মৃতদেহের পরিবেশবান্ধব সৎকার
মৃত্যুর পর আমাদের শরীরগুলো যদি রিসাইকেল করা যায় কেমন হয়? আজকাল অনেককেই ভাবতে দেখা যায়, মৃত্যুর পর পৃথিবীর সাথে যেন একটা বন্ধন থাকে৷ এখানে সেরকম কিছু পরিবেশবান্ধব উপায়ের কথা জানতে পারবেন৷
ফুলের ঝুড়ি
উইলো গাছের ডাল দিয়ে বানানো এই কফিনটি অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার পরিবেশবান্ধব উপায়ের একটি৷ এতে করে মৃতদেহ সমাহিত করলে মৃত শরীরটি প্রাকৃতিক উপায়ে পচে মাটির সাথে মিশে যায়৷ আর উইলো গাছ দ্রুত বাড়ার কারণে একটি গাছ কাটলে খুব দ্রুতই আরেকটি গাছ বড় হয়ে যায়৷ এর ফলে গাছ কাটার কারণে পরিবেশের যে ক্ষতি হওয়ার কথা, সেটা কম হয়৷ শবাধারটি হাতে বানানো এবং এতে সুতি সুতা ব্যবহার করা হয়েছে৷
প্রথার আবরণ
বহু বছর ধরে মৃতদেহ আচ্ছাদিত করে কবর দেয়া হয় বা পুড়িয়ে ফেলা হয়৷ আবারও ফিরে এসেছে সেই পুরানো রীতি৷ বাঁশের খাটিয়া বানানো হয়, কাপড় দিয়ে ঢেকে দেয়া হয় মৃতদেহ৷ এর উপর ফুল ছিটিয়ে দেয়া হয়৷
পুরনো খবরের কাগজ
মৃতদেহটা যদি পুরনো খবরের কাগজ দিয়ে মুড়ে দেয়া যায়, তাহলে অনেকের কাছে হয়ত সেটাকে অসৌজন্যমূলক মনে হতে পারে৷ কিন্তু দেখুন, রিসাইকেল করা খবরের কাগজ দিয়ে তৈরি শবাধারটি দেখতে বেশ সুন্দর৷ এমন কি সোনালি রঙেও পাওয়া যায় এই কফিন৷
সহজে বহনযোগ্য
‘ইকোপড’ অর্থাৎ ডিজাইন করা কফিন নির্মাণকারীরা জানান, এগুলো ভীষণ হালকা, ফলে বহন করা সহজ৷ ইংল্যান্ডের দক্ষিণে কেন্টের একটি কবরস্থানে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় এ ধরনের কফিন ব্যবহার করতে দেখা যাচ্ছে৷ কবরের উপর নানান গাছও লাগানো হয়েছে৷
গাছের বীজ লাগানো
যারা মৃত্যুর পর নিজের দেহ দাহ করতে চান, তাদের জন্যও শবাধার রয়েছে, যেগুলো রিসাইকেল খবরের কাগজ দিয়ে তৈরি৷ ডিজাইনার হাৎসেল সেলিনা জানালেন, মিশরের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি এটির নকশা করেছেন৷
জীবন বৃক্ষ
স্পিরিট ট্রি বা আত্মাবৃক্ষের ধারণা হলো মৃতদেহ দাহ করার পর যে ছাই বা ভস্ম থাকে, সেটার সাথে সার মিশিয়ে গাছের চারা রোপন করা৷
শস্যজাত বিদায়
বর্ণিল এই চুলাগুলো জীবাণুরোধক শস্যের স্টার্চ থেকে তৈরি৷ ফলে যখন কবর দেয়া হয়, তখন এগুলো সহজে নষ্ট হয় না৷ তাই কবরস্থানে বছরের পর বছর বিকৃতি ছাড়াই টিকে থাকে৷
মাছের সাথে চিরনিদ্রা
কেমন হয় যদি সমুদ্রে সমাহিত করা হয়? যে শবাধার দেখছেন তা তৈরি হয়েছে পরিবেশবান্ধব রিসাইকেল কাগজ দিয়ে, যা পানিতে গলে যায়৷ আত্মীয়, প্রিয়জন শবাধারে কিছু লিখে সেটিকে পানিতে ডুবিয়ে দেন৷
পবিত্র অরণ্য
ক্যাপসুলা মুন্ডি একটি স্টার্চ ধারক, এই শবাধার মৃতদেহকে একটি ভ্রুণের মতো কুণ্ডলী পাকিয়ে রাখে৷ এ অবস্থায় এটিতে একটি গাছ লাগিয়ে মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়৷ ফলে দেহে পচন ধরে, যা একটি গাছের জন্য ভীষণ ভালো সার৷ ইটালির ডিজাইনার আনা সিতেল্লি এবং রাউল ব্রিৎসেল এটাকে বলছেন পবিত্র অরণ্য৷