতদের প্রতি আন্তর্জাতিক মনোযোগ আকর্ষণ করা এবং সাপ্তাহিক এই অনশন প্রতিবাদের খবর জানানো৷ অনুষ্ঠানটি শুরু হয় ইরানি নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী নার্গিস মোহাম্মদির একটি চিঠি পড়ার মাধ্যমে৷
তিনি এখন রাজধানী তেহরানের একটি জেলে আছেন৷ গত ৩৭ সপ্তাহ ধরে তিনি ও অন্যরা সাপ্তাহিক এই অনশন কর্মসূচি পালন করছেন৷
নার্গিস বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার কর্মীদের ইরানে মৃত্যুদণ্ড বন্ধ করতে সহায়তা করার জন্য আবেদন করেছেন৷
এক বছরে ৮০০টিরও বেশি মৃত্যুদণ্ড
হিউম্যান রাইটস অ্যাক্টিভিস্ট নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, গত বছরের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ইরানে মৃত্যুদণ্ডের সংখ্যা ২৩% বেড়েছে৷ ইরানে মানবাধিকার লঙ্ঘন বিষয়ক অপ্রাতিষ্ঠানিক এই বার্তা সংস্থাটি এ সময়ে কমপক্ষে ৮১১ জনের মৃত্যদণ্ডের খবর দিয়েছে৷ অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালও ২০২৩ সালে ইরানে ৮৫৩টি মৃত্যুদণ্ডের কথা বলছে যা বিশ্বব্যাপী মৃত্যুদণ্ডের প্রায় ৭৫ ভাগ৷
মে মাসে ডয়চে ভেলেকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ইরান হিউম্যান রাইটসের পরিচালক মাহমুদ আমিরি-মোগাদ্দাম বলেন, ‘‘আমাদের কাছে আরো ৪৭ জনের নাম আছে, গত ১২ মাসে যাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়৷''
এদের নাম দ্বিতীয় কোনো উৎস থেকে নিশ্চিত করা যায়নি বলে ছাপানো হয়নি বলে জানান তিনি৷
জাতিগত গোষ্ঠীদের লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে
জাতিগত সংখ্যালঘু, যেমন কুর্দি ও বালুচি সম্প্রদায়ের লোকজন বেশি হারে মৃত্যুদণ্ডের শিকার হচ্ছে৷ ইরানে বেশিরভাগ মানুষ মুসলিম শিয়া সম্প্রদায়ের হলেও কুর্দি ও বালুচি সম্প্রদায়ের সিংহভাগ সুন্নি সম্প্রদায়ের৷
এই সম্প্রদায়ের লোকজন অর্থনৈতিকভাবে অনগ্রসর এলাকাগুলোতে থাকেন এবং দীর্ঘসময় ধরে তাদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ করে আসছেন৷
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৫৪৫টি মৃত্যুদণ্ডের মধ্যে অনেকগুলোই এমন অপরাধের জন্য হয়েছে, যা আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী মৃত্যুদণ্ডযোগ্য নয়, যেমন মাদক সম্পর্কিত অপরাধ ও ডাকাতি৷
শবনম ফন হাইন/জেডএ/এসিবি