মৃত্যু উপত্যকার নাম গাজা

হামাস ইসরায়েলে আক্রমণ চালানোর পর গত তিনদিন গাজা স্ট্রিপে লাগাতার বিমান হামলা চালচ্ছে ইসরায়েল। কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজা। প্রতিটি বাড়ি জ্বলে-পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।

গত শনিবার ইসরায়েলে আক্রমণ চালিয়েছিল হামাস। ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং অ্যামেরিকা হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন বলে মনে করে। হামাসের সেই আক্রমণের পর পাল্টা যুদ্ধে নেমেছে ইসরায়েল। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, হামাসকে এমন শিক্ষা দেওয়া হবে যে গাজা স্ট্রিপের পরবর্তী প্রজন্মও ভয়াবহতার কথা মনে রাখবে।

জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী এখনো পর্যন্ত গাজা স্ট্রিপের ভিতর অন্তত ৮০০টি বাড়ি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অন্ত পাঁচ হাজার বাড়ি। প্রায় চার লাখ মানুষ জল পর্যন্ত পাচ্ছেন না। পানীয় জল পৌঁছাচ্ছে না তাদের কাছে।

ইসরায়েলের বিমানহামলায় সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়েছে এই ভবন। উদ্ধারকর্মীরা সেখানেই প্রাণের সন্ধানে নেমেছেন। ধ্বংসস্তূপের নিচে মানুষ বেঁচে আছেন বলে মনে করা হচ্ছে।

কোলের শিশুকে কবর দিতে নিয়ে যাচ্ছেন তার আত্মীয়রা। গত তিনদিনে গাজায় অন্তত ১৪০টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। একশর বেশি নারী মারা গেছেন।

গাজা সম্পূর্ণ অবরুদ্ধ। সেখান থেকে পালানোর পথ নেই। ইসরায়েলের আক্রমণে এখনো পর্যন্ত প্রায় এক লাখ ৮৭ হাজার মানুষ গৃহহীন। এক লাখ ৩৭ হাজার মানুষ জাতিসংঘের বিভিন্ন স্কুলে আশ্রয় নিয়েছেন। মিশরের দিকের সীমান্তও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

ইসরায়েল-গাজা সীমান্তে অতন্দ্র প্রহরায় ইসরায়েলের সেনা। গোটা সীমান্তে কাঁটাতার বসানো। সেই কাঁটাতার উপেক্ষা করেই শনিবার ইসরায়েলে হামলা চালিয়েছিল হামাস। তারপরেই গাজায় আক্রমণ শুরু করে ইসরায়েল।

ইসরায়েল-গাজা সীমান্তে ইসরায়েল প্রায় তিন লাখ সেনা মজুত করেছে। সঙ্গে অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র এবং যুদ্ধের সাজোয়া গাড়ি। গাজার মানুষের ধারণা, যে কোনো সময় ইসরায়েলের সেনা গাজা স্ট্রিপের ভিতরে ঢুকে পড়তে পারে।

মানবাধিকার কর্মীদের বক্তব্য, গাজা স্ট্রিপে হাসপাতাল লক্ষ্য করেও বোমাবর্ষণ করা হচ্ছে। হাসপাতালে ওষুধের অভাবে, খাবারের অভাবে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে ছোট ছোট শিশুরা। একে যুদ্ধপরাধ বলে মনে করছে কোনো কোনো সংগঠন।